জলপাইগুড়ি: তীব্র তাপের (Heat) ঝলসে যাচ্ছে চা গাছের (Tea Tree) কচি পাতা। গাছ বাঁচাতে চ্যালেঞ্জের মুখে ডুয়ার্সের (Dooars) চা – চাষিরা। চলছে সেচের মাধ্যমে জল দিয়ে গাছ বাঁচানোর চেষ্টা। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ঝলসে যাচ্ছে বাগানের কাঁচা চা-পাতা। এর ফলে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে উত্তরবঙ্গের চা-শিল্পে। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জলপাইগুড়ি সহ ডুয়ার্সের অসংখ্য ক্ষুদ্র চা-চাষিরা। প্রতিকূল আবহাওয়া ও অতিরিক্ত গরমের জন্য গত কয়েকদিন ধরে কাঁচা চা-পাতার সবুজ রং কালচে হয়ে যাচ্ছে।
যেখানে গড়ে চা চাষের জন্য 20°C – 25°C তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়। চা পাতা রোপণের সময় 20°C, চা গাছ বড় হবার সময় 18°C-20°C তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়। চা পাতা তোলা ও শোকানোর জন্য সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রা চা গাছ সহ্য করতে পারে। চা চাষের জন্য গড়ে ২০০সেমি-২৫০সেমি বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়। সেই জায়গায় যেমন বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টিহীন উত্তরে দাবদাহ এতটাই বেশি যে মাটি ফেটে যাচ্ছে। তেমনি প্রায় ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা। গরমে ঝলসে যাচ্ছে ডুয়ার্সের চা-বাগানও। পাতা তামাটে হয়ে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে উৎপাদন। দ্রুত বৃষ্টি না হলে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন উত্তরের চা – চাষিরা।
আরও পড়ুন: হাইভোল্টেজ ঘাটালে ভোট বয়কটের ডাক
এমন পরিস্থিতিতে চা-শিল্পে অর্থনৈতিক মন্দা ও খারাপ প্রভাবের আশঙ্কা করছেন চা-চাষি সংগঠনের সদস্যরা। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ এবং মে মাসের শুরু থেকেই সাধারণত চা-চাষের ক্ষেত্রে মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়েই মূলত সেকেন্ড ফ্লাশ চা-পাতা উৎপাদন হয়। এই সময়ের উৎপাদিত পাতা সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি করার সুযোগ পান চা-চাষিরা। সারা বছরের মোট উৎপাদনের প্রায় ৮-১০ শতাংশ চা-পাতা উৎপাদন হয় মে মাসের মধ্যে। যদিও বর্তমানের শুষ্ক আবহাওয়া ও সূর্যের প্রখর তাপে নতুন পাতা গজানোর ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা-চাষি সংগঠনের সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে চা-গাছকে রক্ষা করাই বড় কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলেন, প্রখর রোদের তাপে একদিকে যেমন চা-পাতা ঝলসে যাচ্ছে পাশাপাশি রেড স্পাইডার, থ্রিভেস ও গ্রিন ফ্লাই নামক শোষক পোকা চা-গাছের নরম পাতাগুলোকে নষ্ট করে দিচ্ছে। কৃত্রিমভাবে জলসেচ ও মূল্যবান কীটনাশক ব্যবহার করেও পোকা দমন করা যাচ্ছে না।
অন্য খবর দেখুন