কলকাতা: ৬৮, ৭২, ৭৩। কলকাতা পুরভোটে (KMC Election TMC) প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার পরে থেকে এই তিন ওয়ার্ড নিয়ে অস্বস্তিতে জোড়াফুল শিবির। তিন ওয়ার্ডেই তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন টিকিট প্রত্যাশীরা। এর মধ্যে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে চিন্তা কিছুটা কমেছে তৃণমূলের (TMC)। চার বারের তৃণমূল কাউন্সিলর রতন মালাকার নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে পড়লেও তিনি মনোনয়ন (KMC Election TMC) প্রত্যাহার করেছেন। ৬৮ এবং ৭২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে এখন অস্বস্তিতে শাসক শিবির। আগামীকাল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। এই কেন্দ্রের দুই নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে শাস্তির মুখে পড়তে পারেন বলে খবর।
পুরভোটে টিকিট না-পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভ্রাতৃবধূর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হয়েছিলেন রতন মালাকার৷ বুধবার তিনি ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়নও জমা দিয়েছিলেন। তবে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মত বদল করেন তিনি। শুক্রবার সকালেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। দলের সৈনিক ছিলাম। আছি, থাকব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই আজ আমি এই জায়গায়। সুব্রত বক্সি, মদন মিত্ররা আমায় বুঝিয়েছেন। আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। দল যে দায়িত্ব দেবে তা পালন করব।’ দীর্ঘ ২০ বছর কাউন্সিলর থাকার পরও এই বছর আচমকা বাদ পড়েছিলেন রতন৷
ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৭২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তৃণমূলেরই আরেক প্রাক্তন কাউন্সিলর সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির ভাই ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সন্দীপরঞ্জন বক্সির বিরুদ্ধে দলেরই প্রাক্তন কাউন্সিলর মনোনয়ন জমা দেওয়ায় অস্বস্তি ছড়িয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। ২০১০ থেকে ২০১৫ অবধি সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চেয়ারম্যান করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের এক বিজয়া সম্মিলনীতে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি হুশিয়ারি দিয়েছিলেন, টিকিট না পেয়ে বিরোধিতা করলে রাজনীতিগতভাবে একঘরে হতে হবে।
আরও পড়ুন- নির্দল রতনের বোধোদয়, মনোনয়ন প্রত্যাহার করে বললেন, ‘আমি তৃণমূলের সৈনিক’
তৃণমূলের অস্বস্তি রয়েছে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড নিয়েও। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় নাম থাকলেও পরে বাদ দেওয়া হয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে। ২৬ তারিখ দলের ঘোষিত প্রার্থী তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে বদল করে বিদায়ী কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়কেই টিকিট দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। তবে তাতে দমে যাননি তনিমা চট্টোপাধ্যায়। দাদার ছবি হাতে নিয়ে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দেন তনিমা। সুব্রত আবেগ কাজ করতে পারে এখানে। তাই এই ওয়ার্ড নিয়ে চিন্তার ভাঁজ তৃণমূলের অন্দরে। শনিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন। তার আগে বিক্ষুব্ধ এই দুই প্রার্থীর মানভঞ্জন করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানোটাই চ্যালেঞ্জ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে।