কলকাতা: কৌস্তভ বাগচীর (Koustav Bagchi) বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর (FIR) অনুযায়ী তদন্তে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta Highcourt)। আদালতের নির্দেশ, তার অনুমতি ছাড়া কৌস্তভের বিরুদ্ধে কোনও থানা পদক্ষেপ করতে পারবে না। আগামী চার সপ্তাহ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে আদালতের এই নির্দেশ।
এই মামলায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, বড়তলা থানা প্রাথমিক অনুসন্ধান না করেই অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধান করা উচিত ছিল। এমন কোনও তথ্য প্রমাণ কৌস্তভের বিরুদ্ধে করা অভিযোগে ছিল না, যার থেকে বিষয়টির গুরুত্ব বোঝা যায়। আদালত জানতে চায়, কীসের ভিত্তিতে কোনও নোটিস না পাঠিয়েই মাঝরাতে পুলিশ কৌস্তভের বাড়ি গিয়েছিল। আদালত বলে, এরপর পুলিশ সারারাত ব্যারাকপুরে কৌস্তভের বাড়িতে থাকে। পরের দিন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এটা আদালতের নির্দেশের পরিপন্থী।
আরও পড়ুন: Santanu Banerjee | দলের পর এবার চাকরি থেকেও সাসপেন্ড শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়
বিচারপতি মান্থা পুলিশের এই অতিসক্রিয়তার ব্যাপারে তাদের কাছে রিপোর্টও তলব করেন। তিনি বলেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে তদন্ত করে দেখতে হবে, কেন বড়তলা থানা এই কান্ড ঘটাল। তিন সপ্তাহের মধ্যে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে এই ব্যাপারে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। ততদিন পর্যন্ত কোনও তদন্ত করা চলবে না।
আদালত প্রাথমিকভাবে মনে করে, কৌস্তভের পরিবারের উপরে হামলার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী সোমবার সিআরপিকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, তাঁরা কৌস্তভের পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে পারবে কি না। ততদিন পর্যন্ত ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে অন্তত পাঁচ সশস্ত্র পুলিশকর্মীকে নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করতে হবে।
ওই ঘটনা সম্পর্কে আদালতের লিখিত পর্যবেক্ষণ, রাজ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। যদিও সরকারি কৌঁসুলি বিচারপতির এই লিখিত মন্তব্যে আপত্তি জানিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি করেন। তবে, বিচারপতি তা প্রত্যাহারে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৪ তারিখ কৌস্তভকে পুলিশ তাঁর ব্যারাকপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। তার আগের দিন অর্থাৎ ৩ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধোপাধ্যের অধীরকোডহরীকে নিয়ে করা একটি মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছিলেন কৌস্তভ বাগচী। তাঁর সেই মন্তব্যকে প্ররোচনামূলক বলে উল্লেখ করে বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক তৃণমূলকর্মী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ৪মার্চ ৩টেয় পুলিশ পৌঁছে যায় কৌস্তভের বাড়িতে। গ্রেফতারির পর তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করে পুলিশ। যদিও সেদিন বিকেলেই আদালত থেকে জামিন পান কৌস্তভ।