আজ ২৫ বৈশাখ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) জন্মবার্ষিকী (Birth Anniversary)। তাঁর লেখা বারবার মুগ্ধ করেছে ভারতবাসী সহ বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মের মানুষদের। চিত্রপরিচালকদের (Cinematographers) এখনও রসদ যোগায় রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান, উপন্যাস, নাটক ও ছোট গল্প। তাঁর লেখাকে অবলম্বন করে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু ছবি। রুপোলি পর্দায় আজও গল্প বলে যান রবীন্দ্রনাথ। পাশাপাশি বাঙালির উৎসব, আনন্দ, দুঃখের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ। আজ তাঁর জন্মদিনে এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক সেই ছবিগুলি কী কী।
কাবুলিওয়ালা (১৯৫৭)
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের ওপর ভিত্তি করে তপন সিনহা তৈরি করেন এই ছবি। ‘কাবুলিওয়ালা’র ভূমিকায় অভিনয় করেন ছবি বিশ্বাস। কাবুলিওয়ালা ও মিনির সম্পর্কের রসায়ন খুব সুন্দরভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক।
তিন কন্যা (১৯৬১)
রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সত্যজিৎ রায় এই সিনেমাটি তৈরি করেন। মূলত রবীন্দ্রনাথের তিনিটি ছোট গল্প নিয়ে তিনটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত এই সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছিল। গল্পগুলি জানেন কী কী? সেগুলো হল, পোস্টমাস্টার, মণিহারা এবং সমাপ্তি।
চারুলতা (১৯৬৪)
সত্যজিৎ রায় নিজে একবার বলেছিলেন, ‘চারুলতা’ নাকি তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ছবি। মাধবী, সৌমিত্র অভিনীত এই ছবিটি। এক গৃহবধূর মানসিক উপলদ্ধি, স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ও রাজনৈতিক ঘটনার সমন্নয়ে এই ছবিটি সিনেপ্রেমীদের অত্যন্ত প্রিয় একটি ছবি। এই সিনেমার গল্প রবীন্দ্রনাথের ‘নষ্ট নীড়’ উপন্যাস অবলম্বনে।
ঘরে-বাইরে (১৯৮৫)
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত এই ছবিটি রবীন্দ্রনাথের ‘ঘরে-বাইরে’ উপন্যাসের অবলম্বনে তৈরি। রাজনৈতিক অস্থিরতা অন্যদিকে মানসিক দ্বন্দ্ব, সম্পর্কের টানাপোড়েনের গল্প বলে এই উপন্যাস। ভিক্টর ব্যানার্জী, স্বাতিলেখা সেনগুপ্ত ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত এই ছবিটি ‘বেস্ট ফিচার বেঙ্গলি ফিল্ম’ হিসাবে ন্যাশানাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল।
চার অধ্যায় (১৯৯৭)
কুমার সাহানি পরিচালিত এই ছবিটি একটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে। প্রধান চরিত্র এলা-র জীবনকে নিয়েই আবর্তিত হয়েছে গল্পের বিভিন্ন চরিত্র ও ঘটনা। অন্ধ জাতীয়তাবোধ, পুরুষের জীবনে নারীর স্থান ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে এই ছবি।
চোখের বালি (২০০৩)
রবীন্দ্রনাথের অন্যতম একটি উপন্যাস ‘চোখের বালি’র গল্প অবলম্বনে ঋতুপর্ণ ঘোষ। ঐশ্বর্য্য রাই বচ্চন, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, রাইমা সেন, টোটা রায়চৌধুরী অভিনীত এই ছবি দর্শকদের মন ছুঁয়েছিল। ২০০৩ সালে মুক্তি পায় এই ছবিটি। বিনোদিনীর ভূমিকায় ঐশ্বর্য্য রাইয়ের অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়েছিল।
চতুরঙ্গ (২০০৮)
রবীন্দ্রনাথের ‘চতুরঙ্গ’ উপন্যাস অবলম্বনে সুমন মুখোপাধ্যায় এই ছবিটি বানান। মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, কবীর সুমন, সুব্রত দত্ত, জয় সেনগুপ্ত প্রমুখ।
নৌকাডুবি (২০১০)
রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস ‘নৌকাডুবি’-র গল্প নিয়ে ঋতুপর্ণ ঘোষ এই ছবিটি বানান। এক নৌকাডুবিকে কেন্দ্র করে সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে এই ছবি। অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, যীশু সেনগুপ্ত, রাইমা সেন, রিয়া সেন।
চিত্রাঙ্গদা (২০১২)
রবীন্দ্রনাথের ‘চিত্রাঙ্গদা’ নৃত্যনাট্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ঋতুপর্ণ ঘোষ এই ছবি তৈরি করেন। অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণ স্বয়ং, সাথে যীশু সেনগুপ্ত, দীপঙ্কর দে, অঞ্জন দত্ত, অনুসূয়া মজুমদার প্রমুখ। লিঙ্গ এবং যৌন সত্ত্বার অন্তর্দ্বন্দ্ব খুব নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক।
তাসের দেশ (২০১৩)
তাসের দেশ রবীন্দ্রনাথের লেখা একটি নৃত্যনাট্য। অদ্ভুত এক নিয়মের দেশের নিয়ম ভাঙার ঘটনাই ছিল তাসের দেশের গল্প। সেই গল্পের সঙ্গে বর্তমান সময়ের কল্পনা মিলিয়ে তৈরী হয়েছে তাসের দেশ ছবিটি।