Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeচতুর্থ স্তম্ভচতুর্থ স্তম্ভ (Fourth Pillar) | ২০২৪ এ সংখ্যালঘু মুসলমান ভোট কোন দিকে?

চতুর্থ স্তম্ভ (Fourth Pillar) | ২০২৪ এ সংখ্যালঘু মুসলমান ভোট কোন দিকে?

Follow Us :

২৫ নভেম্বর কোনও দোকানে কোনও ধরণের মাংস বিক্রি করা যাবে না, সার্কুলার ছিল উত্তর প্রদেশের বিজেপি সরকারের। উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, হিমাচল, উত্তরাখন্ড, মধ্যপ্রদেশ জুড়ে নবরাত্রির সময়ে আমিষ রেস্তঁরা খোলা থাকলে তা ভাঙা হবে বলে জানিয়েছিল বজরং দল, কেউ প্রতিবাদ করেনি, বন্ধই ছিল, এখন এটাই রেওয়াজ। কটা গুন্ডা হুমকি দেবে, মানুষ ভয় পেয়ে তার খাওয়া দাওয়া বদলাবে, দিল্লির বাঙালিরা নবরাত্রীতে মাংস খেতে পারবেন না, যাঁদের আশৈশব জীবন কেটেছে নবমীতে পাঁঠার ঝোল খেয়ে।  আবার শ্রাবণ মাসেও বন্ধ থাকবে, পবিত্র কুঁইয়ার যাত্রার সময়। দেশের সংসদে গেরুয়াধারীরা আছেন, সংসারের মায়া কাটিয়ে যাঁরা সন্ন্যাসী হলে তাঁরা রাজনীতির মায়া কাটাতে পারছেন না। উত্তর প্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ তৈরি হচ্ছেন আগামীদিনে দেশের হাল ধরার জন্য, খুল্লম খুল্লা, কোনও রাখ ঢাক নেই। রাজস্থানে দুই কেন্দ্রে সবথেকে বেশি ভোট পড়েছিল, একটা পূর্ব রাজস্থানের তিজারা আর পশ্চিম রাজস্থানের পোকরান। এই দুই কেন্দ্রেই বিজেপির প্রার্থী দুই মহন্ত, তিজারা আসনে বাবা বালক নাথ আর পোকরানে মহন্ত প্রতাপপুরি, দুজনেই জিতেছেন, বিরাট ব্যবধানেই জিতেছেন।

বাবা বালকনাথ তো প্রায় আদিত্য যোগীর কার্বন কপি, সেই তীব্র মুসলমান বিদ্বেষ, তীব্র ঘৃণা, কথায় কথায় বুলডোজার চালানোর হুমকি, এনকাউন্টারের হুমকি, এই দুই কেন্দ্রেই আদিত্য যোগী এসেছিলেন প্রচারে। তার আগেই একই প্রচার কর্ণাটকে করেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে, বজরঙ্গবলীর নাম করে ইভিএম বাটন টিপতে বলেছিলেন, রাজস্থানে কানহাইয়ালাল এর হত্যাকারীদের ফাঁসি দেবার জন্য বাটন টিপতে বলেছিলেন, জুনেইদ আর নাসিরের কথা ভুলেই গিয়েছিলেন, ওসব নাম মুখে আনাও পাপ, মধ্য প্রদেশেও একই হিন্দুত্বের প্রচার করেছেন, তেলেঙ্গানাতে গিয়ে বলেছিলেন হায়দ্রাবাদের নাম বদলে ভাগ্যনগর করা উচিত। দিল্লির রাস্তার নাম বদলানো হয়েছে, এলাহাবাদ স্টেশনের নাম বদলানো হয়েছে, বাবরি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির তৈরি হয়েছে, তাজ মহলের নাম বদলানোর দাবি তোলা হচ্ছে। এ কোনও বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়, এক পরিকল্পিত ছক মেনেই এগোচ্ছে আর এস এস – বিজেপি। আজ নয় স্বাধীনতার আগে থেকেই তাদের এটাই লক্ষ্য, এটাই পরিকল্পনা। যে সময়ে সারা দেশ জুড়ে মানুষ বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন আদর্শকে সামনে রেখে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন, কমিউনিস্টরা তাদের মত করে, ভগত সিং সোশ্যালিজমের কথা বলছেন, গান্ধিজী সত্যাগ্রহের কথা বলছেন, কিন্তু লড়ছেন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। ঠিক