নয়াদিল্লি: গুজরাত হাইকোর্ট রাহুল গান্ধীর আর্জি নাকচ করে দেওয়ার পর এখন বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রথমটি হল, কংগ্রেস নেতা তথা ওয়েনাড়ের প্রাক্তন সাংসদ রাহুল কি লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে পারবেন? দ্বিতীয়ত, তিনি কি আসন্ন বাদল অধিবেশনে লোকসভায় ঢুকতে পারবেন না? তৃতীয়ত, রাহুল গান্ধীকে কি ২ বছর জেল খাটতে হবে? গুজরাত হাইকোর্ট আজ নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আনা পুনর্বিবেচনার আর্জি নাকচ করে দিয়ে সাজা ঘোষণাকে যথাযথ, সঠিক এবং আইনি বলেছে।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতার এখন একটাই দরজা খোলা। আর সেটা হল, সুপ্রিম কোর্ট। সংবিধানের ১৩৬ ধারা অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে পারেন রাহুল। এই ধারায় দেশের সব আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতের কড়া নাড়ার অধিকার দেওয়া রয়েছে। সেখানে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নিজস্ব ক্ষমতাবলে যে কোনও রায়ের বিরুদ্ধে রায়দানের অধিকার রয়েছে।
আরও পড়ুন: Monsoon Updates | দেশজুড়ে বর্ষার নাচন, বহু জেলায় সতর্কতা, স্কুল ছুটি
এই অবস্থায় রাহুল গান্ধী যদি সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন, তাহলে সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশ না পর্যন্ত তিনি লোকসভায় ঢুকতে পারবেন না। উল্লেখ্য, আগামী ২০ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। যদি সুপ্রিম কোর্টেও তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়, তাহলে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি আসন্ন লোকসভা ভোটেও দাঁড়াতে পারবেন না। তবে, তাঁকে এই মুহূর্তে জেলযাত্রায় যেতে হবে না। কারণ, একটি আদালত ইতিমধ্যেই ২ বছরের জেলের নির্দেশ স্থগিত রেখেছে।
গুজরাত হাইকোর্ট এদিন বিনায়ক বীর সাভারকরের নাতির আনা আরও একটি অবমাননার মামলার উল্লেখ করে। উচ্চ আদালত সেকথা উত্থাপন করে বলে, পুনে আদালতে সাভারকরের নাতি রাহুলের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছেন। কেমব্রিজের ভাষণে রাহুল সাভারকরকে অপমান করেছেন বলে অভিযোগ। আদালত বলেছে, রাজনীতিতে শুদ্ধতার প্রয়োজন আছে। বিশিষ্ট আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা বলেন, এখন রাহুল গান্ধীর সামনে একটাই পথ খোলা রয়েছে, সেটা হল সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন রায়ের পর কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল বলেন, গুজরাত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যেতে প্রস্তুত। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্নাটকে একটি জনসভায় রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, সমস্ত চোরেদের পদবি মোদি হয় কেন? তা সে নীরব মোদিই হোক বা ললিত মোদি কিংবা নরেন্দ্র মোদি। রাহুলের এই বিতর্কিত মন্তব্য নিয়েই মানহানির মামলা করা হয়। গুজরাতের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদি সুরাত আদালতে মামলা করেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, এই মন্তব্য করে গোটা মোদি সম্প্রদায়কেই অপমান করেছেন। গত ২৩ মার্চ সুরাত আদালত ফৌজদারি মানহানি মামলায় রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং দুই বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয়।