কলকাতা: তৃণমূলে যোগ দিয়েই পুলিশি নিরাপত্তা (Security State Police) পেয়ে গেলেন বাইরন বিশ্বাস (Bayron Biswas)। দল বদলের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা পেলেন বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। বিধায়কের বাড়ির নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ হয়েছেন ৮ জন সশস্ত্র কনস্টেবল, দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর। বাইরনের দেহরক্ষী হিসেবে দেওয়া হয়েছে তিন জন কনস্টেবল, এক জন সাব ইন্সপেক্টর এবং এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর।
উপনির্বাচনে জয়ের তিনমাসের মধ্যেই হাত ছেড়ে জোড়াফুলে যোগ দিলেন তিনি। ঘাটালের এক নবজোয়ার কর্মসূচির মঞ্চেই বায়রনকে উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানান খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলের যোগ দেন তিনি। আর শুক্রবার সকালেই তাঁর জন্য পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাইরন নিজেই। দলবদলের পরেই রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষকর্তার সঙ্গে ফোনে নিজের নিরাপত্তা বিষয়ে কথা বলেন বিধায়ক। তিনি ওই পুলিশ কর্তাকে জানান, মুর্শিবাদাবাদের মাটিতে ফিরলেই তাঁর ওপর হামলা হতে পারে। তাই পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হোক তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে। আর মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাইরনের বাড়িতে এবং ব্যক্তিগত দেহরক্ষী মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন: Partha Chatterjee | ‘সবাই তৃণমূলে চলে আসবে’, বায়রনের যোগদানে মন্তব্য পার্থর, অর্পিতাতে নীরব
কংগ্রেসের হয়ে জয়ী হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্য পুলিশের কাছে দরবার করেছিলেন সাগরদিঘির সদ্য দলত্যাগী বিধায়ক। নিজের নিরাপত্তার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। চলতি মাসেই কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা তাঁকে নিরাপত্তা দিতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সোমবার সবাইকে চমকে দিয়ে হাত শিবির ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিলেন সাগরদিঘির সদ্য কংগ্রেসত্যাগী বিধায়ক।
সাগরদিঘিতে বিজেপির ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে বলে অবশেষে স্বীকার করলেন অধীর চৌধুরী। মঙ্গলবার বহরমপুর কংগ্রেস কার্যালয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, অত্যাচারিত মানুষ সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে তৃণমূলকে পরাজিত করেছে সাগরদীঘিতে। সাগরদিঘী উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের ১৭ শতাংশ ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে এবং বিজেপির ১০ শতাংশ ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে, সেকারণেই কংগ্রেস জিতেছে আর বাইরণ বিস্বাস বিধায়ক হয়েছেন। ওই জয়ের পর শয়ে শয়ে তৃণমুল কর্মী কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূল সাগরদিঘীর কংগ্রেসের বিধায়ককে ব্যবসা সংক্রান্ত ভয় দেখিয়ে দলে টেনে নিয়েছে বলে দাবি অধীর চৌধুরী।
মঙ্গলবার জেলবন্দি তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) দাবি করেন, বায়রন বিশ্বাসের মতো সবাই তৃণমূলে চলে আসবে। সাগরদিঘি নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে, বঙ্গ রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল সাগরদিঘি মডেল। কংগ্রেস আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে লড়াইয়ে বাড়তি অক্সিজেনও পেয়েছিল। বেড়ে ছিল কর্মা সমর্থকদের মনোবল। সোমবারই সবকিছুতে একপ্রকার জল ঢেলে তৃণমীলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন বায়রন। তার এই দলবদল অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ বাইরনের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আমরা যেন সাগরদিঘির মানুষ বা সাগরিধি মডেলকে ভুল না বুঝি। বায়রন বিশ্বাসকে বিশ্বাসঘাতক বলে আক্রমণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের। তিনি বলেন, এই ধরনের কাজ বিরোধী ঐক্যের পরিপন্থী, এতে বিজেপির উদ্দেশ্যই সিদ্ধ হবে