সাফ কাপের গ্রুপ এ থেকে দুটি দলই উঠে গেছে সেমিফাইনালে। মঙ্গলবার, তাই, গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভারত ও কুয়েতের লড়াইটা নেহাতই নিয়মরক্ষার। তবে একেবারে যে ম্যাচটির গুরুত্ব নেই তাও নয়। কারণ গ্রুপে যে দল রানার্স হবে তাদের সেমিফাইনালে খেলতে হবে লেবাননের সঙ্গে। আর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে প্রতিদ্বন্দ্বী হবে বাংলাদেশ কিবা মালদ্বীপ। সব মিলিয়ে তাই ম্যাচটির একটু হলেও গুরুত্ব আছে। এমনিতে কুয়েত বলতে যে শক্তিশালী টিমের কথা মনে ভসে ওঠে, এই কুয়েত সে রকম নয়। একদা তার বিশ্ব কাপে খেলেছ। কিন্তু এখন নামতে নামতে নেমে গেছে ১৪৩ নম্বরে। ভারতের (১০৬) ঢের পিছনে। যদিও কুয়েত এবারের সাফ কাপে দুটি ম্যাচই জিতেছে। নেপালকে তারা হারিয়েছে ৩-১ গোলে। এবং পাকিস্তানকে, ভারতের মতোই, ৪- ০ গোলে। তাই তাদের একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।
ভারত সে রকম ভাবছেও না। এই ম্যাচে ভারতের ডাগ আউটে দেখা যাবে কোচ ইগর স্টিমাকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লাল কার্ড দেখায় তাঁকে নেপাল ম্যাচে গ্যালারিতে বসতে হয়েছিল। শোনা যাচ্ছে কুয়েত ম্যাচে তিনি সুনীল ছেত্রীকে শুরুর থেকে নাও খেলাতে পারেন। সুনীলের বয়স এখন ৩৮। আন্তঃ মহাদদেশীয় কাপ এবং সাফ কাপ ধরে টানা ছয়টা ম্যাচ খেলেছেন তিনি এবং মাত্র পনেরো দিনে। শরীরের উপর ধকল যাচ্ছে। তাই কুয়েত ম্যাচের যেহেতু গুরুত্ব কম, তাই তাঁকে শুরু থেকে না খেলানোর একটা ভাবনা কাজ করছে স্টিমাকের। তবে সেই ভাবনা আদৌ কাজ করবে কি না, তা নির্ভর করছে সুনীলের উপর। ম্যাচের দিন সকালে কোচ জানতে চান তাঁর অধিনায়কের কাছে। তিনি খেলতে চান কি না। তার পর দল গড়েন স্টিমাক। তাই সুনীল নিজে থেকে বসতে না চাইলে তাঁকে বসাও যাবে না। সুনীল এখন প্রতি ম্যাচে গোল করছেন। তাই তিনি বসতে চাইবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্নও আছে।
এ ছাড়া ভারতের আর কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা অবশ্য নেই তাই বলা যাবে না। সমস্যা হল কাকে ছেড়ে কাকে খেলানো হবে। বিশেষ করে সামনের দিকে। নাওরম মহেশ সিং, ছাংতে কিংবা অনিরুদ্ধ থাপার জায়গা নিয়ে কোনও সংশয় থাকার কথা নয়। তিন জনই প্রত্যেকটা ম্যাচে ভালই খেলছেন। বিশৈষ করে পরিবর্ত ফুটবলার থেকে মহেশ এখন প্রথম একাদশে ঢুকে পড়অর মতো ফর্মে আছেন। নেপাল ম্যাচে সুনীল ছেত্রীকে দিয়ে গোল করিয়েছেন। নিজেও গোল করেছেন। তাই কুয়েত ম্যাচে তাঁকে শুরু থেকেই খেলানো উচিত। অনিরুদ্ধ থাপার কোনও বিকল্প নেই। মাঝ মাঠটা তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন। আর ডান দিকের উইং-এ মাঠ জুড়ে খেলেন ছাংতে। এদের সঙ্গে আশিক কুরুনিয়ন, সাহাল আব্দুল সামাদ যদি নিজেদের ঠিক মতো মেলাতে পারেন তাহলে ভারতের গোল পাওয়া নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
ডিফেন্স নিয়ে ভারতের সমস্যা কম। টানা আটটা ম্যাচ তারা গোল না খেয়ে জিতেছে। এমন কি নেপাল ম্যাচে সন্দেশ ঝিঙ্গন না খেলা সত্ত্বেও তারা গোল খায়নি। তবে কুয়েত ম্যাচে সন্দেশকে লাগবে। কুয়েতী ফুটবলাররা শারীরিকভাবে ভারতীয়দের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তাই সন্দেশের মতো শারীরিকভাবে বলশালী প্লেয়ারের দরকার। বাকি তিনজন কে হবেন তা স্টিমাকই জানেন। তবে সেন্টার ব্যাকে সন্দেশের সঙ্গী হিসেবে মেহতাব সিংয়ের চেয়ে আনোয়ার আলিকে একটু বেশি ভাল মনে হচ্ছে। কি্ন্তু ফুল ব্যাক হিসেবে প্রীতম কোটাল–শুভাশিস বসুর তুলনায় নিখিল পূজারী–আকাশ মিশ্র খুব একটা পিছিয়ে নেই। গোলে গুরপ্রীত কিংবা অমরিন্দর দুজেনেই বেশ নির্ভরযোগ্য। তাই সুনীল ছেত্রী শুরু থেকে খেলুন বা শেষ ৩০ মিনিটের জন্যই নামুন না কেন, কুয়েতকে হারাতে ভারতের বেগ পাওয়ার কথা নয়।