Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeচতুর্থ স্তম্ভচতুর্থ স্তম্ভ: টাকা নামছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, সেদিনের প্রতিবাদীরা আজ চুপ কেন?

চতুর্থ স্তম্ভ: টাকা নামছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, সেদিনের প্রতিবাদীরা আজ চুপ কেন?

Follow Us :

কৌশিক বসু টুইটে লিখেছিলেন, গত ২৫ বছরে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি৷ মূল্যবৃদ্ধি পেরিয়ে গিয়েছে ১৫% এর মাত্রা৷ এর ফলে বেকারত্ব বাড়বে৷ ছোট ব্যবসা বন্ধ হবে।  টাকা এই সপ্তাহে আরও নেমেছে৷ এটাও রেকর্ড৷ এক ডলারের বদলে পাবেন ৭৭.৫০ টাকা৷ স্বাধীনতার পর এটাই রেকর্ড।  জিডিপি কমছে, টাকা নামছে, জিনিষপত্রের দাম বাড়ছে, পেট্রল ডিজেলের দাম বাড়ছে৷ এরকম একটা সময়ে ভারতের রাজনীতিবিদরা কে কী বলবেন, সেটা জানার জন্য তাদের কথা না শুনলেও চলবে৷ কেবল দেখে নেবেন, তারা কে কোন দলে৷ ব্যস, তারা কী বলবেন, কী বলছেন, আপনার জানা হয়ে গেল৷

সরকারে আছেন যাঁরা, যে দল সরকার চালাচ্ছে, সেই দলের ছোট, বড়, সর্বোচ্চ নেতা, মন্ত্রী, হাফ মন্ত্রীরা মুখে কুলুপ দিয়ে বসে থাকবেন৷ অথবা দাম কেন বাড়লো, এই প্রশ্নের জবাবে বলবেন গ্লোবাল ইকোনমি৷ তার বিরাট সমস্যা ইত্যাদির কথা৷ দাম তো আমেরিকাতেও বাড়ছে, জার্মানিতেও বাড়ছে, এরকম কথাও বলবেন৷ অন্যদিকে, রাস্তায় গরুর গাড়ি নিয়ে, মাথায় গ্যাসের সিলিন্ডার নিয়ে, হাতে থালা নিয়ে, বাজারের ব্যাগ নিয়ে মিছিল করবেন বিরোধী দলের নেতা সমর্থকরা৷ রাস্তা অবরোধ করবেন, মজার মজার বাইট দেবেন, চৌকিদারের সিনা এখন ৫৬ ইঞ্চি নয়, ১১৩ ইঞ্চি, পেট্রলের দামের সঙ্গে তাল মিলিয়েই নাকি সিনা চওড়া হচ্ছে৷ এরকম কত শত বাইট, কুশপুত্তলিকা জ্বালানো হবে, ঘন্টা খানেকের জন্য গ্রেফতার হবেন, তারপর পাউডার মেখে টিভি চ্যানেলের আলোচনায় বসবেন৷ এটাই দস্তুর৷

জামানা পাল্টালে আবার উলটো খেলা।  আমরা আম আদমি৷ আমরা এসব দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি৷ মূল্যবৃদ্ধি আমাদের ঘরে, আমাদের হেঁসেলে, আমাদের পকেটে৷ হাঁফ ধরে যাচ্ছে৷ এটা কমাতে হচ্ছে, ওটা কমাতে হচ্ছে৷ তবুও কুলোচ্ছে না।  আগে সপ্তাহে দু’দিনের জায়গায় একদিন মাছ, সপ্তাহে একদিনের জায়গায়, পনেরো দিনে একদিন মাংস, কিন্তু ছেলে মেয়ের স্কুলের ফিজ, স্কুল বাসে ভাড়া তো আর অর্ধেক দেওয়া যায় না৷ তিনটের অ্যাজিথ্রমাইসিন ডোজের জায়গায় একটা তো খাওয়া যায় না৷ অতএব নাভিশ্বাস উঠছে৷ মধ্যবিত্তরা গরিব, আর গরিবরা আরও গরিব হচ্ছে।  রাস্তায় বেকারদের দাবির মিছিল আর চোখ টানে না৷ রাস্তায় মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে মিছিলের সামনের মুখগুলো দেখলেই মনে পড়ে যায়, এরাই তো কদিন আগেই সরকার চালিয়েছে, অন্য কথা বলেছে।  সেদিন যাঁরা ফেটে পড়েছিলেন প্রতিবাদে, পয়সা দিয়েই তাঁদের টুইটের কনটেন্ট লেখানো হয় জানি, মাইনে করা সে সব লোকজন তাঁদের হয়ে টুইট করেন তাও জানি৷ কিন্তু সে সব ফেটে পড়া ব্যঙ্গ, স্যাটায়ার তো তেনাদের নামেই থাকে, কাদের নামে? বেশ তাহলে নাম করা যাক।৷ প্রথম নাম, বিগ বি৷ তেনার নাম প্রথমে কেন, সে প্রশ্ন অন্তত কেউ করবেন না৷ তো সেদিন সুভাষ নাগরে, ‘সরকার’ কী বলিয়াছিলেন, যখন টাকা হু হু করে নামছিল? ৩১ আগস্ট ২০১৩, বিগ বি টুইট করেছিলেন, “New word added to English dictionary : RUPEED ( ru – pee – d ) , Verb MEANING : move downward, typically rapidly and freely without control.
USAGE : ” I tripped and rupeed from the stairs ”