তখন আর এস এস – হিন্দু মহাসভা ব্রিটিশদের সাহায্য করছে, তাদের লক্ষ্য হিন্দুরাষ্ট্র আর শত্রু মুসলমান, ইসলাম। দেশ স্বাধীন হয়েছে, দেশের অসংখ্য সমস্যা, দারিদ্র, বেকারত্ব, শিল্প গড়ে তুলতে হবে, কৃষিতে আরও উৎপাদন চাই। ওনাদের লক্ষ্য একটাই, সেই মুসলমান। আর আজকে যখন সারা দেশে দারিদ্র বাড়ছে, বৈষম্য বাড়ছে, বেকারত্ব রেকর্ড করেছে, মূল্যবৃদ্ধির ফলে নাজেহাল মানুষ, তখন সেই কল্পিত শত্রু মুসলমান, ইসলাম কে সামনে রেখে বিজেপি আর এস এস দেশের ক্ষমতা দখলে রাখতে চায়। অন্য কোনও লক্ষ্য নেই।

কাশ্মীর সমস্যার সমাধান তারা চায় না, তারা কাশ্মীরকে ভেঙে দু টুকরো করে দেশের মানুষের কাছে নিজেদেরকে তীব্র মুসলমান বিরোধী হিসেবে দাঁড় করাতে চায়। সি এ এ আর এন আর সি ও সেই একই উদ্দেশ্যে, ওনারাও জানেন দেশের ১৪/১৫% মুসলমান মানুষজনকে দেশ থেকে বার করা সম্ভব নয়, কিন্তু তাদের আতঙ্কের মধ্যে রেখে, তাদেরকে ভয় দেখিয়ে হিন্দু মানুষজনের কাছে নিজেদের গ্রহণ যোগ্যতা বারাতে চায় বিজেপি। এই যে নাম পরিবর্তন, কী হবে এতে? এলাহাবাদের নাম শ্রী রাম রাখলেও কি সেখানের মানুষ, প্রত্যেক মানুষ খেতে পরতে পারবেন? বিজেপি ও এ প্রশ্নের উত্তর জানে, কিন্তু এগুলো করছে হিন্দু ভোটের মেরুকরণের জন্য। তাদের ফরমুলা খুব সোজা, ৭৪% হিন্দু ভোটের ৭৫/৮০% তাদের চাই, ধর্মের ভিত্তিতে সেই মানুষেরা বিজেপিকে সমর্থন করলে ক্ষমতার পাকাপাকি দখল নেবে বিজেপি, তারা হিন্দু রাষ্ট্রের পথে এগোবে, এটাই তো পরিকল্পনা। হিটলারের কথা মনে পড়বেই, জার্মান ক্যাথলিক খ্রিস্টানের ৮০% তাঁর সমর্থনে, তিনি দেশের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছেন নাস্তিক কমিউনিস্ট আর ইহুদিদের, তাদের খুন করা হচ্ছে, সাধারণ জার্মান মানুষজন দু হাত তুলে সমর্থন করছেন ফাসিস্ত নাজি শাসনের মাথায় বসে থাকা হিটলারকে। কিন্তু এদেশে সমস্যা দুটো, এদেশের হিন্দুরা হাজারো গোষ্ঠিতে বিভক্ত, তাদের চিন্তা ভাবনা, আচার আচরণ আলাদা, তাঁরা ক্যাথলিক খ্রিস্টান দের মত মনোলিথিক, একধরণের আচরণ করেন না। শাক্ত আছেন শৈব আছেন আবার বৈষ্ণবও আছেন, আছেন হাজার হাজার প্রতিবাদী গুরুদের শিষ্য সমর্থকরা, আছেন বিভিন্ন গোষ্ঠিতে বিভক্ত আদিবাসীরা, আছেন শিখ মানুষজন, আছেন ভগবানের অস্তিত্বই স্বীকার করেন না তেমন বৌদ্ধ, জৈন ধর্মের মানুষ। কাজেই এই পুরো জনসংখ্যাকে এক ব্রাকেটে ফেলে হিন্দু বলে দিলেও ঐ ৭৪/৭৫ % মানুষের ৫০% এর সমর্থন যোগাতেও বহু ঘাম ঝরেছে, মানে দেশের ৩৬/৩৭% ভোট সিকিওর করতে পেরেছে বিজেপি, তার ওপরে উঠতে পারছে না। কাজেই জনসভা থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রীকেই বিষ ছরানোর কাজে নেমে পড়তে হয়েছে, উনি মঞ্চ থেকেই লুঙ্গি টুপি দেখেই মুসলমান চিহ্নিত করতে পারেন, হিমালয়ের গুহায় দেড়শো ক্যামেরার সামনে একাগ্র চিত্তে ধ্যান করতে পারেন, ৪৮টা অন লাইন ক্যামেরা নিয়ে বেনারসের গঙ্গা জলে ডুব দিতে পারে, শিবের মাথায় দুধ ঢালতে পারেন আর এসব করে আসলে সেই হিন্দু ভোট মেরুকরণের দায়িত্ব এখন তাঁর, সেই কর্মসূচী মেনেই হায়দ্রাবাদের নাম ভাগ্যনগর করার কথা