কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) গ্রেফতার হওয়া সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য মুখ্যসচিবের অনুমতি নিয়ে অবস্থান জানানোর জন্য শেষবারের জন্য সময় দিল আদালত। আগামী ২ মে-র মধ্যে অবস্থান জানানোর জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। বিচারপতি জানিয়েছেন, যদি এবারও মুখ্যসচিব নিজের অবস্থান না জানান তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হবে।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ৪৮)
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেছেন, তদন্ত এবং বিচারপ্রক্রিয়া মসৃণ ভাবে চলছে কিনা সেটা দেখা আদালতের কাজ। যদি দেখা যায় যে এক্ষেত্রে কোনও বাধা আসছে তাহলে সেটা সরানোর কাজ আমাদের করতে হবে। যদি বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি মুখ্যসচিব না দেন তাহলে বাধ্য হয়ে আদালতকেই সেই কাজ করতে হবে এবং সেই মর্মে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করতে হবে। মুখ্যসচিবের রিপোর্টে আদালত মোটেই সন্তুষ্ট নয় বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি।
আদালত জানিয়েছে, নির্বাচনের সঙ্গে মুখ্যসচিবের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি অযথা এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করছেন। তিনি এই মামলার গুরুত্ব বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি তাঁর বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। আমাদের কি এটা ধরে নিতে হবে যে এই অভিযুক্তরা এতই প্রভাবশালী যে রাজ্যের মুখ্যসচিবও বিচার শুরু করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না? প্রশ্ন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর। তিনি আরও বলেছেন, এই দুর্নীতির শিকড় অনেক গভীরে আছে এবং এক্ষেত্রে অনেক উচ্চপদস্থ কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। এটা মাথায় রাখতে হবে মুখ্যসচিবকে। বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যসচিবকে প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতির রায়কে হাতিয়ার করে নির্বাচনী প্রচারে সৃজন
উল্লেখ্য, সোমবার SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগে এসএসসি সংক্রান্ত মূল মামলাগুলি গ্রহণযোগ্য কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সোমবার সব মামলাই গ্রহণযোগ্য বলে জানান বিচারপতি দেবাংশু বসাক। এই রায়ের ফলে ভোটের মুখে বড় ধাক্কা রাজ্যের। ২০১৬ সালে নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশে শিক্ষক এবং গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি পদে এই নিয়োগ হয়েছিল। এদিন বিচারপতি বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোনও চাকরি বৈধ হলে, তা গণ্য হওয়া উচিত নয়। মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরিপ্রাপকদের বেতন ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদ সহ এই বেতন ফেরত দিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
আরও খবর দেখুন