কলকাতা: বিধানসভা অধিবেশন বাতিল (Dhankhar Prorogues Assembly) করে, রাজ্যে সাংবিধানিক অচলাবস্থার সৃষ্টি করছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) । রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy)। জগদীপ ধনখড়ের (West Bengal Governor) এই সিদ্ধান্তকে ‘নজিরবিহীন’ বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘অতীতে আর কোনও রাজ্যপাল এমন পদক্ষেপ করেছেন বলে মনে পড়ে না।’
শনিবার রাজ্যের চার পুরনিগমের ভোট চলাকালীন রাজ্যপাল টুইট করে, বিধানসভার অধিবেশন বাতিল করে দেন। টুইটে সংবিধানের ১৭৪ ধারার উল্লেখ করে রাজ্যপাল বলেন, ‘সাংবিধানিক ক্ষমতা বলেই এই সিদ্ধান্ত। ২০২২-এর ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হবে।’
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1492390605301121027?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1492390605301121027%7Ctwgr%5E%7Ctwcon%5Es1_c10&ref_url=https%3A%2F%2Fkolkatatv.org%2Fwp-admin%2Fpost.php%3Fpost%3D109846action%3Dedit
জগদীপ ধনখড়ের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে সৌগত রায় জানান, সংবিধান রাজ্যপালকে ক্ষমতা দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তা সাংবিধানিক সংকট তৈরির জন্য নয়। ওনার এই সিদ্ধান্তের কারণে রাজ্য বাজেট পাশ করা যাবে না। বাজেট পাশ না হলে, টাকা খরচ হবে কী করে? এতে রাজ্যের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে।
জগদীপ ধনখড়ের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যেতে পারে রাজ্য সরকার। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রবীণ তৃণমূল নেতা সৌগত রায়।সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশের অভিমত, মন্ত্রিসভার অনুমোদন ছাড়া রাজ্যপাল এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। টুইটে রাজ্যপাল যে ভাবে বিধানসভা অধিবেশ বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছেন, তা-ও সংবিধানসম্মত নয় বলে তাঁরা মনে করছেন।
আর পড়ুন Jagdeep Dhankhar: রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা রাজ্যপালের
জগদীপ ধনখড় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকেই নানা ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বারবার সংঘাতে জড়িয়ে পড়িয়েছেন। রাজ্যপালকে সরানোর আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চারবার চিঠিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংঘাতের জেরে রাজ্যপালকে তিনি টুইটারে ব্লকও করেছেন। রাজ্যপাল ইস্যুতে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় রাজ্যসভায় স্বতন্ত্র প্রস্তাবও এনেছেন। এমনকি রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বিরোধ বেধেছে ধনখড়ের। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভার কাজকর্মে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ করেছেন বিমান। বিধানসভায় পাশ হওয়া ফাইল রাজ্যভবনে ফেলে রাখার অভিযোগও করা হয়। যদিও রাজ্যপাল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। কোনও ফাইল রাজভবনে পড়ে নেই।
দিনে দিনে রাজ্য-রাজ্যপাল সম্পর্কে তিক্ততা বাড়লে, জগদীপ ধনখড়কে সরানো হবে, এমন কোনও ইঙ্গিত কিন্তু কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হয়নি। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় নরেন্দ্র মোদির কাছে রাজ্যপালকে সরানোর আর্জি জানাতে গেলে, প্রধানমন্ত্রী মজা করে বিষয়টি এড়িয়ে যান।