কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিধানসভায় দেখা করা নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে খোঁচা দিলেন দিলীপ ঘোষ। শনিবার নিউটাউনের ইকো পার্কে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে শুভেন্দুর মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম করা প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ বলেন, ওনাদের পুরনো সম্পর্ক। অনেকে কালীঘাটে প্রণাম করে আসেন। উনি বিধানসভায় করেছেন। এটা পাবলিক ম্যাটার নয়। ব্যক্তিগত বিষয়।
শুক্রবার বিধানসভা ভবনে নিজের চেম্বারে মমতা চা খেতে ডেকেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে। বিরোধী নেতা মমতার সৌজন্যের জবাবে জানিয়েছিলেন, তিনি একা যাবেন না। আরও কয়েকজনকে নিয়ে যাবেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রবীণ বিধায়ক তথা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ি, অগ্নিমিত্রা পল এবং মনোজ টিগ্গা। মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে ঢুকে শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রীকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন। প্রণাম করেন অগ্নিমিত্রাও। তিনি বলেন, কেমন আছ। বাবা কেমন আছেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়িকে বলেন, আপনার মতো লোকজনকে আমার দরকার। অর্থ দফতরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। আপনি চলে আসুন আমাদের সঙ্গে। শুভেন্দু সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, দিদি, এটা করবেন না।
আরও পড়ুন: Naoda Incident: নওদায় তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার ২
শুক্রবার নিজের ঘরে মমতা বিরোধী নেতাকে ডেকে পাঠানোর আগে পরেও মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্য দেখিয়েছেন। বিধানসভায় সংবিধান রক্ষা সংক্রান্ত আলোচনায় শুভেন্দু অংশ নিয়ে সরকার তথা শাসকদেলর সমালোচনা করেন। ট্রেজারি বে়ঞ্চের সদস্যরা তাঁকে বাধা দিলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ ওঁকে বাধা দেবেন না। পরে ভাষণ দিতে উঠে মমতা শুভেন্দুকে ভাই বলে সম্বোধন করেন। তিনি বলেন, আজ শুভেন্দু সংবিধান নিয়ে বক্তৃতা দিলেন। পরে দুটি অনুষ্ঠানে শুভেন্দু কেন নেই, মুখ্যমন্ত্রী তা জানতে চান বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দুর সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপের সম্পর্ক অম্লমধুর। বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই মাঝে মাঝে দিলীপ কখনও নাম করে, কখনও নাম না করে শুভেন্দুকে খোঁচা দিতে ছাড়তেন না। তৃণমূল ছেড়ে অনেকেই বিজেপিতে গিয়েছেন। তা নিয়েও বিভিন্ন সময়ে দিলীপ নানা মন্তব্য করেন অতীতে। শুভেন্দু বিজেপিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বেশ গুরুত্বও পাচ্ছেন। নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহেরও পছন্দের লোক শুভেন্দু। শুক্রবার তাঁর বিধানসভায় মমতা ঘরে যাওয়া নিয়ে নানা জল্পনা চলছে বিজেপির অন্দরেও। দিলীপ সেই জল্পনাকেই উসকে দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শুভেন্দু-মমতা দেখা করা নিয়ে দিলীপ এদিন আরও বলেন, কারও সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকতেই পারে। বিধানসভা সৌজন্যের জায়গা। সবাই বসে কথা বলেন। এতে আমার কিছু অন্যায় মনে হয়নি। আমি নিজেও বিধায়ক থাকাকালীন বিধানসভায় শাসকদলের সঙ্গে সৌজন্য বজায় রেখেছি। এখন সাংসদ হিসেবেও আমি বিরোধীদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করি। দিলীপ বলেন, তবে মুখ্যমন্ত্রীর সবাই মিলে দিল্লি থেকে টাকা নিয়ে আসার প্রস্তাবে আমার আপত্তি আছে। আমরা টাকা নিয়ে আসব। আর সেই টাকায় তিনি মৌজ করবেন, তাঁর লোকেদের পুষবেন, এটা হতে পারে না।