ব্যঙ্গ ঝরে ঝরে পড়ছিল৷ তিনি বলেছিলেন, ইংরিজি ডিকশেনারিতে নতুন শব্দ, রুপিড৷ ক্রিয়াপদ, মানে হল, তলায় নামা, হু হু করে নামা৷ বাক্যের ব্যবহার ও দিয়েছিলেন৷ আমি সিড়িঁ থেকে রুপিড হয়েছি, মানে টাকা যেমন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে, যে দ্রুত গতিতে পড়ছে, আমিও সেরকম পড়ে গিয়েছি।  ৩১ আগস্ট, ২০১৩ তে ডলারের বিনিময় মূল্য কত ছিল? ৬৬ টাকা ৭ পয়সা।  আজ কত? ৭৭ টাকা ৫০ পয়সা।  অমিতাভ বচ্চন সুস্থই আছেন, কিন্তু মুখে তালা৷  টুইটও করেননি? ওনার মাইনে করা টুইটওলারা কোথায়?

অমিতাভ বচ্চন টুইট করেছেন, বলিউডের বিগ বি৷ বাকিরা পিছিয়ে থাকবেন কেন? মাঠে নামলেন ঘুংঘটকে আড় সে জুহি চাওলা৷ ওই আগস্ট মাসেই তিনি লিখলেন, The only way the Rupee can save itself is by tying a rakhi to the Dollar and saying “meri raksha karna” Happy Rakshabandhan! টাকাকে বাঁচতে হলে ডলারকে রাখি পরাতেই হবে৷ বলতে হবে, আমাকে রক্ষা করো।  কি উইট, স্ক্রিপ্ট রাইটার ছাড়া একটা শব্দও মুখে আসে না, তাঁর টুইটে এমন ব্যঙ্গ৷ তো এখন কোথায়? ওই যে ঘুংঘটকে আড় পে, ঘোমটার আড়ালে চলে গিয়েছেন। এর বহু আগে জুন ২০১২ তে মাঠে বিবেক অগ্নিহোত্রী, লিখলেন, May ur happiness increase like Petrol Price, May ur sorrow fall like Indian Rupee n May ur joy fill your heart like corruption in India. টাকার দাম তখন আরও কম, আজ ৭৭ টাকা ৫০ পয়সা, তিনি কোথায়? আরেকটা ফাইল খুলছেন, যাতে করে আরও তীব্র মুসলমান ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়া যায়৷

মাঠে ছিলেন গুরুদেব শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর, প্রেম আর ভালোবাসা বিলোনো এনার কাজ৷ তিনি বললেন, It is refreshing to know that the rupee will get stronger at Rs.40/- per dollar if Modi comes to power।  কোনও রাখঢাক নেই সরাসরিই মোদি ভজনা৷ মোদিজি ক্ষমতায় এলে এক ডলারে ৪০ টাকা পাওয়া যাবে৷ মহাপুরুষ তো, তাই ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন।  এখন এক ডলারে ৭৭ টাকা ৫০ পয়সা, তিনি কোথায়? প্রেম বিলোচ্ছেন।  অনুপম খের, সেই সময়েই তিনি বুঝেছিলেন, তেল দিতেই হবে৷ ২৮ আগস্ট, ২০১৩ তিনি টুইট করলেন, Sab kucch gir raha hai. Rupaye ki keemat aur Insaan ki keemat. “Hum oos Desh ke Wasi hai Jis Desh mein Ganga Roti hai.” সব কিছু পড়ছে, টাকার দাম পড়ছে, মানুষের দামও কমছে, আমরা সেই দেশের বাসিন্দা, যেখানে গঙ্গা কেবল কাঁদে। এখন অনুপম খের চুপ, কারণ, গঙ্গা এখন অট্টহাস্য করছে।

সেদিন পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ছিল, তা নিয়ে সরব ছিলেন এনারাও৷ ২৪ মে ২০১২, বিগ বি লিখছেন, Petrol up Rs 7.5 : Pump attendent – ‘Kitne ka daloon ?’ ! Mumbaikar – ‘2-4 rupye ka car ke upar spray kar de bhai, jalana hai !!’ কি হিউমার, সেদিন মুম্বাই এ পেট্রলের দাম ছিল ৭৮ টাকা ৫৭ পয়সা, আজ ১০০ পার, সুভাষ নাগরে ঘুমোচ্ছেন। অনুপম খের লিখেছিলেন, Asked my driver,” Why ru late?””Sir.Came by Cycle.
“What happened to motorcycle.”His reply,” Sir, it is kept at home now as a showpiece.”-) এখন তাঁর ড্রাইভার কিসে চেপে আসেন? অনুপম খের সেটা আর লিখছেন না।  বিবেক অগ্নিহোত্রি লিখেছিলেন, May ur happiness increase like Petrol Price, May ur sorrow fall like Indian Rupee n May ur joy fill your heart like corruption in India এখন হ্যাপিনেশ এর হাল কী? তিনি চুপ করে বসে আছেন।

