Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeCurrent NewsAmartya Sen: অমর্ত্য সেন, এন ভি রমণার আশঙ্কা এবং আমরা

Amartya Sen: অমর্ত্য সেন, এন ভি রমণার আশঙ্কা এবং আমরা

Follow Us :

কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ‘দেশে ভাঙনতন্ত্র চলছে’। কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তিনি বললেন, ‘এই ভাগাভাগী নিছক ভারত-পাকিস্তানে সীমারেখায় আটকে নেই, জাতি হিসেবেই বিভক্ত করা হচ্ছে আমাদের। এই সঙ্কটে দেশের বিচার বিভাগ এক বিরাট অবলম্বন। এত বড় বিপদে দেশের বিচার ব্যবস্থা হয়তো কিছু করতে পারবে’। তিনি বললেন, ‘দেশের গণতন্ত্রের মধ্যে তিনটি স্তম্ভের মধ্যে ভারসাম্যের অভাব দেখা যাচ্ছে। আমলাদের আইনসভার সদস্যরা নিয়ন্ত্রণ করছেন। যে কোনও মূল্যে ক্ষমতা দখলের জন্য তাঁরা ভোট রাজনীতিতে ব্যস্ত’।

এই যে অমর্ত্য সেন এই কথা বললেন, তার প্রতিক্রিয়া দেখা গেল হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে। বেশ খারাপ ভাষাতেই দক্ষিণপন্থীরা তাঁকে আক্রমণ করলেন। কিন্তু তার রেশ না ফুরোতেই দেখা গেল প্রায় কাছাকাছি কথা বলছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা। কী বলছেন? তিনি বলছেন, ‘আমরা স্বাধীনতার ৭৫ আর প্রজাতন্ত্রের ৭২ বছর উদযাপন করছি। আমাদের সংবিধানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন ভূমিকা এবং বিভিন্ন দায়িত্ব দিয়েছে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, সেগুলি সম্পর্কে আমরা সচেতন নই’। এই ‘আমরা’ বলতে প্রধান বিচারপতি কী বলতে চাইছেন? তিনি কিন্তু এই আমরার মধ্যে প্রধানত রাখছেন শাসকদল এবং বিরোধীদলকে। অবশ্যই তার মধ্যে নাগরিকরাও পড়েন। কারণ এর পরই প্রধান বিচারপতি বলছেন, ‘শাসকদল আশা করে তাদের সব কজে শিল মোহর দেবে শীর্ষ আদালত, আর বিরোধীরা মনে করেন তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে সহায়তা দেবে আদালত। দেশবাসীর মধ্যেও গণতন্ত্র এবং সংবিধান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। ‘এর পর প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘দেশবাসীর মধ্যে অজ্ঞতা বাড়তে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, যেসব শক্তি ভারতীয় গণতন্ত্রের একমাত্র নিরপেক্ষ অঙ্গ বিচার বিভাগকে দমিয়ে রাখতে চায়, সেই সব শক্তির সুবিধা হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ একমাত্র সংবিধানের প্রতি দায় বদ্ধ। সংবিধানে নির্দেশিত ভারসাম্য কার্যকর করতে গেলে দেশে সংবিধান সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে, সচেতনতা বাড়াতে হবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা সম্পর্কে।’

উপরের কথা গুলো সানফ্রানসিসকোয় গিয়ে সেখানকার ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের এক সভায় বলছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি স্পষ্টই মানুষকে গণতন্ত্র রক্ষায় সচেতন হতে বলছেন। বিষয়টা শুধু রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছার উপর ছেড়ে দিলে বিপদ ঘটতে পারে, সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছেন তিনি। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির কথা বলতে গিয়ে তিনি কী বলতে চাইছেন? তিনি বলছেন, ব্যক্তি আসবেন চলেও যাবেন, গণতন্ত্রের নিয়মে, কিন্তু প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেলে গণতন্ত্রের স্থায়ী ক্ষতি। তা কি হচ্ছে?
গত বছর ঠিক এই জুলাই মাসেই প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা বলেছিলেন, নাগরিকদের কাজ শুধু ভোট দেওয়া নয়। শুধু ভোট দিলেই গণতন্ত্র বাঁচে না।

বিপদটা তাহলে কোথায়? ইতিমধ্যেই, সারা পৃথিবীর গণতন্ত্র নিয়ে যারা গবেষণা করে, ফ্রান্সের সেই ফ্রিডম হাউস, ভারতকে ‘ইলেক্টেড অটোক্র্যাসি’ বলে মন্তব্য করেছে। অর্থাৎ ভোট হচ্ছে, কিন্তু গণতন্ত্র প্রসারিত হচ্ছে না, সঙ্কুচিত হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার অবশ্য ফ্রিডম হাউসের এই মন্তব্য মানতে নারাজ। সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও প্রধান বিচারপতিকে বলতে শোনা গেল, শুধু ভোট দেওয়াই গণতন্তরের পক্ষে যথেষ্ট নয়।

