Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeআজকেAajke | গরম পড়ছে, উত্তেজনা বাড়ছে নির্বাচনের ময়দানে
Aajke

Aajke | গরম পড়ছে, উত্তেজনা বাড়ছে নির্বাচনের ময়দানে

মাথার আর কী দোষ বলুন তো? পারদ চড়ছে সাঁই সাঁই করে

Follow Us :

মাথার আর কী দোষ বলুন তো? পারদ চড়ছে সাঁই সাঁই করে। এতদিন যে গরম পড়ত মরুশহরে তা অনায়াসে দেখা যাচ্ছে আমাদের বাংলার বিভিন্ন জায়গায়। সূর্য আগুনের গোলার মতো আকাশে, পশ্চিমে ডুবে যাওয়ার পরেও হলকা থেকে যাচ্ছে, গভীর রাতে বালতি বালতি জল ঢেলেও শরীরের তাপমান নামানো যাচ্ছে না। এ হল গিয়ে আমাদের মতো আম আদমিদের অবস্থা। আমাদের জীবনে কতটুকুই বা চাহিদা? কতটুকু স্বপ্নই বা আমরা দেখি, বিরাট বাড়ি মানে ৭০০-৮০০ স্কোয়ার ফিটের একটা ফ্ল্যাটবাড়ির স্বপ্ন, একটা ছোট্ট ব্যালকনির স্বপ্ন, পুজোর ছুটিতে বড়জোর ঝাড়গ্রাম বা গরমের ছুটিতে দার্জিলিংয়ে বছরে এসব হয়ে গেলে পরের বছর দিঘা, বকখালিতেই সন্তুষ্ট। খাবার দাবার ঠেলাগাড়ির চাউমিন আর মোগলাই পরোটা। কিন্তু ওই ওনারা জীবনের সবকিছু বাজি লাগিয়ে নেমেছেন সাংসদ হতে, কেবল কি সাংসদ, তাদের কারও কারও ইচ্ছে আগামী নির্বাচনে বাংলার মসনদে বসার, কারও ইচ্ছে এবারেই কমসম করে একটা প্রতিমন্ত্রীর গদিওলা চেয়ার। বিবেক, বুদ্ধি, বোধকে বাজি রেখে এই মরণ খেলাতে যাঁরা নেমেছেন তাঁদের গরমখানার কথা একবারও ভেবেছেন? বিশেষ করে ওই তাঁরা যাঁরা এ দল ছেড়ে সে দলে, সে দল ছেড়ে ও দলে লাক ট্রাই করতে নেমেছেন। ভাবুন না একবার অর্জুন সিংয়ের কথা, পিং পং বলও এর থেকে কম স্পিডে ঘোরে, উনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললেন, দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা মানব, আমি তো দলের সৈনিক। ব্রিগেডের র‍্যাম্পে দেখলেন তাঁর আসনে পার্থ ভৌমিক হাঁটছেন। গাড়িতে চড়েই জানিয়ে দিলেন অনেক হয়েছে আর নয়, ব্যারাকপুরের মানুষের অসম্মান আটকাতেই নাকি উনি প্রার্থী, তো ওনার গরমখানা ভাবুন। যদি জেতেন তো জিতলেন, এতবারের এমএলএ বা এমপি, এবারেও জিতবেন, কিন্তু যদি হেরে যান, ঘটি হারাবে তো। কাজেই মেজাজ হারাচ্ছেন ঘন ঘন। তো এই নির্বাচনী বাজারে কেবল অর্জুন সিং মেজাজ হারাচ্ছেন? না আরও অনেকেই আছেন, আর সবসময়ে মেজাজ হারালে লোকে রেগে চোটপাট করে তাও নয়, বোকার মতো হাসে, কথার খেই থাকে না, এমনও হয়। আর ভোটবাজারে তার ছড়াছড়ি, সেটাই বিষয় আজকে, গরম পড়ছে, উত্তেজনা বাড়ছে নির্বাচনের ময়দানে।

সবচেয়ে বড় স্টেক কার? নিশ্চিতভাবেই শুভেন্দু অধিকারীর। আপনি বলতেই পারেন, কেন? মমতা ব্যানার্জি বা তৃণমূলের নয় কেন? কারণ এটা দিল্লির সরকার তৈরির নির্বাচন, খুব খারাপ হলেও, মানে ওই চোখে চোখ রাখনেওয়ালা টিভির হিসেব মিলে গেলে বিজেপি গোটা তিন চার আসন বেশি পাবে। এটা ২০২৪, এখনও দু’ বছর সময় থাকবে মমতা-অভিষেকের হাতে। কিন্তু শুভেন্দুর?