তিনি বলেছিলেন, এবং এবারে মাছ মাংস খাওয়া যে পাপ, যারা খায় তারা যে পাপী, সেই কথা বললেন, বুক ঠুকেই বললেন এবং তিনি বলার পরেই বাকি শেয়ালের দল মাঠে, তাঁরা বলছেন খান না, ছবি দিতে হবে কেন? কেন ভাই একি গোপন কম্ম? আমি মাছ খাবো মাংস খাবো সোশ্যাল মিডিয়াতে বিরিয়ানির রেসিপি চাইবো, মাটন কোর্মার ছবি দেবো, গালোউটি কাবাব খেতে খেতে ওয়াও বলে সেলফি তুলে পোস্ট করবো, দেশ টা তো কারোর বাপের নয়। এবং বোঝাই যাচ্ছে লোকসভার নির্বাচনের প্রচারের অভিমুখ কোনদিকে হবে। কিন্তু এগুলো নতুন কিছুই নয়, আর এস এস – বিজেপির তো এটাই করার কথা, সেটাই তারা করছে।

শুরু থেকেই সব্বাই জানে, বিজেপির দুটো প্রধান অস্ত্র, এক হল কড়া ডোজের হিন্দুত্ব আর দু নম্বর হাতিয়ার জঙ্গী জাতীয়তাবাদ। দুটোরই মহড়া শুরু হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই, এখন নাটকটা স্টেজে চলছে। ২০২৪ এর জন্য। নতুন যেটা সেটা হল রাজ্যে রাজ্যে মুসলমান ভোট কাটুয়াদের জড় করা, তার এক মাস্টার প্ল্যানও রেডি। কিন্তু গোটা কাউ বেল্ট জুড়ে বিজেপির ভরসা আসাউদ্দিন ওয়েইসি, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, ইউ পি, বিহার এ বহু আসনে প্রার্থী দাঁড় করাবে এই দল এবং মুসলমান ভোটের এক অংশ তারা নেবে, ধর্মের নাম করেই নেবে, যার ফলে বিজেপি প্রার্থীদের সুবিধে হবে। এ বাংলায় আসাউদ্দিন ওয়েইসি কে আনার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু বাঙালি মুসলমানদের কাছে আসাউদ্দিনের কোনও আকর্ষণ নেই তাই তাদের প্ল্যান বি এখানে আব্বাস সিদ্দিকি আর নওসাদ সিদ্দিকি। দক্ষিণ বঙ্গে যে যে পকেটে মুসলমানদের ভোট বেশি সেখানে এখন থেকেই এদের কে সক্রিয় করা হয়েছে, যাবতীয় সাহায্যের ব্যবস্থা হয়েছে, মুসলমান ভোটের ৭/৮/১০ শতাংশও যদি কেটে নিতে পারে, তাহলে বিজেপির হিসেব বলছে কম করে ১২/১৪ টা আসন চলে আসবে বিজেপির খাতায়, এটাই ছক। এখানে হিন্দু পোলারাইজেশনের চেষ্টায় খুব একটা লাভ হয় নি কিন্তু যে বিজেপি বিরোধী এককাট্টা মুসলমান ভোটের ওপর ভর করে তৃণমূলের জয়, সেই মুসলমান ভোটকে ভাগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা পাকা, তার জন্য বেশ কিছু আড়কাঠি দিল্লিতে গিয়ে বৈঠক করেছে, তাদের আসন ইত্যাদি বোঝানো হয়েছে, রিসোর্স মানে টাকা পয়সার যোগান রেডি। চিহ্নিত ২৫/২৮ টা আসনে ঝাঁপিয়েছে ভোট কাটুয়াদের দল। এই তথাকথিত ইসলামের মসিহাদের ধারনাও নেই কাদের হয়ে তাঁরা খেলতে নামছেন, কাদের দাবার ঘুটি হয়ে দেশের কতবড় ক্ষতি করতে চলেছেন, মুখে ইসলামের কথা বলে আদতে সংখ্যালঘু ভোট কেটে কোন হিন্দুত্ববাদীদের ওনারা সাহায্য করছেন, হয় সেটা তাঁরা জানেন না, বোঝেন না। আর নাহলে এক বিশাল বিনিময় মূল্যের বদলে এই ভোট কাটার কাজে তারা সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু সমস্যা তো আরও গভীরে, এই অবস্থা তৈরি হল কেন? কীভাবে? দেশ স্বাধীন হল, দেশভাগ হলো। হিন্দু জনসংখ্যার কাছে অপশন ছিল না, মুসলমান দের কাছে ছিল, ছিল কিন্তু তাদের এক বিরাট অংশ ভারতবর্ষেই থেকে গিয়েছিল, তারা পাকিস্থান মেনে