আমাদের পৃথিবী এক সুরক্ষা আবরণী দিয়ে আবৃত। এই আবরণীর নাম ওজোন স্তর (Ozone Layer)। সূর্য থেকে নির্গত ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি (Ultraviolet Ray), গামা রশ্মি (Gama Ray), তেজস্ক্রিয়তার হাত রক্ষা করে ওজোন গ্যাসের স্তর। বাড়তে থাকা কল-কারখানা, অরণ্যচ্ছেদ এবং সর্বোপরি মানুষের অপদার্থতার কারণ্যে প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এই সুরক্ষা আবরণী। রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ওজোন স্তর ক্রমে সেরে উঠছে, আগামী চার দশকের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে তা।
বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, ১৯৮৭ সালে স্বাক্ষরিত মন্ট্রিয়ল প্রোটোকল (Montreal Protocol) এখনও পর্যন্ত মেনে চলা হচ্ছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, ওজোন স্তরের ক্ষতি করে এমন যে কোনও বস্তুর উৎপাদন এবং সেবন নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন: Saltlake Fire: সল্টলেক এফডি মার্কেটে বিধ্বংসী আগুন, ঘটনাস্থলে ৭টি ইঞ্জিন
গত শতাব্দীর সাতের দশকে পাতলা হতে শুরু করে পৃথিবীর সুরক্ষা আবরণী। স্প্রে ক্যান, রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনার ইত্যাদি থেকে নির্গত ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) ওজোনের পাতলা হওয়ার প্রধান কারণ। এরপর ১৯৮৫ সালে বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দেন, ওজোন স্তরে ফুটো হয়ে গিয়েছে। দু’ বছর পর ৪৬টি দেশ মিলিতভাবে সুরক্ষা আবরণীকে সারিয়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। ক্ষতিকর ক্লোরোফ্লুরোকার্বন যাতে আর না উৎপন্ন হয়, নজর দেওয়া হয় সেদিকে। এই মর্মে স্বাক্ষরিত হয় মন্ট্রিয়ল প্রোটোকল।
রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) রিপোর্টে বলা হয়েছে, যেমনটা আশা করা হয়েছিল, সেইভাবেই কাজ করছে প্রোটোকল। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে তবে ২০৪০ সালের মধ্যে ১৯৮০ সালের অবস্থায় ফিরে যাওয়া যাবে। তবে উত্তর মেরু (Arctic) এবং দক্ষিণ মেরুতে (Antarctica) আরেকটু সময় লাগবে। উত্তর মেরুর ওজোন স্তর সেরে উঠবে ২০৪৫ সাল নাগাদ এবং দক্ষিণের ক্ষেত্রে সময় লাগবে ২০৬৬ সাল পর্যন্ত। যদিও রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, দক্ষিণ মেরুর ওজোন স্তরে হওয়া গর্ত ২০০১ সালের পর থেকে আরও চওড়া এবং গভীর হয়েছে।