ইন্দোর: ইন্দোরে (Indore) হোলকার স্টেডিয়ামের (Holkar Stadium) পিচকে ‘খারাপ’ তকমা দিয়েছিলেন ম্যাচ রেফারি (Match Refree) ক্রিস ব্রড (Chris Broad)। তার জেরে হোলকার স্টেডিয়ামের নামে তিনটে ডিমেরিট পয়েন্ট (Demerit Points) জমা হয়। ব্রডের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আইসিসির (ICC) দ্বারস্থ হল বিসিসিআই (BCCI)। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে সরকারিভাবে একটি আবেদনপত্র পাঠিয়েছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড। ১৪ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। হোলকার স্টেডিয়ামের পরিচালন সংস্থা মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (Madhya Pradesh Cricket Association) এক শীর্ষকর্তা মঙ্গলবার একথা জানিয়েছেন।
ইন্দোরে আয়োজিত হয়েছিল বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির (Border-Gavaskar Trophy) তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ। নাগপুর এবং দিল্লিতে যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় টেস্টেও স্পিন সহায়ক পিচ বানানো হয়েছিল। সেগুলিকে ‘অ্যাভারেজ’ তকমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইন্দোরের পিচ ছিল অন্য মাত্রার। প্রথম দিন থেকেই বল ঘুরছিল একহাত করে। তার থেকেও ভয়ঙ্কর বিষয়, কোনও বল নিচু হয়ে গোড়ালিতে লাগছিল তো কোনওটা লাফিয়ে বুকে উঠে আসছিল। ব্যাটার তো দূরের কথা, বোলাররাও বুঝতে পারছিলেন না কোন বল কেমন আচরণ করবে।
এহেন রহস্যময় পিচে প্রথমে ব্যাট করে ১০৯ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল ভারত (India)। জবাবে অস্ট্রেলিয়া (Australia) ১৯১ রানে শেষ হয়ে যায়। এরপর ভারত ব্যাট করতে নেমে আবার ১৬৩ রানে বান্ডিল। এই ৩০ উইকেট পড়ে গিয়েছিল মাত্র দুই দিনে। খেলা শেষ হয়ে যায় তৃতীয় দিন লাঞ্চেরও ঘণ্টাখানেক আগে। ৯ উইকেটে জিতে সিরিজ ২-১ করে স্টিভ স্মিথের (Steve Smith) অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন: Shreyas Iyer | চোটে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বাইরে শ্রেয়স, আইপিএলে কি আছেন কেকেআর অধিনায়ক?
রিপোর্টে ক্রিস ব্রড জানান, ইন্দোরের পিচ ছিল অত্যন্ত শুকনো। ব্যাট এবং বলের কোনও ভারসাম্য ছিল না, প্রথম থেকেই সাহায্য করেছে স্পিনারদের। তিনি আরও জানান, পিচে অতিমাত্রায় এবং অসমান বাউন্স ছিল গোটা ম্যাচ জুড়ে। ব্রডের রিপোর্টেই তিন ডিমেরিট পয়েন্ট জমা হয় ইন্দোরের খাতায়। আগামী পাঁচ বছর এই ডিমেরিট পয়েন্ট সক্রিয় থাকবে। এই সময়ের মধ্যে আরও দুই ডিমেরিট পয়েন্ট জমা হলে আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় ১২ মাসের জন্য হোলকার স্টেডিয়ামে কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা যাবে না।
আইসিসির নিয়মে পিচ রেটিং ছয় রকমের হয়। খুব ভালো, ভালো, মাঝারি, মাঝারির নীচে, খারাপ এবং আনফিট (Very Good, Good, Average, Below Average, Poor, Unfit)। শেষ তিন রকম পিচের ক্ষেত্রে ডিমেরিট পয়েন্ট প্রযোজ্য। সাধারণত আইসিসির ডিমেরিট পয়েন্ট নিয়ে বিরোধিতা করে না দেশীয় বোর্ডগুলো। তবে একেবারেই করে না এমনও নয়। গত ডিসেম্বরে রাওয়ালপিন্ডির (Rawalpindi) পিচকে মাঝারিমানের নীচে ঘোষণা করে এক ডিমেরিট পয়েন্ট দিয়েছিল আইসিসি। পিসিবির (PCB) তরফে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সেই সিদ্ধান্ত পাল্টানো হয়। ভারতেরও চ্যালেঞ্জ করার যুক্তি রয়েছে। তৃতীয় টেস্ট হওয়ার কথা ছিল ধরমশালায় (Dharamshala)। কিন্তু বিসিসিআইয়ের পরীক্ষক দল জানায়, ওই মাঠের আউটফিল্ড আন্তর্জাতিক ম্যাচের যোগ্য নয়।১৩ ফেব্রুয়ারি ম্যাচ ইন্দোরে ম্যাচ সরানোর ঘোষণা করে বিসিসিআই। ম্যাচ ছিল ১ মার্চ থেকে, কাজেই প্রস্তুতির জন্য মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন সময় পেয়েছে দুই সপ্তাহের মতো। এই যুক্তির জোরেই ডিমেরিট পয়েন্ট থেকে মুক্তি পেতে পারে ইন্দোর।