কলকাতা টিভি ওয়েবডেস্ক: এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেটের করা মামলায় বিশেষ সিবিআই আদালতের রক্ষাকবচ পেলেন কলকাতা টিভির সম্পাদক কৌস্তুভ রায়। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, কোনওরকম দমনমূলক পদক্ষেপ কৌস্তুভ রায়ের বিরুদ্ধে করা যাবে না। এবং কোনও পদক্ষেপ করতে হলে আগাম কোর্টের অনুমতি নিতে হবে। আগামী ২২ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সিবিআই আদালতের বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায় এদিন ইডি’র অফিসারদের ডেকে পাঠান। আদালতের কাছে কৌস্তুভ রায়ের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় এজেন্সির মাধ্যমে তাঁকে অযথা হেনস্থা করা হচ্ছে। এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর এনফোর্স ডায়রেক্টরেট সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে কলকাতা টিভির সম্পাদককে ডেকে পাঠায়। একদিন আগেই হাজিরা দেন তিনি। ২৮ সেপ্টেম্বর কৌস্তুভ আদালতে হয়রানির অভিযোগ জানান। বলেন, ‘তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে ৭ ঘণ্টা ধরে বসিয়ে রেখে হয়রানি করা হয়েছে।’ সেই আবেদনের ভিত্তিতেই সোমবারের শুনানি। কৌস্তুভ এবং ইডি, দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক বলেন, মামলার পরের শুনানি ২২ নভেম্বর। এই সময়সীমায় কলকাতা টিভির সম্পাদকের বিরুদ্ধে কোনওরকম দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন: মমতার আবেদন শেয়ার করে ফের কলকাতা টিভির পাশে দাঁড়ালেন ডেরেক ও ব্রায়েন
আদালতকে লিখিত ভাবে কৌস্তুভ রায় এই মামলায় তাঁর আর্থিক অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন। হিসেব দিয়েছেন, গত এক বছর ধরে তিনি কীভাবে ব্যাঙ্কের প্রায় দু’শো কোটি টাকা ফেরত দিয়েছেন তিনি। কৌস্তুভের উত্তরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারক। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এ ধরনের হয়রানি কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছ থেকে কাম্য নয়। একটি পুরনো মামলায় তিন বছর পর হঠাৎ করেই সেপ্টেম্বর মাসে ইডি কৌস্তুভ রায়কে নোটিস পাঠায়।
তা হঠাৎ করে কেন তলব? কৌস্তুভ রায়ের বক্তব্য ছিল, ‘কোন মামলায় ডেকেছে তা জানি না। কেন ডেকেছে তা বুঝতে পারছি। গোটা দেশে যারা যারা নরেন্দ্র মোদি আর বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে যে সব মিডিয়া প্রশ্ন করছে তাদেরকেই ডেকে পাঠানো হচ্ছে। কোথাও নিউজ লন্ড্রি, কোথাও দৈনিক ভাস্কর, কখনও এনডিটিভি। তো সেই তালিকায় কলকাতা টিভিরও নামও সংযোজিত হল। এরপরেও কলকাতা টিভির সম্পাদকের স্পষ্ট জবাব, তিনি বা তাঁর প্রতিষ্ঠান প্রশ্ন বন্ধ করবেন না। অন্যায়, না পাওয়া, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন জারি থাকবে।’
আরও পড়ুন: কলকাতা টিভির পাশে মমতা, ধন্যবাদ জানিয়ে সম্পাদক কৌস্তুভ রায়ের টুইট
এর আগে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ঠিক আগে ডেকে পাঠানো হয়েছিল কৌস্তুভ রায়কে। এরপর তিন বছর কোনও সাড়াশব্দ নেই। কলকাতা টিভি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদকীয় প্রতিবেদন চতুর্থ স্তম্ভ। যেখানে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের একধিক ভুল নীতির বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করে গিয়েছে কলকাতা টিভি। স্পেডকে স্পেড বলতে, কালোকে কালো বলতে কখনওই পিছপা হয়নি। সংবিধানকে মর্যাদা দিয়ে প্রতিদিনই এভাবে চতুর্থ স্তম্ভ নিজের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে। হয়ত বা সে কারণেই বারবার শাসকের কোপে পড়তে হয়েছে কলকাতা টিভিকে।