ফলাফলে (Election Result) বিজেপির মোদি (Narendra Modi) ম্যাজিক কাজে লাগল না। মুখ থুবড়ে পড়ল মোদি ক্যারিশ্মা। বিজেপি (BJP) আশা করেছিল, শেষ মুহূর্তে প্রচারে ঝড় তুলে প্রধানমন্ত্রী বাজিমাত করবেন। কংগ্রেসের (Congress) ইস্তাহারে বলা হয়েছিল, ক্ষমতায় এলে তারা বজরং দল এবং পিএফআইয়ের মতো কট্টর সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ করবে। মোদি প্রচারে নেমে সেই কংগ্রেসের বজরং দলকে নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতিকে হাতিয়ার করলেন। নির্বাচনী সভায় তিনি জয় বজরংবলি ধ্বনি দিয়ে জনতাকে উত্তেজিত করলেন। মোদি ভাবলেন, কট্টর হিন্দুত্বের ধ্বজা তুলেই কর্নাটকে জেতা যাবে। কিন্তু কিছুই কাজে লাগল না। প্রচারের শেষ লগ্নে মোদি সাতদিনে ছটি রোড শো এবং ১৯টি জনসভা করেন। সেগুলিতে ভিড়ও মন্দ হয়নি। ভোটের ফলে ফের প্রমাণ হল, শুধু ভিড় দিয়ে ভোটে জেতা যায় না।
কংগ্রেসের প্রচারে বিজেপির মতো বাহুল্য ছিল না। ছিল না দেখনদারি। কংগ্রেস এবার প্রথম থেকেই স্থানীয় সমস্যা, মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, বিজলির সমস্যা, বেকারি, সরকারের দুর্নীতিকে হাতিয়ার করেছিল। কংগ্রেসের প্রচারের মূল সুর ছিল ৪০ শতাংশ কমিশনের কর্নাটক সরকারকে হারাতেই হবে। প্রথম থেকেই তারা এই কমিশনের সরকারকে টার্গেট করেছিল। রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়্গের মতো কংগ্রেস নেতারা সাধ্যমতো প্রচার করেছেন। পক্ষান্তরে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে তাবড় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা পড়ে থেকেছেন কর্নাটকে। কিন্তু তাঁদের ভাষণে স্থানীয় সমস্যা গুরুত্ব পায়নি। বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা হিন্দুত্বের উপরই জোর দিয়েছেন বেশি। ডাবল ইঞ্জিন সরকারের গুণগান গেয়েছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের রুটি-রুজি নিয়ে তাঁরা মাথা ঘামাননি।
আরও পড়ুন: Karnataka Congress Win | কর্ণাটকে কংগ্রেস জয়ের পথে, দাবি রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার সুফল
এর পাশাপাশি ছিল কর্নাটকে (Karnataka) বিজেপির তীব্র গোষ্ঠীকোন্দল। টিকিট দেওয়া নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। জগদী শেট্টারের মতো একাধিক প্রবীণ বিজেপি নেতা টিকিট না পেয়ে দল ছেড়েছেন। তার সঙ্গে ছিল বোম্মাই সরকারের দুর্নীতির ইস্যু। বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা খোলাখুলি কমিশনের কথা বলেছেন। তা নিয়ে ঠিকাদারদের সঙ্গে সরকারের বিরোধ হয়েছে। তাকে কাজে লাগিয়েছে কংগ্রেস। তার ডিভিডেন্ডও পেয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি সেই দুর্নীতির অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়নি। বরং তাকে ডিফেন্ড করে গিয়েছে ছলেবলে। সব মিলিয়ে এসবের খেসারত দিতে হল বিজেপিকে। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে একমাত্র হাতে থাকা দক্ষিণের রাজ্য কর্নাটকের ক্ষমতা দখলে রাখতে না পারা কার্যত প্রধানমন্ত্রীরই ব্যর্থতা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, তিনিই ছিলেন প্রচারের প্রধান মুখ।