কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: কবি নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন ‘মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান’। কবির সেই কথার বাস্তবে প্রতিফলন দেখা গেল রানিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। সহায়সম্বলহীন এক অসহায় হিন্দুর শেষকৃত্য করলেন একজন মুসলিম। শুধু শেষকৃত্য নয়। হিন্দু রীতি রিওয়াজ মেনে মুড়িয়েছেন মাথাও।
হুগলি জেলার মগরা এলাকার বাসিন্দা যোগেন্দ্র প্রসাদ। দীর্ঘদিন ধরে রানীগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে কর্মরত ছিলেন। কোনও আত্মীয়স্বজন না থাকার ফলে রানীগঞ্জের বাসস্ট্যান্ডের শ্রমিক বিশ্রামাগারেই দিন গুজরান করতেন ৫৫ বছরের যোগেন্দ্র প্রসাদ। ওই শ্রমিক বিশ্রামাগারেই আচমকাই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিছুদিন অসুস্থ থাকার পর চলতি মাসের ১০ তারিখে মারা যান যোগেন্দ্র।
এরপর এলাকার মানুষ ভাবতে থাকেন কী করে সৎকার হবে যোগেন্দ্রর। সেই সময়ই এগিয়ে আসেন মহম্মদ শামসুদ্দিন নামে এক মুসলিম ব্যক্তি। হিন্দু ধর্ম মেনে যোগেন্দ্রর মুখাগ্নিও করেন শামসুদ্দিন। তারপর হিন্দু রীতি মেনে ১৩ দিন ধরে অসূচ পালন করে, খৌরকর্ম ও মস্তক মুন্ডন করেন। এমনকি যোগেন্দ্রর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানেরও আয়োজন করেন শামসুদ্দিন।
আরও পড়ুন- Weather Update: ৪০ ছুঁইছুঁই কলকাতা, এখনই বৃষ্টির আশা দিচ্ছে না হাওয়া অফিস
রবিবার স্থানীয় মানুষদের সহযোগিতা নিয়ে শ্রাদ্ধে দেদার ভুরি ভোজের আয়োজন করা হয় । পাত পেড়ে ভোজন করতে দেখা যায় স্থানীয়দের। ভাত, ডাল, সবজি, মাছ, মিষ্টি সহ একাধিক পদের এলাহি আয়োজনও করা হয়েছিল। গোটা দেশে যখন ধর্ম নিয়ে হানাহানি করছে ঠিক তখন শামসুদ্দিনের এই ভাবনা রাজ্যের সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে সম্প্রীতির বার্তা দেবে বলেই মনে করছে বিশিষ্ট মহল।