মেদিনীপুর: শনিবার কুড়মি নেতৃত্বদের বিষয়ের বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটের অজিত মাইতি। এর জেরে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল জঙ্গলমহলের কুড়মি সম্প্রদায়ের উপর। পরিস্থিতি বিবেচনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষমা চেয়ে নেন। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ধমক পাওয়ার পরে মেদিনীপুর শহরে এদিন সন্ধ্যাতে তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষমাভিক্ষা চাইলেন অজিত মাইতিও। প্রসঙ্গটি এখানেই সমাপ্ত হোক বলেও অনুরোধ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার মেদিনীপুরে তৃণমূলের সাধারণ সভাতে বক্তব্য রাখার সময় কুড়মি সম্প্রদায়ের নেতৃত্বদের উদ্দেশে অজিত মাইতি বলেছিলেন, কিছু কিছু স্বঘোষিত নেতা খালিস্তানিদের মত আচরণ করছেন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার করছেন এবং কুড়মি ভাই-বোনেদের ভুল বুঝিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। প্রয়োজনে এদের বিরুদ্ধেও সর্বাত্মক আন্দোলন করব।
আরও পড়ুন: Doctors Protest | দিল্লিতে মহিলা কুস্তিগিরদের আন্দোলনকে সমর্থন করে কলকাতায় মিছিল চিকিৎসকদের
এই মন্তব্যের পরই সমালোচনার ঝড় শুরু হয় রাজনৈতিক মহল ও জঙ্গল মহলের কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে। পশ্চিম মেদিনীপুর সহ বিভিন্ন জেলায় এরই প্রতিবাদে ধিক্কার মিছিল থেকে প্রতিবাদ পোস্টারিং শুরু হয়ে যায়।
সোমবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে নিজে ক্ষমা চেয়ে নেন কুড়মি সম্প্রদায়ের কাছে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর ধমক অজিত মাইতিকে। দেরি না করে এদিন সন্ধ্যায় মেদনীপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন অজিত। তিনি বলেন, আমি যে মন্তব্য করেছি সেটাও ঐরকম বলতে চাইনি। এটাতে অনেক কুড়মি ভাই বোন দুঃখ পেয়েছেন। আমি তাঁদের কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাইছি। সেই সঙ্গে আমার মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকেও ক্ষমা চাইতে হয়েছে, তাই নেত্রীর কাছেও আমি ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। আসুন সবাই বিষয়টির এখানে নিষ্পত্তি করে উন্নয়নের সামিল হই। কুড়মি ভাইবোনদের কাছে পুনরায় আমি ক্ষমাপ্রার্থী আমার মন্তব্যের জন্য।
উল্লেখ্য, বারবার এই ধরনের মন্তব্য নিয়ে সোমবার সকাল থেকেই শালবনিতে জঙ্গল মহলের কুড়মি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। শালবনের কর্মী নেতা সুমন মাহাতো বলেন, অজিত মাইতি যে মন্তব্য করেছেন তা ধিক্কার যোগ্য। তার পাশেই সভাতে বসে ছিলেন আমাদের কুড়মি সম্প্রদায়ের নেতা শ্রীকান্ত মাহাতো নিজেও। তিনি চুপ ছিলেন। দুজনের নামেই আমরা ধিক্কার পোস্টার লাগাচ্ছি শালবনির জঙ্গলমহল জুড়ে। দু’জনকেই ক্ষমা চাইতে হবে না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।