নয়াদিল্লি: ৬ রাজ্যের ৭টি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা আজ, রবিবার। সকাল থেকেই চলছে ভোটগণনা। বিজেপি এবং আঞ্চলিক দলগুলির কাছে এই উপনির্বাচন গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশের ভোটের আগে একটা অ্যাসিড টেস্ট। হরিয়ানায় পরিবারতন্ত্রের যুদ্ধের পাশাপাশি তেলঙ্গানা, বিহার এবং মহারাষ্ট্রে এই উপনির্বাচন যুযুধান দুপক্ষের সামনে সম্মানরক্ষার লড়াই। ৩ নভেম্বর হরিয়ানার আদমপুর, বিহারের মোকামা ও গোপালগঞ্জ, মহারাষ্ট্রের আন্ধেরি পূর্ব, তেলঙ্গনার মানুগোড়া, উত্তরপ্রদেশের গোলা গোরখনাথ এবং ওড়িশার ধামনগরে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
সংখ্যায় কম মনে হলেও এই উপনির্বাচনে বিজেপি এবং আঞ্চলিক দলগুলির শক্তি যাচাই হতে চলেছে। তাই সব দলগুলিই প্রচারে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সম্মানরক্ষার এই লড়াইয়ে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। তেলেঙ্গনা এই ভোটে দেশের নজর কেড়েছে। কারণ এখানে বিজেপি এবং মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএসের সম্মানরক্ষার লড়াই চলছে। কারণ, কিছুদিন আগেই কেসিআরের দল বিজেপির বিরুদ্ধে বিধায়ক ভাঙানোর অভিযোগ তুলেছিল। বিশাল টাকার টোপ ফেলে বিজেপি এই রাজ্যেও পদ্ম-অভিযান চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিল টিআরএস।
আরও পড়ুন: WB Govt: ১০০ দিনের কাজে অস্বস্তিতে রাজ্য, ১৫ জেলার রিপোর্ট তলব পঞ্চায়েত দফতরের
তেলেঙ্গনার মানুগোড়া বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এই কেন্দ্রে বিজেপির আর কে রাজাগোপাল রেড্ডি এবং টিআরএসের কুসুকুন্তলা প্রভাকর রেড্ডির মধ্যে মুখোমুখি লড়াই চলছে। কংগ্রেসও এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে পালভাই শ্রাবন্তীকে। উল্লেখ্য, রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে দলকে জাতীয় মুখ করতে টিআরএস সম্প্রতি নাম পরিবর্তন করে ভারত রাষ্ট্র সমিতি করেছে। কিন্তু, এই কেন্দ্রে যদি তারা হেরে যায়, তাহলে অন্য দলগুলির কাছে মুখ তো পুড়বেই, উপরন্তু বিধানসভা নির্বাচনেও তর্কযুদ্ধে পিছিয়ে পড়বে।
অন্যদিকে, বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের মহাগাঁটবন্ধনের সাফল্যের পর এই প্রথম নির্বাচনী ময়দানে নামতে চলেছে মহাজোট। মাত্র মাস তিনেক আগে বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘদিনের সখ্য ছেড়ে নীতীশ তেজস্বী যাদবের আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়েছেন। সেই হিসেবে এই নির্বাচন দুপক্ষের কাছেই ইজ্জতরক্ষার লড়াই। বিহারে মোকামা ও গোপালগঞ্জে উপনির্বাচন হচ্ছে। মোকামা এর আগে আরজেডির এবং গোপালগঞ্জ বিজেপির ছিল। শেষ পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, এখানে আরজেডি প্রার্থী ৯১৫ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।
হরিয়ানার আদমপুরের বিধায়ক কুলদীপ বিষ্ণোই গত অগাস্টে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় আসনটি খালি হয়। গত ৫ দশক ধরে এই কেন্দ্রটি ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভজন লালের পরিবারের হাতে। ভজন লালেরই ছোট ছেলে হলেন বিষ্ণোই। এবার বিষ্ণোইয়ের ছেলে ভাব্য বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী হচ্ছেন তিনবারের সাংসদ, দুবারের বিধায়ক প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয় প্রকাশ।
উত্তরপ্রদেশের গোলা গোরখনাথে বিজেপির আরও সম্মানরক্ষার লড়াই। কারণ এই কেন্দ্রে মায়াবতীর বিএসপি কিংবা কংগ্রেস কেউ প্রার্থী দেয়নি। গেরুয়া বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধ হচ্ছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির। ওড়িশার ধামনগর কেন্দ্রটি বিজেপি দখলে রাখতে পারবে বলে আশাবাদী। বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুতে এই কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। তাঁর ছেলেই পদ্মপ্রার্থী। লড়াই হচ্ছে বিজেপির সুহৃদ মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের বিজু জনতা দলের সঙ্গে। মহারাষ্ট্রে প্রথম কিস্তিতেই দান ছেড়ে দিয়েছে বিজেপি। প্রয়াত বিধায়কের স্ত্রী আন্ধেরি পূর্ব কেন্দ্রে উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর শিবসেনা প্রার্থী।