কলকাতা: না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী রশিদ খান (Rashid Khan)। মাসখানেক ধরেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সকালে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। তাঁকে সঙ্কটজনক অবস্থায় আইসিইউ-এ ট্রান্সফার করা হয়েছে। ভেন্টিলেশন সাপোর্টে ছিলেন শিল্পী। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা বিফলে গেল। এদিন হাসপাতালে দুপুর ৩.৪৫-এ তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া শিল্পী মহলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়নগর থেকে সরাসরি ওই হাসপাতালে চলে যান।
এদিন হাসপাতাল শিল্পীর স্ত্রী, পুত্র ও মেয়েকে সমবেদনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালে দেহ রাখা হবে। রাতে দেহ পিস ওয়ার্ল্ডে থাকবে। আগামিকাল বুধবার সকাল ৯ টায় রবীন্দ্র সদনে নিয়ে যাওয়া হবে মরদেহ। সেখানেই শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ। গান স্যালুটের মাধ্যমে শিল্পীকে হবিদায় জানানো হবে। তারপর টালিগঞ্জ কবরস্থানে শিল্পীকে সমাধিস্থ করা হবে।
হাসপাতালে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমার সঙ্গে শিল্পীর পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। আমাকে মা বলে ডাকতেন। রশিদ খান নেই, ভাবতেই পারছি না। গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। ওঁর গান আর শুনতে পারব না, ভাবতেও খারাপ লাগছে।
আরও পড়ুন: বিলকিস বানোকে নিয়ে সিনেমা করবেন কঙ্গনা?
এই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পীর প্রয়াণে শিল্পী মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেক শিল্পী হাসপাতালে পৌঁছে যান প্রয়াত রশিদ খানকে শ্রদ্ধা জানাতে। ১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে জন্ম রশিদের। তিনি রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার শিল্পী। রশিদের দাদু উস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ-সাহিবের কাছ থেকে তালিম নিয়েছেন। মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গাইলেও ফিউশন বা বলিউড এবং টলিউডের ছবিতে বহু জনপ্রিয় গানও গেয়েছেন শিল্পী। ১০-১১ বছর বয়সে কলকাতা চলে আসেন রাশিদ। সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমির স্কলারশিপ নিয়ে দাদু নিসার হুসেনের কাছে গান শেখা শুরু। এরপর তিনি থেকে গিয়েছেন কলকাতাতেই। সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, পদ্মশ্রী সম্মান যেমন পেয়েছেন, তেমন বাংলা থেকেও পেয়েছেন বঙ্গবিভূষণ সম্মান।
শিল্পী প্রস্টেটে ক্যানসার হয়েছিল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। তার মধ্যেই তাঁর ব্রেন স্ট্রোক হয়। এর পরই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেই থেকে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসায় তিনি সাড়া দিচ্ছিলেন। তার মধ্যেই স্বাস্থ্যের অবনতির খবর মিলল। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল, শিল্পীর অবস্থা অতি সঙ্কটজনক। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। এদিন পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে।
আরও অন্য খবর দেখুন