কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election 2023) নিয়ে রাজ্য জুড়ে অশান্তির দায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের ঘাড়ে চাপালেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C. V. Ananda Bose Governor of West Bengal)। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে (State Election Commissioner) নিয়োগ করেছিলাম। কিন্তু তাঁর কাজে মানুষ হতাশ।
পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে অশান্তির আবহে হাইকোর্টের তীব্র রোষের মুখে পড়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মনোনয়ন পর্বে হিংসা নিয়ে ক্ষুব্ধ হন খোদ রাজ্যপালও। ভাঙড় ক্যানিংয়ের মতো একাধিক হিংসদীর্ণ এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তিনি বারবার বলছেন, পঞ্চায়েত ভোটে কোনও মতে হিংসাকে বরদাস্ত করা হবে না। এরই মধ্যে বুধবার রাতে রাজভবন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট ফিরিয়ে দেওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে।
বিরোধীরা বরাবর অভিযোগ করে আসছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অপদার্থতার কারণেই মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকেই রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় হিংসা ছড়িয়েছে। মানুষ কমিশনের উপর আস্থা হারাচ্ছেন। হিংসা , প্রাণহানি, দেখে হাইকোর্টও বলেছে, এত রক্তপাত, হিংসা চললে নির্বাচন বন্ধ করা উচিত।
এদিন রাজ্যপালের তোপ থেকেও রেহাই পেলেন না রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, রাজ্যে যাতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়, সেই আশায় কমিশনারকে নিয়োগ করেছিলাম। তাঁর ভূমিকায় হতাশ রাজ্যের মানুষ। বোস বলেন, গণতন্ত্রে হিংসার কোনও জায়গা নেই। মানুষের রক্ত নিয়ে দরাদরি করা যায় না। রাজ্য নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব কর্তব্য পালন করেনি। রাজ্যপাল বলেন, প্রতিটি রক্তবিন্দুর দায় কমিশনের। রাজ্যপালের মন্তব্যের পর রাজভবন ও কমিশনের সংঘাত আরও চরমে পৌঁছল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিকে রাজ্যপাল এবং নির্বাচন কমিশনারের দ্বন্দ্বে রাজীব সিনহার পাশে দাঁড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee Chief Minister of West Bengal)। বিরোধীদের বৈঠকে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার পাটনায় উড়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এমন কোনও ঘটনা অতীতে কখনও হয়নি, এ নজিরবিহীন। মমতার দাবি, রাজ্যপাল ফাইল পাশ করেছিলেন। তাঁর উপর চাপিয়ে দেওয়ার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সাংবিধানিক পদ। তাঁকে সরাতে হলে ইমপিচমেন্ট করতে হয়।
মনোনয়নের দিন থেকে রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস চলছে। রাজনৈতিক অশান্তিতে প্রাণ হারিয়েছেন আট জন। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শীর্ষ আদাতলে ধাক্কা খেতে হয় রাজ্য ও কমিশনকে। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে নির্দেশকে বহাল রাখে। প্রতিটি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।