নয়াদিল্লি : গোধরা কাণ্ডের পরে গুজরাতে গণধর্ষণ ও অত্যাচারের নির্মম শিকার বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) আর্জি খারিজ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ১১ জন ধর্ষক ও খুনির মুক্তির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি নাকচ করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত (Apex Court)। বিলকিস বানোর তরফে মোট দুটি পিটিশন দায়ের হযেছিল। তার মধ্যে একটি আর্জি খারিজ হলেও কোন যুক্তিতে আপরাধীদের ছাড়া হল সেই মামলার শুনানি অবশ্য এখনও হয়নি।
তাঁকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের সাজার মেয়াদ শেষের আগে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আবেদন জানানো হয়েছিল। রায় পুনর্বিবেচনার আর্জিতে শীর্ষ আদালতের কাছে বিলকিসের আইনজীবী শোভার বক্তব্য ছিল, ধর্ষণ ও খুনের মতো গুরুতর অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের মেয়াদ শেষের আগেই মুক্তির সিদ্ধান্ত আরও একবার খতিয়ে দেখা হোক। কিন্তু শনিবারের শুনানিতে (Hearing) সেই আর্জি খারিজ করে দেওয়া হল।
গত ১৫ অগস্ট দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিস কাণ্ডের আসামী ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত (Gujarat) সরকার। তার আগে, মুক্তির জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গুজরাত সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল আদালত। বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার ১১ অপরাধীর (Convict) মুক্তির পক্ষে সওয়াল করায় তাঁদের ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় শীর্ষ আদালত। ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে শোরগোল শুরু হয়ে যায় দেশ জুড়ে। অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের মেয়ে এবার গুজরাতে বিজেপির বিধায়ক (MLA) হয়েছেন।
২০০২ সালে গোধরা কাণ্ডের পর গুজরাতে সাম্প্রদায়িক অশান্তি চলাকালীন ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারে হামলাকারীরা। এই ঘটনায় মুম্বইয়ের সিবিআই আদালত (CBI Court) ২০০৮ সালে অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (Life Imprisonment) রায় দেয়। ইতিমধ্যে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন একজন বিচারপতি। আর এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের রায় নতুন বিতর্ক তৈরি করল বলে মনে করছেন আইনজ্ঞদের একটা বড় অংশ।