কলকাতা: প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি মামলাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বুধবার জানান, সিবিআই দ্রুত তদন্তের কাজ শুরু করবে। ১৫ জুন মুখবন্ধ করা খামে তদন্তের গতিপ্রকৃতির অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে আদালতে। মামলায় সিবিআইয়ের প্রাক্তন অধিকর্তা এবং প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকেও পক্ষ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। তিনি বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ করেছেন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে। তাঁর ওই অভিযোগও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে আদালত। আদালতের আরও নির্দেশ, তদন্তে সহযোগিতা না করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই।
সম্প্রতি উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের তৈরি করা একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি কলকাতা টিভি ডিজিটাল। ওই ভিডিয়োয় বনগাঁ, অশোকনগর প্রভৃতি এলাকায় লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে স্কুল শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে জনৈক রঞ্জনের নামে। রঞ্জন অবশ্য আসল নাম নয়। তাঁর আসল নাম হল চন্দন মণ্ডল। এই ভিডিয়োটি বছর খানেক আগে করা হলেও সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে তা সামনে আসে। আদালত ওই চন্দন মণ্ডলকেও মামলায় যুক্ত করতে বলেছে। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকেও ১৫ জুনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালত সূত্রের খবর, মূল মামলাটি হল ২০১৪ সালে টেট ফেল করেও অনেকের চাকরি পাওয়া নিয়ে। এখানেও এসএসসির গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি এবং শিক্ষক নিয়োগের মামলায় টাকার বিনিময়ে কিংবা পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের অনেককে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসির ওইসব নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কেন্দ্রের গোয়েন্দা সংস্থা সেই তদন্ত চালাচ্ছে।
এদিন আদালত ওই তথাকথিত রঞ্জন সম্পর্কে সরকারি আইনজীবীর কাছে তথ্য জানতে চায়। আইনজীবী লক্ষী গুপ্ত বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি ওয়াকিবহাল নই। অভিযোগ কতটা সত্য তাও আমার জানা নেই। টেটে স্বচ্ছভাবেই ২৬৯ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও রঞ্জন প্রসঙ্গের অবতারণা করেন। তিনি বলেন, উপেন বিশ্বাসের মন্তব্য এবং ভিডিয়োর ভিত্তিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। এবং মামলায় রঞ্জনকে যুক্ত করা হোক।
সরকারি আইনজীবী লক্ষী গুপ্ত জানান, এটি আদৌ জনস্বার্থ মামলা নয়। যে কেউই অভিযোগ জানাতে পারে। সেই অভিযোগের সবসময় গ্রহণযোগ্যতা থাকে না।
আরও পড়ুন: Bhawanipore Murder: ভবানীপুরে দম্পতি খুনে পারিবারিক যোগ রয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানাল লালবাজার
ডিএলড সার্টিফিকেট: অনেক উত্তীর্ণ প্রার্থী ডিএলএড সার্টিফিকেট না পাওয়ায় নিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়েও হাইকোর্টে মামলা হয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, পরবর্তী নিয়োগের সময় এই পরীক্ষার্থীদের সুবিধা দেওয়া হব বলে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে। তাই আবেদনের যৌক্তিকতা নেই। তিনি সমস্ত মামলার নিষ্পত্তি ঘোষণা করে বলেন, সকলেই সার্টিফিকেট পাবেন। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।