বাসন্তী: পঞ্চায়েত ভোটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই বিজেপিতে ভাঙন। এবার বাসন্তীতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন নেতা-কর্মীরাও। এমনকী গত বিধানসভা ভোটের বিজেপি প্রার্থী রমেশ মাঝিও দল বদল করলেন পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিন। রমেশ ছাড়াও নফরগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৩৫ নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী সন্ধ্যা মণ্ডল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন। এছারাও এলাকার প্রায় শতাধিক বিজেপি কর্মী জোড়া ফুলের পতাকা এদিন হাতে তুলে নিলেন।
তৃণমূলের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখেই তাঁরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি নবাগত তৃণমূল কর্মীদের। যদিও এই দাবি মানতে চাননি বাসন্তী ব্লকের বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই যেভাবে শাসকদল বিজেপি কর্মী এবং প্রার্থীদের উপর হামলা করছে। সেই ভয়েই বিজেপি নেতা-কর্মীরা বাধ্য হয়েই আত্মসমর্পণ করেছেন।
কয়েক ঘণ্টা পরই রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে নির্বাচন শুরু হতে চলেছে। তার আগেও জেলা রাজনীতির মানচিত্রে একাধিক পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। কোথাও শাসকদল ছে়ড়ে বিরোধী শিবিরে যোগ দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। আবার কোথাও দেখা যাচ্ছে বিরোধী সঙ্গ ছেড়ে শাসকদলের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মানুষ। বাসন্তীতেও দেখা গেল তেমনই ছবি। পদ্ম শিবির ছেড়ে ঘাস ফুল শিবিরের হাত ধরলেন গ্রামের নেতা-কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, ভোটের আগের দিন শুক্রবারও হিংসার বিরাম ছিল না। এদিন সকালে মুর্শিদাবাদের রানিনগরে এক কংগ্রেস কর্মী খুন হন। বেলায় বনগাঁয় এক ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্ষিপ্ত বহু গোলমালের খবর এসেছে। কোথাও বিরোধী প্রার্থীকে হুমকি, মারধর, কোথাও বিরোধী সমর্থকদের শনিবার বুথের ধারেপাশে না যাওয়ার হুঁশিয়ারি, কোথাও ভাঙচুর, আগুন লাগানোর মতো বিস্তর অভিযোগ উঠেছে দিনভর। আবার শাসকদলের উপর বিরোধীদের চড়াও হওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
এই অবস্থায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, শনিবার পঞ্চায়েত ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার ব্যাপারে তারা বদ্ধপরিকর। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এবং সাধারণ মানুষ কমিশনের এই দাবিকে মান্যতা দিতে রাজি নয়। ভোটের আগের দিন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু রাজ্যবাসীর মনে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে। সে বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে পরে বহু মৃত্যুর ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল আমবাঙালিকে।