অর্ক্য চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ (Bhooter Bhabishyat) ছবির রিকশচালক ‘আত্মারাম’-কে মনে আছে? অভিনেতা উদয় শংকর পালের (Uday Shankar Paul) দুর্দান্ত অভিনয় মুগ্ধ করেছিল দর্শকদের। অভিনয় জীবনের প্রায় পুরোটাই থিয়েটারকে দিয়েছেন উদয় বাবু। সিনেমার পর্দাতে সেভাবে বড় কোনও চরিত্রে তাঁকে দেখা যায়নি ঠিকই কিন্তু ছোট ছোট চরিত্রেই মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। সেই মানুষটাই আজ ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন।
অভিনয়ের নেশায় বিয়ে-সংসার কিছুই করেননি উদয় বাবু। জীবনের লড়াইয়ে একা হয়ে পড়েছিলেন। ইন্ডাস্ট্রির কাউকেই তেমন পাশে পাচ্ছেন না, এমনই অভিযোগ উঠে আসে। অভিনেতার অসুস্থতার খবর প্রথম জানিয়ে পরিচালক অভিজিৎ পাল সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছিলেন, আমার প্রিয় উদয়দা, আমাদের সব্বার প্রিয় আত্মারাম। একজন মারাত্মক চরিত্র অভিনেতা। এত আড্ডা, এত স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাঁটাছেড়া। এত ভাবনা, এত পথ চলা। গত দুদিন আগে জানতে পারা মারণরোগ ক্যানসার (Cancer) তোমাকে থমকে দিয়েছে, লাস্ট স্টেজ।
আরও পড়ুন: অটোগ্রাফ নিয়ে অভিনেত্রীকেই ফাঁদে ফেলল প্রতারক!
পরিচালক অভিজিৎ পাল (Abhijit Paul) কলকাতা টিভিকে জানিয়েছেন, দিদির সঙ্গেই থাকেন অকৃতদার উদয়বাবু। কিছুদিন আগে তাঁর দিদিরও পা ভেঙেছে। বিগত কয়েকমাস ধরেই নিয়মিত কাশছিলেন অভিনেতা। গত ডিসেম্বর থেকে কাশির সঙ্গে রক্ত বেরতে শুরু করে। প্রথমে ডাক্তার দেখাতে চাননি, জোর করেই ডাক্তার দেখানো হয়। পরীক্ষায় জানা যায় ফুসফুসের ক্যানসার। কিন্তু চিকিৎসার বিপুল খরচ বহন করার ক্ষমতা নেই উদয়বাবুর। তাই চিকিৎসার বিষয়ে গিল্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অভিজিৎ। অবশেষে সোমবার রাতে আর্টিস্ট ফোরামের সহযোগিতায় বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বর্ষীয়ান অভিনেতাকে। বাঙুর হাসপাতাল (পুরাতন বিল্ডিং) ৩নং মেডিসিন ওয়ার্ড, ২১নং বেড-এ উদয় বাবু জায়গা পেয়েছেন। আর্টিস্ট ফোরাম বিশেষ করে পরিচালক অনীক দত্ত, অভিনেতা দেবদূত ঘোষ (Debdut Ghosh), শৈবাল মিত্র, সুমিত সমাদ্দাররা না থাকলে এটা হত না বলেই উল্লেখ করেছেন অভিজিৎ।
কলকাতা টিভির পক্ষ থেকে পরিচালক অনীক দত্তর (Anik Dutta) সঙ্গে যোগাযোগ করতে উনি জানিয়েছেন, “দেবদূতের (অভিনেতা দেবদূত ঘোষ) চেষ্টায় বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আপাতত চিকিৎসা শুরু হয়েছে। তবে আমি চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওঁকে (উদয়বাবুকে) নিয়ে যাওয়া যায়, কারণ আমি যতটা জানি ওখানের অঙ্কোলজি ডিপার্টমেন্টটা বেশি ভালো।”
চিকিৎসার খরচ প্রসঙ্গে অনীক বাবু জানিয়েছেন, “ফান্ড কালেক্ট করা হলে ওঁর (উদয়বাবুর) হয়ে সেই ফান্ড দেখাশোনা কে করবে সেই নিয়ে সমস্যা আছে কারণ ওনার পরিবারে সেইভাবে কেউই নেই। ফলত সেটা খুব সমস্যার। তবু আমরা চেষ্টা করছি। সুমিত (অভিনেতা সুমিত সমাদ্দার) পুরো বিষয়টা দেখছে।”
আপনার একাধিক ছবিতে উদয়বাবু কাজ করেছেন, উনার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
খুবই ভালো মানুষ। মিশুকে, নতুন কোনও কাজ শুরু হলেই আমাকে বলতো- আমাকে রাখছ তো? আমি চেষ্টা করতাম চরিত্র দেওয়ার। ছোট চরিত্র হলেও অভিনয়টা খুব ভালো করত। আমার শেষ ছবিতেও কাজ করেছে, এখনও ডাবিং হয়নি। ভালো শিল্পী।
আরও খবর দেখুন