আরও পড়ুন: Aajke | কমরেড অধীর চৌধুরী, লাল সেলাম

এই নির্বাচনে যদি ফুউউউউউউস হয়ে যায়? যদি ৬-৭-৮ তা আসনে গুটিয়ে যায় বিজেপি দল? তাহলে? দলের মধ্যেই বাকিরা ছিঁড়ে খাবে এই দলবদলু নেতাকে। বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বে বদল নিশ্চিত, কাজেই ওখানে পারদ চড়ছে দ্রুতগতিতে, বিশেষ করে প্রথম দফার তিন আসনের নির্বাচনের পরে আকাশের গায়ে যেন টক টক গন্ধ, যা খুব সুবিধের নয়। কাজেই শুভেন্দুবাবুর পারদ আরও ঊর্ধ্বগামী। তো উনি বলেছেন সপ্তাহের শুরুতেই বোমা ফাটবে। মেদিনীপুরের বোমা ঐতিহ্যের কথা সব্বাই জানেন, কিন্তু কথায় কথায় তা ফাটালে চলে? কী হবে? ওই কালীঘাট কাকুর গলার স্বর ধরে অভিষেককে গ্রেফতার? অসম্ভব, ওই ৫-৬-৭টা আসনের মায়াও কাটাতে হবে। কিন্তু উনি বলে ফেলেছেন, বুধবার থেকেই এই নিয়ে খিল্লি শুরু হবে এবং তিনি আবারও মাথা গরম করে কিছু বলবেন। হাই স্টেক-এর জুয়া খেলার সমস্যা এটাই। আবার ধরুন দেশের সংসদে বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী। এমনিতে তিনি খুব ঠান্ডা মাথার যেমনটা কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন তা কোনওদিনই ছিলেন না। কিন্তু বয়স তো হল, এখনও মাথা গরম করলে চলে, কিন্তু ওই যে গরু হারালে এরকমই হয় মা। তিনি রাস্তায় চড়থাপ্পড় মারছেন, সামনে তাঁর হাঁটুর বয়সি ছেলেপুলে, ফোন করছেন উত্তেজিত হয়ে, আমাকে হেকল করছে, বলছেন ফোনে। আরে বাবা আপনি অধীর চৌধুরী, বহরমপুর কিং, নামের মর্যাদা রাখুন। প্রেস কনফারেন্সে হারবেন না জিতবেন প্রশ্নে মাথা গরম করে চেয়ার ছেড়ে বাইরে গিয়ে গাড়িতে চেপে সোজা বহরমপুর, তখনও ওখানে বসে আছেন বিমান বসু। ওদিকে দেখুন রচনা দিদিমণিকে, তিনি দই খাচ্ছেন, হ্যা হ্যা করে হাসছেন, কী বলছেন নিজেরই জানা নেই, ধোঁওয়া আর শিল্পের তফাত বোঝেন না এমন নয় কিন্তু ওই যে নিজের পড়ন্ত বেলার ক্যারিয়ার স্টেকে রেখে নেমে পড়েছেন মাঠে, মাথার পারদ চড়ছে, এলোমেলো হয়ে পড়ছেন। হিরো হীরণ রান্নাঘরে গিয়ে মাছ ভাজলেন, জগন্নাথ সরকার আবার চান করিয়ে দিলেন একজনকে, সাবান মাখিয়ে দেননি তার বাপের ভাগ্যি। সব মিলিয়ে দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাস জমে ক্ষীর। আমাদের জীবনে কমেডি রিলিফগুলোর জন্য এই সব নেতাদের ধন্যবাদ প্রাপ্য। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম যে নির্বাচনের সময়ে নেতাদের এই যে অদ্ভুত আচরণ, কেউ ধোঁয়াকে শিল্প বলছেন, কেউ আগামিকাল বোমা ফাটবে বলে ঘোষণা দিচ্ছেন, কেউ পথচারীকে চান করিয়ে দিচ্ছেন কেউ রান্নাঘরে ঢুকে মাছ ভাজছেন, কেউ আবার মেজাজ হারিয়ে চড়থাপ্পড় মারছেন। এটা কি তাদের নার্ভাসনেসের জন্য? হেরে যাওয়ার ভয়েই কি তাঁদের এরকম আচরণ? শুনুন তাঁরা কী বলেছেন।

সেই কবে দাদা ঠাকুর তাঁর নির্বাচনী ছড়াতে ভোটারদের বলেছিলেন, আয় ভোটার আয়, মাছ কাটলে মুড়ো দেব গাই দোয়ালে দুধ দেব, উড়কি ধানের মুড়কি দেব, এই তামাশা এখনও চলছে। প্রতিটা নির্বাচনেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের এমন অসংলগ্ন কথাবার্তা আমরা দেখেছি, এই নির্বাচনও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এগুলো নার্ভাস হয়ে ভুল বকা, বাজে বকা। নার্ভাস হয়ে আরও শয়তানিতে নেমে পড়ার উদাহরণও রয়েছে, তা নিয়ে আরেকদিন নিশ্চয়ই আলোচনা করব। আজ এই পর্যন্তই।

RELATED ARTICLES

Most Popular