আরও পড়ুন Nupur Sharma: লুক আউট নোটিসের পর ফের নুপুর শর্মাকে তলব কলকাতা পুলিসের

ইলেক্টোরাল অটোক্র্যাসি বা নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম, ‘অ্যানড্রিজ শেডলার’ তাঁর বই ‘দ্য পলিটিক্স অফ আনসার্টেইনটি: সাসটেইনিং অ্যান্ড সাবভার্টিং ইলেক্টোরাল অথারিটারিয়ানইজম’-এ লিখেছেন, নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র কাজ করে বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং নির্বাচন ভিত্তিক গণতন্ত্রের পিছনে মুখ লুকিয়ে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং কোল্ড ওয়ার বা ঠান্ডা যুদ্ধের অবসানের পর পৃথিবীতে এই ধরনের সরকারের আবির্ভাবের শুরু। এই সব দেশে নিয়ম করে নির্বাচন সংগঠিত হয়। কিন্তু উদারনীতি এবং গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানও সেখানে বজায় রাখা হয় না। তিনি ২০১৩ সালে যখন এই বই লিখছেন, তখন এই তালিকায় যে দেশগুলির নাম করেছিলেন, সেখানে ছিল, আজারবাইজান, জিমবাবোয়ে, সিঙ্গাপুর, রাশিয়া, বেলারুশ, ক্যামারুন। এই সব দেশের চরিত্র সম্পর্কে বলতে গিয়ে শেডলার বলেছেন, এখানে ভোটে জিততে শাসকদল নির্বাচনকে প্রভাবিত করে, কখনও অন্য দলকে নিষিদ্ধ করে, অন্যদলের প্রার্থিদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মামলা করে, স্বাধীন মনোভাবাপন্ন সাংবাদদের নানা ভাবে হেনস্তা করা হয়, কখনও প্রয়োজনে তারা নির্বাচনে কারচুপিও করে।

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠাকে কব্জা করার কথা কিন্তু ভারতে বিরোধীরা মোদী জমানার শুরু থেকেই বলছেন। ক্রিস্তাফ জাফরেলো তাঁর ‘মোদী’জ ইন্ডিয়া, হিন্দু ন্যাশনালিজম অ্যান্ড দ্য রাইজ অফ এথনিক ডেমোক্র্যাসি’-বইএ ‘ডিইনস্টিটিউশনালাইজিং ইন্ডিয়া’ প্রবন্ধে লিখেছেন, কী ভাবে বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সক্রিয়তা কমিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়েছে মোদী জমানায়। যেমন তিনি লিখছেন, সেন্ট্রাল ইনফরমেশন কমিশন (সিআইসি) হল আরটিআই-এর সর্বোচ্চ ‘আপিল বডি’। এই সিআইসি হল প্রশাসনের অস্বচ্ছতা নিয়ে নাগরিকদের প্রশ্ন করার (রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট) সব থেকেগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। সেই সিআইসিতে অগস্ট ২০১৪তে চেয়ারম্যানের অবসর গ্রহণের পর টানা এক বছর ওই পদ ফাঁকা রেখে দেওয়া হল। গুরুত্বপূর্ণ শূন্য পদের নিয়োগও একই ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল দীর্ঘ সময়। ওই সব পদ পূরণের জন্য সুপ্রিম কোর্টকে নির্দেশ দিতে হয়েছিল। তার পরেও এই বই লেখা পর্যন্ত বেশ কিছু পদ শূন্য রাখা হয়েছিল যাতে বোঝা যায় সিআইসি সম্পর্কে সরকারের অনিহা। ক্রিস্তাফ জাফরেলো লিখছেন ২০১৯-এর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সিআইসি-তে জমে থাকা আপিলের সংখ্যা ছিল ২৮, ৪৪২টি। এই ধরনের বেশ কয়েকটি দৃষ্টান্ত তিনি দিয়েছেন।
ক্রিস্তাফ জাফরেলো কথাগুলোর সঙ্গে সানফ্রানসিসকোয় প্রধান বিচারপতির সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে করা মন্তব্যের মধ্যে কেউ মিল খুঁজে পেতেই পারেন।

আরও পড়ুন Spiritual Leader Dead: নাসিকে গুলিতে হত আফগানিস্তানের ধর্মীয় নেতা

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধে রণহুঙ্কার | পিএম কেয়ারের টাকা কোথায় গেল? প্রশ্ন তুললেন মমতা
05:14
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধের দামামা | সন্দেশখালি নিয়ে দিল্লিতে তোপ সাগরিকার
12:48
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধে মুখোমুখি | তৃণমূলের আমলে একাধিক দুর্নীতি: ভাস্কর সরকার
06:55
Video thumbnail
Jelar Saradin | দেখে নিন জেলার সারাদিনের গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি...
12:41
Video thumbnail
৪ টেয় চারদিক | রাজভবনে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, পুলিশি তদন্তের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন রাজ্যপালের
34:56
Video thumbnail
Sandeshkhali | অবিলম্বে গঙ্গাধর কয়ালকে গ্রেফতারের দাবি কুণাল ঘোষের
04:52
Video thumbnail
Sandeshkhali Viral Video | গঙ্গাধরকে ফাঁসানো হয়েছে, দাবি বিজেপি কর্মীদের
10:28
Video thumbnail
Mitali Bagh | আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী মিতালি বাগের গাড়িতে ভাঙচুর, অভিযুক্ত বিজেপি বলছে, জনরোষ!
08:16
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে কৃষ্ণনগরের কালীগঞ্জে অভিষেকের প্রচার
21:17
Video thumbnail
আমার শহর (Amar Sahar) | গরমে হিট শশা মাখা! ভিড় জমাচ্ছেন পথচলতি মানুষ
02:15