উত্তরবঙ্গ: কালিয়াগঞ্জের (Kaliagunj) ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির (BJP) ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধে (Bandh) সকাল থেকে কোনও প্রভাব পড়েনি। তবে কয়েক জায়গায় হতাশ বিজেপি কর্মীরা তাণ্ডব চালায়। যদিও পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তাদের সরিয়ে দেয়। কোচবিহারে (Cooch behar) সরকারি বাস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল বনধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে বনধ সমর্থনকারীরা দক্ষিণ খাগড়াবাড়ি এলাকায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (NBSTC) একটি বাস ভাঙচুর করে গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে দেয়। পাশাপাশি কোচবিহার শহরের চাকির মোড় এলাকায় আরও একটি বাস ভাঙচুর হয়। বাসটি দিনহাটার দিকে যাচ্ছিল। সেই সময়ে মোটর সাইকেলে এসে এক বনধ সমর্থনকারী ঢিল মারলে গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে আহত হন গাড়ির চালক।
কালিয়াগঞ্জ এবং পুলিশের গুলিতে নিহত রাজবংশী যুবকের মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ, শুক্রবার বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বনধে (North Bengal Bandh) তেমন কোনও প্রভাব শিলিগুড়িতে (Siliguri) পড়েনি। সকাল থেকেই যানবহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। দূরপাল্লার বাসগুলি যথাসময়ে শিলিগুড়িতে এসে পৌঁছেছে। শিলিগুড়ি থেকে অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার বাস যথাসময়ে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। যদিও বিজেপির ডাকা বনধের জন্য সকাল থেকে পুলিশের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও বনধ সমর্থককে শহরের রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: Vande Bharat | পরীক্ষা যাত্রা হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের
ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরে। শুক্রবার সকাল থেকে বিজেপি নেতা কর্মীরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখান। দোকানপাট, বাজার এখনও না খুললেও রাস্তাঘাটে কিছু টোটো ও প্রাইভেট গাড়ি দেখা গিয়েছে। যদিও বিজেপি কর্মীরা ঝান্ডা হাতে সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছেন। আবার কিছু জায়গায় টোটো ফিরিয়ে দিচ্ছেন। এদিকে, বেসরকারি বাস রাস্তায় না দেখা গেলেও জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়ার উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় সংস্থার ডিপো থেকে সরকারি বাস রাস্তায় নেমেছিল বিভিন্ন রুটের উদ্দেশে। কদমতলা মোড়ে জলপাইগুড়ি-হলদিবাড়ি রুটের বাস আটকে দেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। এদিকে বাসের চালকদের সুরক্ষার জন্য দেখা গেল হেলমেট পরে গাড়ি চালাতে।
মাথাভাঙা মহকুমায় ৮ জন বিজেপি কর্মীকে আটক করে পুলিশ। এদিন সকালে ময়নাতলি মোড় এলাকায় বিজেপির পক্ষ থেকে মাথাভাঙা-কোচবিহার রাজ্য সড়কে পথ আটকে বিক্ষোভ দেখান এবং সেখানে বহু যানবাহন আটকে ছিল। এই সময় পুলিশ এসে ৮ জন বিজেপি বিক্ষোভকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন কোচবিহার জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বর্মন মন্ডল, সভাপতি শেখর রায়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
তুফানগঞ্জ মহকুমার কালীবাড়ি বাসস্ট্যান্ড, ধলপল এলাকায় সরকারি বাস আটকে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে দফায় দফায় বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে আটক করে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ। পাশাপাশি তুফানগঞ্জ বলরামপুর চৌপথী এলাকায় বিজেপি-তৃণমূলের মিছিল ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বিজেপির ধর্মঘটে শুক্রবার সকালে বালুরঘাট শহরে ভালোই প্রভাব দেখা গেল। সকাল থেকে বালুরঘাট বেসরকারি বাসস্ট্যান্ড থেকে একটিও বাসের চাকা নড়ল না। সরকারি স্ট্যান্ড থেকেও সেভাবে বাস চলাচল করেনি। এদিন অন্যান্য ধর্মঘটীদের সঙ্গে তপনের বিধায়ক বুধরাই টুডুকে পিকেটিংয়ে শামিল হতে দেখা যায়। শুক্রবার সকালে প্রথম ঘণ্টায় ধর্মঘটের ভালো সাড়া লক্ষ্য করা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে ছবিটা আরো স্পষ্ট হবে।
উত্তরবঙ্গ বন্ধের জেরে স্তব্ধ আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলা। সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত বাস পরিষেবা বন্ধ। রাস্তাঘাট প্রায় জনশূন্য বললেই চলে। জেলা শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি সমর্থকরা। আলিপুরদুয়ার জেলায় এখনও পর্যন্ত বন্ধের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। বনধের সমর্থনে বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামার নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা সড়কে বসে বিক্ষোভ দেখান।
মালদহ (Malda) জেলার মানিকচকে বিজেপির বনধ সমর্থকরা মালদহ-মানিকচক রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলে। মালদহ জেলায় সকাল বেলা বনধ সমর্থকরা রাস্তায় জোর করে গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করে। তবে সরকারি, বেসরকারি যান চলাচল করছে। কয়েক জায়গায় রাস্তা অবরোধের চেষ্টা হয়। তবে সব রাস্তায় প্রচুর পুলিশ রয়েছে। সর্বত্র হাটবাজার খোলা। জেলার প্রধান যে সবজি বাজার সেটা খোলা রয়েছে। মানুষজনও রাস্তায় বেরিয়েছেন। জেলা আর পাঁচটা দিনের মতোই স্বাভাবিক।