খতরোঁ কা খিলাড়ি অক্ষয় কুমার, সেই অক্ষয় কুমার যিনি স্বেচ্ছায় দেশের নাগরিকত্ব ছেড়েছেন, কানাডার নাগরিকত্ব নিয়েছেন, সেই অক্ষয় কুমার যিনি প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচনের আগে সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি আম কেটে খান না চুষে খান, তিনি বলেছিলেন, Guys, I think it’s time to clean up your bicycles and hit the road! As per sources, expecting another petrol price hike. এখন তিনি কোথায়?

এরকম আরও অনেকে আছে৷ যারা সেদিনে মাঠে নেমেছিল, প্রতিবাদ করেছিল, ব্যঙ্গ করেছিল, বেশ করেছিল৷ করারই তো কথা, টাকার দাম কমছে, আমি কিছু বলবো না? কিন্তু সমস্যা হল, তখন এনারা বলেছিলেন, যখন ডলার এক্সচেঞ্জ রেট কমবেশি ৬৬ টাকা৷ আজ যখন টাকার দাম আরও পড়ে এক নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে, ডলার এক্সচেঞ্জ রেট ৭৭ টাকা ৫০ পয়সা, তখন এনাদের গলায় আওয়াজ নেই।  তিনটে কারণ হতে পারে।  প্রথম কারণ, এনারা সক্কলেই বিজেপি নেতা, কর্মী।  এটা বললে তো চুকেই যায়, কারণ আগেই বলেছি, সরকারে থাকা দলের নেতা কর্মীরা এরকম এক অবস্থায় মুখে তালা দেবেন৷ এটাই স্বাভাবিক।  দ্বিতীয় সম্ভাবনা হল, সেদিন বলার জন্য বিনিময় মূল্য ছিল, কত পেয়েছিলেন, জানা নেই, কিন্তু পেয়েছিলেন তো বটেই৷ এবং কে না জানে এনারা টাকা পেলে যে কোনও স্ক্রিপ্ট মুখস্ত করে বলে দিতেই পারেন।  তৃতীয় হল, আজ মুখ খুললে যা হতে পারে, সেটা ওনারা জানেন৷ জানেন যে পরমূহুর্তেই সিবিআই, থেকে ইডি, ইনকাম ট্যাক্স এসে হাজির হবে৷ অতএব চুপ করে থাকাই ভালো। এই তিনটের কোনটা সত্যি? আপনার কোনটা মনে হয়?

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Election | মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর কেন্দ্রে অবাধ নির্বাচনের লক্ষে আঁটসাঁট নিরাপত্তা, দেখুন ভিডিওতে
09:32
Video thumbnail
Loksabha Eledction 2024 | মালদহ উত্তর ও মালদহ দক্ষিণে ভোটের কী পরিস্থিতি দেখুন ভিডিওতে সরাসরি
04:48
Video thumbnail
Loksabha Eledction 2024 | আজ তৃতীয় দফার ভোটে মালদহে কী পরিস্থিতি দেখুন ভিডিওতে সরাসরি
03:51
Video thumbnail
Lok Sabha Election 2024 | মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় কংগ্রেস নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি
06:17
Video thumbnail
Lok Sabha Election 2024 | ভোট শুরু হতেই ইভিএম খারাপ–বোমাবাজি–মারধর, তপ্ত মুর্শিদাবাদ
15:23
Video thumbnail
Eledction 2024 | তৃতীয় দফা ভোটে মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর কেন্দ্রে কোথায় কী পরিস্থিতি দেখুন ভিডিওতে
08:38
Video thumbnail
Lok Sabha Election 2024 | গুজরাটের গান্ধীনগর কেন্দ্রে মোদির সঙ্গে ভোট দিতে এলেন শাহ, দেখুন ভিডিওতে
02:07
Video thumbnail
Election 2024 | মালদা-মুর্শিদাবাদের ৪ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ, অবাধ নির্বাচনের লক্ষে আঁটসাঁট নিরাপত্তা
13:22
Video thumbnail
Loksabha Eledction 2024 | তৃতীয় দফা ভোটে কেন্দ্রগুলিতে কড়া নজরদারি কেন্দ্রীয় বাহিনীর
03:12
Video thumbnail
Eledction 2024 | চার আসনে মধ্যে মালদহ উত্তর ও মালদহ দক্ষিণে ভোটের কোথায় কী পরিস্থিতি দেখুন ভিডিওতে
17:21