নয়াদিল্লি: ‘পৃথিবীসেরা কূটনীতিক (Greatest Diplomats) হলেন কৃষ্ণ (Lord Shri Krishna) ও হনুমান (Lord Hanuman)। যদি আমরা হনুমানের দিকে তাকাই, তাহলে দেখা যাবে, হনুমান কূটনীতিরও ঊর্ধ্বে চলে গিয়েছিল। হনুমান তার লক্ষ্য থেকে এগিয়ে গিয়ে সীতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল এবং লঙ্কায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল।’ না, এই কথাগুলো কোনও ভাগবতপাঠ সভায় বলা কোনও ব্রহ্মচারী-সাধুসন্তের অমৃতকথা নয়। দেশের বিদেশমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করের (EAM S Jaishankar) বাণী।
পৌরাণিক সাহিত্য রামায়ণ (Ramayana) ও মহাভারতের (Mahabharata) মতো মহাকাব্য কীভাবে ভারতের আদর্শ কৌশলের রূপরেখা বাতলে দিয়েছে তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একথা বলেন বিদেশমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: Union Budget 2023: চোখ লোকসভা ভোটে, বাজেটে খুব বেশি বেসরকারিকরণের পথে হাঁটবেন না নির্মলা
তাঁর লেখা ইংরেজি বই ‘দি ইন্ডিয়া ওয়ে: স্ট্র্যাটেজিস ফর অ্যান আনসারটেইন ওয়ার্ল্ড’এর (The India Way: Strategies for an Uncertain World) মারাঠি অনুবাদ ‘ভারত মার্গ’এর প্রচারে পুনেতে এক ভাষণে তিনি একথা বলেন। অবশ্যই ভাষণে তিনি হনুমান ও কৃষ্ণকে ভগবান বলে সম্বোধিত করেন। হনুমানের সম্পর্কে বলেন, যদি কূটনৈতিক দৃষ্টিতে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে, কী পরিস্থিতি সে ছিল, তাঁকে কী কাজে পাঠানো হয়েছিল এবং কীভাবে হনুমান তা সম্পন্ন করেছিল। তার বাইরে গিয়েও হনুমান সীতার সঙ্গে দেখা করে এবং লঙ্কা জ্বালিয়ে দেয়। হনুমান বহুমুখী প্রতিভার কূটনীতিক ছিল, মত দেশের শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী জয়শঙ্করের।
কৌশলগত ধৈর্যের উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, কৃষ্ণকেই দেখুন না। কতবার তিনি শিশুপালকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতিমতো শিশুপালের ১০০ অপরাধ ক্ষমা করেছিলেন কৃষ্ণ। ১০১ তম অপরাধের পর শিশুপাল বধ করেছিলেন তিনি। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরব এবং পাণ্ডবদের মুখোমুখি হওয়ার ঘটনাকে তিনি বহুত্ববাদী ভারতের চিত্র বলে উল্লেখ করেন।
স্বাধীনতার পর থেকে ভারত কৌশলগত স্বশাসনকে গ্রহণ করেছে। তা সে ঠান্ডাযুদ্ধের সময় হোক, কিংবা বহুজাতির ক্ষমতায়নের সময় হোক। কূটনীতিতে কৌশলগত স্বশাসন বলতে কারও সঙ্গে আঁতাত যেমন বোঝায় না, তেমনই লুকিয়ে থাকাও বোঝায় না। কর্ণ এবং দুর্যোধনের বন্ধুত্বকে উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, অসতের সঙ্গে বন্ধুত্ব মানুষকে ধ্বংসের পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কূটনৈতিক স্তরেও তাই বন্ধুত্ব ও বন্ধুত্বের অযোগ্যকে বাছাই করার দৃষ্টান্তও দেন বিদেশমন্ত্রী।