skip to content
Wednesday, June 26, 2024

skip to content
Homeচতুর্থ স্তম্ভইন্ডিয়া জোটকে জেতার জন্য কী কী করতে হবে?

ইন্ডিয়া জোটকে জেতার জন্য কী কী করতে হবে?

Follow Us :

ভক্তকুল হেসে কুটোপাটি হবেন, তাঁদের আবার আপব্রিঙ্গিং-এর সমস্যা আছে, তাই নোংরা ভাষায় গালাগালি করে নিজেদের পেডিগ্রির প্রমাণও দেবেন। কিন্তু আমি এই পাহাড়প্রমাণ হারের পরেও বলব যে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক অবস্থার হিসেব নিকেশে বিরোধীদের জেতার সম্ভাবনা তো আছে। তাদের যাবতীয় সমস্যাগুলোর সমাধান নিয়ে নতুন উদ্যমে মাঠে নামলে সব হিসেব উল্টে যেতে পারে, হ্যাটট্রিক রুখে দেওয়া যেতেই পারে। আচ্ছা আমি এই কথাগুলো এত জোর দিয়ে বলছি, তার ভিত্তি কী? আমি জ্যোতিষ নই, রাজনীতির ছাত্র হিসেবে, এক সাংবাদিক হিসেবে রাজনৈতিক সম্ভাবনাগুলো খতিয়ে দেখাটাই আমার কাজ, সেটাই আমি করছি। তো আগের কথায় আসি, আমি এই কথাগুলো এত জোর দিয়ে বলছি কী করে? খুব সোজা আর সাধারণ একটা তথ্য আছে যা সব্বার জানা, সেটা হল ঠিক এই মুহূর্তে বিজেপি সমেত ছোট দল এমনকী ভেঙে যাওয়া শিবসেনা বা এনসিপি-র ভোট যোগ করলে এনডিএর পক্ষে ভোট আছে ৪০ শতাংশের সামান্য কম। অঙ্ক বলছে তার মানে ভোট দিয়েছেন অথচ শাসকদলকে দেননি, এনডিএ-কে দেননি দেশের প্রতি ১০০ জনের ৬০ জন মানুষ। হাজার প্রচারের পরে, ইডি-সিবিআই বিরোধী নেতাদের দলে দলে গ্রেফতারের পরে, ৮০ কোটি মানুষকে ফ্রি র‍্যাশন দেওয়ার পরে, দেশের প্রায় প্রত্যেকটা টিভি চ্যানেল বা সংবাদমাধ্যমে লাগাতার বিজেপির পক্ষে প্রচারের পরেও ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ বিজেপিকে ভোট দেয়নি। কাজেই সরল পাটিগণিতের হিসেবেই যতক্ষণ পর্যন্ত এনডিএ বা বিজেপি ৫১ শতাংশ ভোট পাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কেবল বিরোধী ভোটের এক জায়গাতে আসাটাই তাদের হারানোর জন্য যথেষ্ট।

মানে এর জন্য বিজেপির ভোট কমার দরকার নেই, বিজেপি বিরোধী কোনও হাওয়ার দরকার নেই, কোনও অ্যান্টি ইনকমব্যান্সি ভোটের ক্যালকুলেশনের দরকার নেই, কেবল বিরোধী ভোটের সংযুক্তিকরণই যথেষ্ট বিজেপিকে হারানোর জন্য। এবং মাথায় এটাও রাখুন, বিজেপি যে সব আসনে জিতেছে তার ৫০ শতাংশ বিরাট মার্জিনে জিতেছে, কাজেই সেসব আসনে আরও ভোট বাড়লেও বিরোধীদের কিছু এসে যায় না। মানে এই ৪০ শতাংশ ভোটের সামান্য অংশ গেল কি থাকল তার উপরে বিজেপিকে হারানো যাবে এমনটাও নয়, কেবল উল্টোদিকে থাকা ৬০ শতাংশ ভোটের ৮০ শতাংশকে নিজেদের জোটের দিকে নিয়ে আসা, তাহলেই ছবি পাল্টে যাবে। অবশ্যই ওড়িশায় বিজেডি, অন্ধ্রতে জগন রেড্ডির দল, উত্তর পূর্বাঞ্চলে ছোট ছোট দলের ভোট আছে, তারা কিছু আসন জিততেও পারে, কিন্তু এসব দল তো দিল্লিমুখী, যাদের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে তাদের দিকেই ঢলে যাবে এই দলগুলো। ইতিমধ্যে ইন্ডিয়া জোটে যারা এসেছে, আরও যারা আসতে পারে, তাদের সবাইকে নিয়ে একটা শক্ত জোট তৈরি করতে পারলে কাজটা অনেকটাই এগোবে। এবারে পরের ধাপে আসি। এটা বলা খুব সহজ, একটা শক্তপোক্ত জোট তৈরি করতে হবে। এই জোটটা শক্তপোক্ত হবে কীভাবে? গ্রামে ডাকাত পড়লে গ্রামের প্রত্যেক মানুষ একসঙ্গে রুখে দাঁড়ায়? গব্বর সিং আসত, বন্দুকের ডগায় মানুষকে দাঁড় করিয়ে লুঠ করে নিয়ে যেত। ক’জন আটকাতে আসত? তাদের চেয়ে, মানে ওই ডাকাতদের চেয়ে অনেক বেশি গ্রামবাসী, তারা না জোট বেঁধেছে, না প্রতিরোধে নেমেছে। তাদের রুখে দাঁড়ানোর জন্য দরকার হয়েছে জয় আর বীরুর, নেতৃত্বের, বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্ব থাকলেই জোট বাঁধা সম্ভব। আর এই বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে হলে মানুষের কাছে যেতে হবে, গো টু দ্য মাসেস, পুরনো থিওরি।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | বিরোধীরা ২০২৪-এ আবার হারলে, কোন কোন কারণে হারবে?