নেয় নি। তারা গান্ধি,নেহেরুকেই তাদের নেতা বলে মনে করেছিলেন, জিন্না কে নয়। মজার কথা হল, আবুল কালাম আজাদ, ডঃ জাকির হোসেন, ফকিরুদ্দিন আলি আহমেদ এর মত বড় নেতারা থাকলেও এদেশে থেকে যাওয়া মুসলমানরা, গান্ধী নেহেরুকে তাদের অনেক কাছের নেতা হিসেবেই মনে করেছিলেন, কংগ্রেস কেই তাদের দল হিসেবে মনে করেছিলেন। এবং ৫২ সাল থেকেই মুসলিম ভোট ছিল কংগ্রেসের জন্য বরাদ্দ, ক্রমশঃ এই মুসলিম ভোট হয়ে ওঠে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক, কংগ্রেস চলতে থাকে মুসলমান সম্প্রদায়ের কিছু কাঠমোল্লা, ইমাম দের নির্দেশে। মুসলমান জনসংখ্যার মধ্যে শিক্ষা, তাদের স্বাস্থ, তাদের বাসস্থান নিয়ে কংগ্রেসের খুব বেশি চিন্তা ছিলনা, দুর্ভাগ্যজনকভাবেই, মুসলিম দের মধ্যে একটা পেরিয়ার, একজন রামমোহন, একজন বিদ্যাসাগর এলেন না, যারা এলেনও বা তাদের আম মুসলমানেরা মেনে নিলেন না, অতএব মুসলমান জনসংখ্যা হয়ে উঠল মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক, আর কাঠমোল্লা মৌলবাদি কিছু মানুষ, কিছু ইমামেরা রইলেন ফতোয়া দেবার জন্য, বিনিময়ে রাজানুগ্রহ, নির্বাচনের আগে মুসলমান জনসংখ্যাকে ফতোয়া দেওয়া হত, ব্যস, মোটামুটি ১৫% মুসলমান জনসংখ্যা তা মেনেই ভোট দিতেন। কংগ্রেসই ছিল তাদের ভরসার জায়গা, আর কংগ্রেসের কাছে এই ভোটব্যাঙ্ক ছিল তুরুপের তাস, এ খেলা কমবেশি ৭৪/৭৫ পর্যন্ত চলেছিল।

এরপর নসবন্দি, তুর্কমান গেটে বুলডোজার চালানো, পরপর কিছু ঘটনায় কংগ্রেসের কাছ থেকে সমর্থন তুলেন নেন ইমাম, শাহী ইমামের দল। ঠিক এই সময় থেকে মুসলমান ভোটের ওপর কংগ্রেসের মৌরসিপাট্টার অবসান, সে ভোট চলে যায় জনতা দলের কাছে, মাথায় রাখুন ৭৭ এ ভোটের আগে শাহী ইমামের ফতোয়া। এরপর জনতা সরকার, কিছুদিন পরে মুসলিম ভোট আবার কংগ্রেসের কাছে, তারপরেই ইন্দিরা গান্ধী হত্যা, রাজীব গান্ধীর ক্ষমতায় আসা, শাহ বানু মামলা নিয়ে গড়িমসি, এবং শেষমেষ রামমন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া। বিজেপির উথ্বানের সঙ্গে সঙ্গেই, মুসলিম ভোট চিরকালের জন্যই কংগ্রেসের থেকে দূরে চলে গ্যালো, এবার রামমন্দির, মন্ডল, কমন্ডলের অলক্ষে মুসলিম ভোট আরও জমাট হতে শুরু করল, যত বাড়তে থাকল বিজেপি আর এস এস, ততটাই ঘেটোর মধ্যে ঢুকে যেতে থাকল মুসলমান জনসংখ্যা, এখন তাদের ভোট ইউ পি তে মুলায়মের দিকে, বিহারে লালুর দিকে, বাংলায় বামফ্রন্টের দিকে, পরে তৃণমূলের দিকে, মানে যেখানে বিজেপি বিরোধী অকংগ্রেসি শক্তি আছে তাদের দিকে, যেখানে অকংগ্রেসি শক্তি দুর্বল, যেমন আসাম, যেমন তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, সেখানে অগত্যা কংগ্রেসের দিকে। গুজরাটে মুসলমান ভোট কংগ্রেসেই যায়, এখনও। এবং মজার কথা হল, তাদের ভোট যায় কিন্তু হিন্দু নেতাদের দিকেই। সারা ভারতে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ ছাড়া মুসলমান সম্প্রদায়ের কোনও দল ছিল না, এবং এই আই ইউ এম এল কেরালার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, বাকি সব জায়গায় মুসলিম ভোট যায়, লালুর দিকে, মুলায়মের দিকে, জ্যোতি