কলকাতা: রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে কি নতুন সংঘাত তৈরি হতে চলেছে নবান্নের? অন্তত রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগকে ঘিরে তেমনই আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে এই মুহূর্তে রাজ্য নির্বাচন কমিশন অভিভাবকহীন। নবান্নের পাঠানো নামে এখনও রাজভবনের তরফে সবুজ সংকেত না মেলায় কমিশনার পদটি ফাঁকা। আর তা নিয়েই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে খোঁচা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে বলেছেন, পছন্দ না হলে ফাইল ফিরিয়ে দিন। সামনে পঞ্চায়েত আছে, আমি মাথা নিচু করছি না। কোনওবার সমস্যা হয়নি, এটা এই প্রথম হল। আশা করি শুভবুদ্ধির উদয় হবে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এদিনই এর প্রতিক্রিয়ায় জানান, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সরকারের তরফে মাত্র একজনের নাম পাঠানোয় প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। জানতে চান, প্রাক্তন মুখ্যসচিবের নাম পাঠানোর আগে কি মন্ত্রিসভার অনুমোদন নেওয়া হয়েছে? এই বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইতে শুক্রবার রাজভবনে তলব করা হয়েছিল মুখ্যসচিবকে। এরপর নবান্নের তরফে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দ্বিতীয় নাম প্রস্তাব করা হয়। পাঠানো হয় অজিতরঞ্জন বর্ধনের নাম। বর্তমানে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদে রয়েছেন তিনি। আগে ছিলেন পঞ্চায়েত দফতরের দায়িত্বে।
কিন্তু, এরপরও কোনও নামেই সিলমোহর দেননি রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের কাছে কমিশনার হিসেবে প্রস্তাবিত তৃতীয় নামও চাওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মে প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের নাম নতুন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগের জন্য রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়। তবে একটি নাম পাঠানোয় প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিয়ে রাজি হয়নি রাজভবন। এরপর থেকেই টালবাহানা চলতে থাকে। দ্বিতীয় নাম হিসাবে এরপর রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধনের নাম পাঠায় নবান্ন। তবে এতেও রাজি ছিল না রাজভবন। ফের তৃতীয় বিকল্পের নাম চেয়ে পাঠানো হয় রাজভবনের তরফে। এখনও পর্যন্ত তৃতীয় বিকল্পের নাম পাঠানো হয়নি বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল ভুল করছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ের জন্য তিনটি নাম পাঠানো উচিত ছিল। সেটা করা হয়নি। এখন সবটাই রাজ্যপালের উপর নির্ভর করছে। বিষয়টি নিয়ে এখন যা করার রাজ্যপাল করবেন বলে জানান তিনি।