নয়াদিল্লি: এখনই বাতিল নয় এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশের উপর মঙ্গলবার অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট । এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Corruption) হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাকে চ্যালে়ঞ্জ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন সুপ্রিম কোর্টে যায়। হাইকোর্ট প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল ছাড়াও বাড়তি পদ সৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মীদের সিবিআই তদন্তের আওতায় আনার কথা বলেছিল। দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্ত চলবে বলেও জানিয়েছিল। শীর্ষ আদালত শুধু সিবিআই তদন্ত বহাল থাকার নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি। বাকি সব ক্ষেত্রেই হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ভোটপর্ব চলাকালীন সময়ে এই রায় রাজ্য সরকারকে বেশ খানিকটা স্বস্তি দিল। পরবর্তী শুনানি ১৬ জুলাই। ততদিন পর্যন্ত যোগ্য-অযোগ্য সকলের চাকরিই বহাল থাকবে। এই রায়ে সাময়িক স্বস্তি মিলল চাকরিহারাদেরও।
বঞ্চিত প্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য আদালতে বলেন, প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি চলে গিয়েছে। সিবিআই (CBI) যে OMR শিট দিয়েছিল, সেটা কমিশন অস্বীকার করেনি। নাইসা-র এখন আর কোনও অস্তিত্বই নেই। OMR থেকে স্পষ্ট, গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিশাল দুর্নীতি হয়েছে। সমগ্র প্রক্রিয়াটাই অবৈধ। তাই প্যানেল বাতিল করা উচিত। বিচারপতি বলেন, সিবিআই যদি নিজেই জানায় ৮ হাজার ৩২৪ বেআইনি নিয়োগ হয়েছে তাহলে গোটা প্যানেল কেন বাতিলের কথা বলছেন? কিছু নিয়োগ নিশ্চিত দুর্নীতির জন্য হয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে আমরা বিবেচনা করব।
আরও পড়ুন: ১৯ হাজার নিয়োগ বৈধ, সুপ্রিম কোর্টে জানাল স্কুল সার্ভিস কমিশন
এদিন এসএসসি আদালতে জানায়, ৮ হাজার ৩২৪ জনের চাকরি অবৈধ। যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করা সম্ভব। এর আগে হাইকোর্টে এসএসসি বারবার বলেছিল, যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা আলাদা করা সম্ভব নয়। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলায় নির্বাচনী সভায় বলেন, রাজ্য বিজেপি যোগ্যদের আইনি সাহায্য করবে। এর জন্য লিগ্যাল সেল খোলা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশমতো তার পরের দিনই রাজ্য বিজেপি ছয় আইনজীবীকে নিয়ে একটি সেল গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলার পরই এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে বলেন, যোগ্য এবং অযোগ্যদের পৃথক করা সম্ভব। আমরা পরবর্তী শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করব।
এদিন প্রধান বিচারপতি বললেন, যদি যোগ্য এবং অযোগ্য আলাদা করা সম্ভব হয়, তাহলে গোটা প্যানেল বাতিল করা ন্যায্য হবে না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যেতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, যদি ভবিষ্যতে প্রমাণিত হয় কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য তখন প্যানেল বাতিলের প্রশ্ন আসবে। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পুরো প্যানেল বাতিল হলে তার যে অভিঘাত, সেটার দায় আদালত কখনও অস্বীকার করতে পারে না। তাই তারা এই নির্দেশ দিচ্ছে। তবে শীর্ষ আদালত চায়, অযোগ্যরা নিজের থেকেই চাকরি ছেড়ে দিন। হাইকোর্ট শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীদের গত আট বছরের বেতন ১২ শতাংশ সুদ সহ চার সপ্তাহের মধ্যে ফেরত দিতে বলেছিল। শীর্ষ আদালত সেই রায়েও স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
অন্য খবর দেখুন