জয়পুর: পুলিশ প্রথমে ভেবেছিল পথ দুর্ঘটনা। কিন্তু, তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ। জীবনবিমার (Insurance) টাকা আদায়ে স্ত্রীর জীবন কেড়ে নিল স্বামী! আশ্চর্য হলেও এমনই ঘটনা ঘটেছে রাজস্থানে (Rajasthan)। যা জানতে পেরে পুলিশকর্তাদেরও চোখ কপালে উঠেছে। দুর্ঘটনাটি গত ৫ অক্টোবরের। জয়পুরের (Jaipur) বাসিন্দা ৩২ বছরের শালুদেবী তাঁর ৩৬ বছরের তুতো দাদা রাজুর সঙ্গে বাইকে চেপে রাজস্থানের প্রখ্যাত ও প্রাচীন হনুমান মন্দির সামোদে (Samod Temple) যাচ্ছিলেন। জয়পুর-সিকার সড়কে হারমাদার কাছে তাঁদের বাইকে ধাক্কা মারে একটি এসইউভি গাড়ি। সেখানেই পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় শালুদেবীর।
প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশের অনুমান ছিল, এটি একটি সাধারণ পথ দুর্ঘটনা। এই ব্যস্ত হাইওয়েতে প্রায় রোজই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটে এবং মৃত্যুও হয়। কিন্তু, এই তদন্তে নেমেই নাটকীয় মোড় নেয় রহস্য। দিন ২০ আগে পুলিশ জানতে পারে শালুর মৃত্যুতে তাঁর স্বামী প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকার বিমা ক্ষতিপূরণ পেতে চলেছেন। তখনই তদন্তের মুখ অন্যদিকে ঘুরতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: Marriage and Separation: বিয়ের মঞ্চে মালাবদলের পরই বউকে চুমু বরের, রাগে বিয়ে ভাঙলেন কনে
পদস্থ পুলিশ আধিকারিক বন্দিতা রানা বলেন, শালুর স্বামী মহেশের বিরুদ্ধে পণের মামলাও রয়েছে। বিমার প্রায় ২ কোটি টাকা হাতাতে স্ত্রীকে খুনের ছক কষে মহেশ চন্দ্র। এর জন্য মুকেশ সিং রাঠোর নামে একজনের সঙ্গে ১০ লাখ টাকার চুক্তি হয়। খুনের আগে সুপারির সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা দেয় রাঠোরকে। পুলিশ জানিয়েছে, মহেশ ও রাঠোর ছাড়াও রাকেশ কুমার ও সোনু সিং নামে আরও ২ চক্রান্তকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, শালু ও মহেশের দাম্পত্যে চিড় ধরেছিল। তাই ২০১৭ সাল থেকে তারা আলাদা থাকছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও মহেশ এ বছর গোড়ার দিকে বিরাট অঙ্কের জীবনবিমা করায় স্ত্রীর নামে। পুলিশ সেকথা দিন ২০ আগে জানতে পারে। পুলিশের সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে, যখন জানা যায় শালু তাঁর স্বামীর নামে পণপ্রথার অত্যাচারের একটি অভিযোগও করেছিলেন ২০১৯ সালে।
গত এপ্রিল থেকে মহেশ ফের শালুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে। তাঁকে বোঝায় যে, সে সামোদের সঙ্কটমোচনের কাছে একটি মানত করেছে। তাই শালু যদি মোট ১১ বার ওই মন্দিরে যায়, তাহলে তার মনোস্কামনা পূর্ণ হবে। এইভাবে সে খুনের ছক কষে। এমনকী খুনের দিনও মহেশ শালুর বাড়ি গিয়েছিল এবং তুতো দাদার সঙ্গে স্ত্রী বেরিয়ে যাওয়ার পর গাড়িতে থাকা অভিযুক্তদের জানিয়ে দেয়। তার কিছুক্ষণ পরেই এসইউভি গাড়িটি দ্রুতগতিতে গিয়ে দুজনকে পিষে দেয়।