আগরতলা: ত্রিপুরার ভোটে (Tripura Assembly Elaction 2023) এবারেও ইস্যু হতে চলেছে দু’দশক ধরে অমানুষের মতো উদ্বাস্তু জীবন কাটানো ব্রু উপজাতিদের (Bru Refugees) পুনর্বাসন প্রসঙ্গ। রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Tripura Election Department) ব্রু উপজাতিদের আপাতত ত্রাণ শিবিরেই (Relief Camps) থাকতে বলেছে। ঘরছাড়া উদ্বাস্তুদের নিজের ঘরে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তাদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্যও বলা হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে রাজ্যে আশ্রিত ৬৩০০ ব্রু উপজাতি পরিবারের ২০ হাজার ভোটার পাবে ত্রিপুরা।
সব মিলিয়ে এখনই ৭১৬৫ জনের নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে। প্রসঙ্গত, গত মাসেই ত্রিপুরা হাইকোর্ট (Tripura High Court) বিজেপির মানিক সাহার নেতৃত্বাধীন সরকারকে ব্রু উপজাতিদের ভোটাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। ব্রু উপজাতির মানুষ গত ২৫ বছর ধরে এই অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
ব্রু উদ্বাস্তু কারা?
ব্রু, যাদের রিয়াং (Reang) বলা হয়, তারা উত্তর-পূর্ব পার্বত্য এলাকায় ছড়িয়ে থাকা একটি আদিবাসী জনগোষ্ঠী। ইতিহাস বলে এরা মিজোরাম (Mizoram), ত্রিপুরা এবং অসমের বিভিন্ন অংশের আদি বসবাসকারী। ত্রিপুরায় এখন অধিকাংশ ব্রু উদ্বাস্তু শিবিরে থাকেন। মিজোরাম থেকে বিতাড়িত হয়ে জমিজিরেত, ঘরদোর ছেড়ে তাঁরা আশ্রয় নেন এই রাজ্যে।
কীভাবে ঘরছাড়া হলেন?
১৯৯৫ সাল। ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশন এবং মিজো স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন দাবি তোলে, ব্রুদের ভোটার তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলতে হবে। কারণ ব্রু-দের সঙ্গে মিজো জাতিগোষ্ঠীর কোনও সম্পর্ক নেই। তারা মিজোরামের আদি বাসিন্দা নয়। মিজোরা তখন ব্রুদের ‘ভাই’ বলতে শুরু করে, যার অর্থ বহিরাগত অথবা অ-মিজো। দাবি যখন জোরজবরদস্তিতে পৌঁছে যায়, তখন ব্রুরাও তার পালটা আক্রমণ শুরু করে। যা নিয়ে মিজোরাম জুড়ে উত্তেজনা চরমে ওঠে। ব্রুরা সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলায় অবস্থা ভয়াবহ হয়ে যায়। গড়ে ওঠে ব্রু ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট এবং ব্রু ন্যাশনাল ইউনিয়ন। তারা তখন পৃথক ব্রু স্বশাসিত জেলা পরিষদ গঠনের দাবি জানায়। এনিয়ে মিজোদের সঙ্গে সরাসরি সংঘাত বাধলে ব্রুদের ঘরছাড়া করা হয়। প্রায় ৩৫ হাজার উপজাতি মিজোরাম ছেড়ে উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর উদ্বাস্তু শিবিরে এসে আশ্রয় নেয়।