কথায় আছে ‘জাস্টিস ডিলেইড ইজ জাস্টিস ডিনায়েড’। এর অর্থ বিচারে দেরি হওয়া হল অবিচারের শামিল। দেশে মামলার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বারবার। এবার বিহারের বক্সারে এরকমই একটি ঘটনা সামনে এল। ৫৬ বছর বয়সি কৃষক মুন্না সিং ৪৩ বছর আগের এক খুনের চেষ্টার মামলা থেকে বেকসুর খালাস হলেন। ৩৩ বছর মামলা চলার পর ২০১২ সালে প্রমাণ হয় যে ঘটনার সময় তিনি নাবালক ছিলেন।
১৯৭৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর। বিহারের বক্সারের মুরার থানা এলাকার চৌগার গ্রামের বাসিন্দা মুন্না সিং স্কুল থেকে ফিরছিল। রাস্তায় একটি দোকানের মালিককে নিয়ে গোলমাল চলছে বলে ১৩ বছরের বালক কী হচ্ছে দেখতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে। সেটাই কাল হল। ঘটনায় আরও ৯ জনের সঙ্গে ওই গোলমালে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ধারালো অস্ত্র নিয়ে দাঙ্গা, খুনের চেষ্টার অভিযোগে আইপিসির একাধিক ধারায় অভিযুক্ত করা হয়। সেখানে মুন্নার বাবা শ্যামবিহারী সিংও অভিযুক্ত হন। তখন থেকে চলতে থাকে মামলা। গত ১১ অক্টোবর মুন্না সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে ওই অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের আধিকারিক এ কে পাণ্ডে জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে কোনও সাক্ষী নেই। সমস্ত মামলা খতিয়ে দেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন Sanjay Raut: উদ্ধব-ঘনিষ্ঠ শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের জেল হেফাজতের মেয়াদ বাড়ল
মুন্নার আইনজীবী (lawyer) রাকেশ কুমার মিশ্র বলেন, এই ঘটনায় জড়ানোর সময় তার মক্কেলের বয়স ছিল ১৩। এবং সে তখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। আমি যখন মামলাটি হাতে নিই, সেই সময় তার বয়স ছিল ৪৬ বছর। হিসেব করে দেখা যায় ঘটনার সময় মুন্না সিং নাবালক ছিলেন। আমি মামলাটি জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করি।
বিচার চলাকালীনই মুন্নার বাবা সহ ৫ জনের মৃত্যু হয়। মুন্নার ছেলে ঋষিকান্ত সিং বলেন, বাবার বিরুদ্ধে মামলা আমাদের পরিবারকে উদ্বেগে ফেলেছিল। কিশোর বয়সে বাধ্য হয়ে পরিবারকে সহযোগিতা করতে সেনাবাহিনীতে যোগদান করি। পরে অবসর নিয়ে চৌগাই ব্লকের প্রমুখ পদে নিযুক্ত হই। মুন্না বলেন, মাত্র এক মাস জেলে ছিলাম। কিন্তু, মামলা চলার জন্য এতগুলো বছর ধরে অনেক মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। এই ঘটনার জেরে পড়াশোনাও বেশি দূর করতে পারিনি।