কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: নিকারাগুয়ার ড্যানিয়েল ওর্তেগা সরকারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত মাতাগাল্পার বিশপ রোলান্ডো আলভারেজকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে একই সঙ্গে আটকে রাখা হয়েছিল পাঁচ যাজক, এক ধর্মীয় আলোচক এবং এক ক্যামেরাম্যানকে। ওই ক্যামেরাম্যান একটি ধর্মীয় টেলিভিশন চ্যানেলের হয়ে কাজ করতেন। মাতাগাল্পায় একটি চার্চে তাঁদের বন্দি করা হয়েছিল। অভিযোগ, রীতিমতো তাণ্ডব চালানো হয়েছে তাঁদের উপর। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ক্যামেরাম্যান এবং যাজকদের শুক্রবার মানাগুয়ার এক জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, গত কয়েক মাসে নিকারাগুয়া সরকার অন্তত তিনজন যাজককে আটক করেছে, অনেককে আবার নির্বাসনে পাঠানো হয়।
নিকারাগুয়া সরকারের এই অমানবিক আচরণে ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রপুঞ্জ। রাষ্ট্রপুঞ্জের জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতারেস বলেন, এই ঘটনায় আমি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তবে পোপ ফ্রান্সিস এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। শুক্রবার থেকে নতুন করে অভিযান শুরু করেছে নিকারাগুয়া সরকার। এই অভিযান ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
২০১৮ সালে ওর্তেগা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ক্যাথলিক চার্চ এবং ওর্তেগা সরকারের সম্পর্ক অত্যন্ত তিক্ত হয়ে পড়ে। সেই সময় চার্চ সরকার এবং প্রতিবাদীদের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকা নিয়েছিল। ওই আন্দোলন এতটাই তীব্র হয়ে পড়েছিল, যার ফলে ৩৬০ জনের মৃত্যু হয়। ক্যাথলিক চার্চ তখন এই গণহত্যার ন্যায়বিচার চেয়েছিল।
এই প্রতিবাদে মুখ্য ভূমিকা নেন বিশপ আলভারেজ। চলতি মাসের গোড়ায় আলভারেজ ঘনিষ্ঠ সাতটি রেডিয়ো স্টেশন বন্ধ করে দেয়। কার্ডিনাল লেপোলডো ব্রেনেস আলভারেজকে দেখতে তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বিশপের শরীর ভেঙে গিয়েছে। তবে তাঁর মনোবল অটুট রয়েছে। নিকারাগুয়ার নির্বাসিত বিশপ সিলভিও বায়েজ টুইটে বলেন, এই অভিযানের নিন্দার কোনও ভাষা নেই। সরকারের স্বৈরতন্ত্রের মুখোশ আরও একবার তার হিংস্র দাঁত নখ বার করল। ৫৫ বছর বয়সি আলভারেজের ভাইঝি জানান, শুক্রবার মানাগুয়ায় বিশপের পৈতৃক বাড়িতেও পুলিশ হামলা করে।