নাটকের একের পর এক অঙ্ক শেষে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে মনোনয়ন পেশ করলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে ও শশী থারুর। শুক্রবার দুপুরে শেষমেশ গান্ধী পরিবারের অনুগত দুই নেতাই দৌড়ে নামলেন। পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস নেতা কে এন ত্রিপাঠীও এদিন মনোনয়ন জমা দেন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর খাড়গে দলের হাইকমান্ডকে ধন্যবাদ জানান। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে তিনি বলেন, বিরাট পরিবর্তনের জন্য আমি লড়াই করব। গান্ধী পরিবারহীন কংগ্রেস আগামী লোকসভা ভোটে কীভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় শতাব্দী প্রাচীন দলের কাছে এখন সেটাই চ্যালেঞ্জ।
মল্লিকার্জুনের মনোনয়নে দলের ১০ জন প্রবীণ নেতা প্রস্তাবক হিসেবে সই করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, অশোক গেহলট, দিগ্বিজয় সিং, একে অ্যান্টনি, অম্বিকা সোনি, মুকুল ওয়াসনিক, আহমেদ শর্মা, অজয় মাকেন, ভুপিন্দর সিং হুদা, তারিক আনোয়ার প্রমুখ। খাড়গের প্রতিদ্বন্দ্বী শশী থারুরও প্রবীণ নেতা তথা রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুনকে দলের ভীষ্ম পিতামহ বলে আখ্যা দেন। থারুর বলেন, তাঁর প্রতি আমার কোনও অশ্রদ্ধা নেই, আমি আমার চিন্তাধারায় চলি।
আরও পড়ুন: Congress Meeting: পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী করলে রাজস্থানে সরকার টিকবে না, সোনিয়াকে জানালেন গেহলট
কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই একের পর এক নাটকীয় মোড় নিচ্ছে ঘটনাক্রম। ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার মুখে এদিন সকালে আচমকাই দৌড় থেকে ‘স্বেচ্ছা’য় সরে দাঁড়ান দিগ্বিজয় সিং। শুধু তাই নয়, হাইকমান্ডের ‘মনোনীত’ প্রার্থী মল্লিকার্জুন খাড়গের মনোনয়নে প্রস্তাবকও হবেন তিনি বলে জানিয়ে দেন। সভাপতি নির্বাচনের দৌড়ে নাটকীয়ভাবে প্রায় শেষ মুহূর্তে প্রবেশ করেন গান্ধী পরিবারের একনিষ্ঠ অনুগামী মল্লিকার্জুন খাড়গে। যাঁকে ১০ জনপথের বাসিন্দা সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর প্রথম পছন্দের তালিকায় বলে মনে করা হয়।
দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, কংগ্রেসি রাজনীতিতে অত্যন্ত পোড়খাওয়া ব্যক্তিত্ব এবং দেশের বিভিন্ন টালমাটাল সময়ে স্থির-অবিচল সিদ্ধান্ত ও পরামর্শদাতা অশীতিপর খাড়গের হাতেই ভারতের প্রাচীনতম দলের দায়িত্ব যাচ্ছে বলে জল্পনা আকবর রোডের অন্দরে। আজই ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।
ক্লাইম্যাক্সের মোড় ঘোরে শুক্রবার সকালেই। কে সি বেণুগোপাল ও মল্লিকার্জুন এক বৈঠকে ডাকেন দিগ্বিজয় সিংকে। সেথানে তাঁদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, তা জানা না গেলেও বৈঠক শেষে বেরিয়ে দিগ্বিজয় জানান, তিনি মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, আমি খাড়গের সঙ্গে দেখা করেছি। উনি যখন দাঁড়াচ্ছেন, তখন আমি না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিই। সব মিলিয়ে গান্ধী পরিবারহীন কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন জমজমাট হতে চলেছে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তা সত্যি হবে কি? ঠারেঠোরে অনেকেই বলছেন, নিজেরা রাজদণ্ড হাতে না নিলেও দলের সোনার কাঠি-রুপোর কাঠিটা থাকছে ১০ জনপথের আলমারিতেই।