বসু, পরে মমতা ব্যানার্জির দিকে, জগন রেড্ডির দিকে, কে চন্দ্রশেখর রাও এর দিকে। মোদ্দা কথা যে যেখানে বিজেপি কে আটকাতে পারবে, তাদের কাছে মুঠো ভরা মুসলমান ভোট। এবং এই দল, তাদের নেতারাও ধরেই নিয়েছেন, মুসলমান ভোট তো বাপের সম্পত্তি, সে আর যাবে কোথায়, সে তো রাখাই আছে। ওদিকে বিজেপি র তীব্র মুসলিম বিরোধিতা, আদালতের এক অদ্ভুত রায় এল, মসজিদ ভাঙা অন্যায় কিন্তু জমি রাম জন্মভূমি ন্যাস কেই দেওয়া হল, সারা দেশের সেকুলার নেতারা, ঐ আদালত যা বলেছে তা তো মেনে নিতেই হবে, কিন্তু ইয়ে, ইত্যাদি, প্রভৃতি, হেঁচকি ঢেঁকুর গিলে মেনে নিলেন, মাথায় অঙ্ক ঘুরছে হিন্দু ভোট না চলে যায়, মুসলমান ভোট তো আছেই। ঠিক এই পরিস্থিতিটাই চাইছিল বিজেপি। এই পটভূমিতেই অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলমিন এর উথ্বান, বাংলায় আব্বাস সিদ্দিকি, নওসাদ সিদ্দিকিদের উথ্বান। অর্থাৎ স্বাধীনতার এত বছর পরে মুসলমান জনসংখ্যা, এবার তাদের নিজেদের সম্প্রদায় থেকে নেতা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে, এতদিন তারা দেশের হিন্দু ‘সেকুলার’ নেতাদের ওপর নির্ভর করেছিল, এতদিন তারা অকংগ্রেসি হিন্দু নেতাদের কাছেই ভরসা পেতে চাইছিল, এতদিন পরে তারা কি তাদের নিজেদের সম্প্রদায়ের নেতা কে খুঁজে পেতে চাইছে? কারণ অন্যদিকে বিজেপির তীব্র হিন্দুত্ব, আরও তীব্র মুসলমান বিরোধিতা, দেশের ১৯% মানুষকে এবার মেরুকরণে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, একধারের শ্লোগান হিন্দু খতরে মে হ্যায়, অন্যধারের শ্লোগান মুসলমান খতরে মে হ্যায়, বিজেপি অনেকটাই সফল। ২০২৪ এ বিজেপির এটাই গেমপ্ল্যান।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Politics | পলিটিক্স (30 April, 2024)
17:13
Video thumbnail
বাংলা বলছে (Bangla Bolche) | হিসেব দিইনি, প্রমাণ দিন, শাহকে তোপ মমতার
53:19
Video thumbnail
নারদ নারদ | গঙ্গা ভাঙনে অব্যাহত শাসক-বিরোধী তরজা, জঙ্গিপুরের সভায় কেন্দ্রকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর
16:26
Video thumbnail
সেরা ১০ | শহরে তাপমাত্রার নয়া রেকর্ড, মধ্য কলকাতায় তাপপ্রবাহে মৃত্যু এক যুবকের
16:31
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধে রণহুঙ্কার | সিপিএম এর বড় বন্ধু বিজেপি : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
05:14
Video thumbnail
District Top News | দেখে নিন আজকের জেলার গুরুত্বপূর্ণ
13:02
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধের দামামা | রেভান্না ইস্যুতে কড়া অবস্থান শাহের
11:48
Video thumbnail
Weather | কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৫ মে-র আগে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই
06:33
Video thumbnail
Partha Chatterjee | ইডির মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ হাইকোর্টে
04:45
Video thumbnail
Rajbhaban-Indian Museum | রাজভবন-জাদুঘর-নবান্নে নাশকতার ছক! হুমকি দিয়ে ইমেল, তদন্তে লালবাজার
02:08