জলপাইগুড়ি: কপ্টার দুর্ঘটনায় (Chopper Accident) মৃত দার্জিলিঙের তাকদার বাসিন্দা হাবিলদার সতপাল রাইয়ের (Satpal Rai) দেহ ফিরছে তাঁর জন্মভিটেয় (Darjeeling Satpal Rai)৷ মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে গোটা গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে ছিল৷ দেহ শনাক্তকরণ নিয়েও বেশ জটিলতা তৈরি হয়েছিল৷ ডিএনএ টেস্টে (DNA Test Satpal) দেহ শনাক্তকরণের পর তাঁর মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে চলছে বায়ুসেনা৷ সেই মতো রবিবার বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে বাগডোগরা পৌঁছবে তাঁর নিথর দেহ৷ সেখান থেকে দার্জিলিং গ্রামে ফিরবে ফুল ও জাতীয় পতাকায় মোড়া সতপালের দেহ৷ চোখের জলে ঘরের ছেলেকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তৈরি হচ্ছে তাকদা গ্রাম৷
৮ ডিসেম্বর কুন্নুরের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল তাঁদের মধ্যে ছিলেন হাবিলদার সতপাল৷ গত ১০ বছর ধরে তিনি ছিলেন জেনারেল রাওয়াতের ছায়াসঙ্গী৷ ১০ ডিসেম্বর সিডিসি রাওয়াতের শেষকৃত্য সম্পন্ন হলেও সতপালের দেহ ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল পরিবার৷ কপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত সকলের দেহ শনাক্তকরণের পরই পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেয় বায়ুসেনা৷ কিন্তু সতপাল-সহ কয়েকজনের দেহ আগুনে এতটাই ঝলসে গিয়েছিল যে, তাঁদের শনাক্ত করতে বেগ পেতে হচ্ছিল৷ তাই ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সতপাল রাইয়ের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনী রক্ত সংগ্রহ করে বিমানে দিল্লি পাঠায়৷ অবশেষে শনিবার রাতে সতপালের দেহ শনাক্ত করা যায়৷ তারপরই রবিবার দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সেনাবাহিনী৷
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামিকাল সতপালের অন্তোষ্টি সম্পন্ন হবে৷ দার্জিলিং পাহাড়ের এক অজানা ছোট্ট গ্রাম গ্লেনবার্নে৷ ১৯৭৮ সালে জন্ম হাবিলদার সতপালের। ২০০০ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। গত ২১ নভেম্বর ছুটি কাটিয়ে দিল্লি ফিরে যান৷ সতপালের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, চাকরি পাওয়ার পর তিনি দিল্লিতেই থাকতেন। তাঁর ছেলেও সেনাবাহিনীতে কর্মরত। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ ছিল সতপালের। তাকদার অধিকাংশ বাসিন্দাই সেনাবাহিনীতে কর্মরত৷ তাঁদের মধ্যে অনেকেই এখন অবসর নিয়েছেন৷ তাঁদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন সতপাল৷ সেই ঝলমলে-হাসিখুশি, তরতাজা যুবকটি আজ কফিনে শুয়ে ফিরবেন নিজের ভিটেয়৷ সেই প্রতীক্ষাতেই এখন পাহাড়ের মতোই থমকে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাঁর নিজের গ্রাম৷
আরও পড়ুন: Covid Kolkata: কলকাতায় পুরভোটের মুখে বাড়ল পজিটিভিটি হার, উদ্বিগ্ন কেন্দ্রের চিঠি মুখ্যসচিবকে