কীভাবে মানুষের কাছে যাবেন বিরোধীরা? কী নিয়ে যাবেন? যাওয়ার উপায় কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ দেখিয়েছেন, কৃষকরা দেখিয়েছেন বারে বারে, শ্রমিকরাও দেখিয়েছেন। কৃষকদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে, মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইসের কী হল? সারের দাম বাড়ছে, সেচের দাম বাড়ছে, কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন, দেশজুড়ে কৃষকদের পদযাত্রা হোক, সঙ্গে থাকুন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা। ন্যূনতম মজুরির বৃদ্ধির জন্য অসংগঠিত শ্রমিকদের নিয়ে রাস্তায় নামুন, সব দল মিলে নামতে হবে। লক্ষ লক্ষ সবল হাতের কাজ নেই, শিক্ষা ক্রমশ চলে যাচ্ছে বড়লোকেদের হাতে, মেডিক্যাল থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হতে হলে ২০-৩০-৫০ লক্ষ টাকা, ১ কোটি টাকা ডোনেশন দিতে হচ্ছে। অন্তত একদিন হরতাল হোক, হরতালের ডাক দিয়ে ঘরে বসে মাংস আলুর ঝোল নয়, রাস্তায় থাকুন বিরোধী নেতারা। মানুষের ইস্যু নিয়ে মানুষের কাছে যান, সত্যি কথা বলুন, বলুন ভুল হয়ে গেছে। ওয়েলফেয়ার স্টেটের বদলে, কল্যাণকামী রাষ্ট্রের বদলে মরীচিকার পিছনে ছুটেছিলাম সব্বাই, বলুন কটা হাইওয়ে, মল আর কারখানা দিয়ে দেশের অর্থনীতি তৈরি হয় না। কৃষির আধুনিকীকরণ, কৃষিজাত পণ্যের বাজার তৈরি করা, ছোট, মাঝারি শিল্পের সাহায্যে এগিয়ে আসা, এগুলো রাষ্ট্রের কাজ। বিরোধীরা মানুষের কাছে যান, বলুন হিন্দু মৌলবাদ আর ইসলামিক মৌলবাদের মধ্যে কোনও ফারাক নেই, তারা একে অন্যের হাত ধরে চলে। বলুন সংখ্যালঘুদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে দেখে তাদের কিছু কাঠমোল্লাদের সুযোগ সুবিধে দেওয়া বন্ধ হবে, সংখ্যালঘুদের সার্বিক উন্নয়নের কাজ হবে, বলুন যে নতুন সরকারের প্রায়রিটি লিস্টে এক নম্বরে থাকবে শিক্ষা, প্রতিটা মানুষের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা। বলুন মাতৃভাষার প্রয়োজনীয়তা, বলুন আর কেউ ভুখা পেটে মরবে না, বলুন আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিলে মিশে থাকব, কিন্তু ভারতবর্ষের সীমানা নিয়ে, সংপ্রভুতা, সভেরিনিটি নিয়ে জিরো টলারেন্সের কথা। বলুন দেশের আপামর মানুষের ধর্মীয় আবেগে কোনওরকম আঘাত সহ্য করা হবে না।

এসব জরুরি কথা ওই ৬০ শতাংশ মানুষের মনের কথা, তারা সেই জন্যও এই আকালেও হিন্দু হৃদয় সম্রাটের কথা না শুনে, তাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। হ্যাঁ, তাদের কাছে তাদের কথা, তাদের দাবিগুলো নিয়েই যেতে হবে। একটা করে সভা ডাকবেন, নেতায় নেতায় আলোচনা হবে, হেঁ হেঁ, হ্যাঁ হ্যাঁ, এসবে কাজের কাজ হবে না। সে জোটের নাম ইন্ডিয়াই হোক আর ভারতই হোক, তাকে বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। এবং এই জোট কেন? উদ্দেশ্য তো আজকের দিনে যাঁরা আছে তাঁদের ক্ষমতা থেকে নামানো, সরকারটাকে বদলে নিজেদের সরকার বানানো। তো তাঁদের নামানো হবে কী করে? লাঠি, বন্দুক, বোমা দিয়ে? সে যাঁরা করছেন, করবেন। দেশের এই বিরোধী দলেদের তো সেটা লক্ষ্য নয়, তাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন, মানুষকে ভোট দিতে বলবেন, এই তো। তাহলে আগে নির্বাচনের আসন ভাগাভাগিতে মন দিন। একধারে মানুষের কাছে মানুষের ইস্যু নিয়ে যান, মানুষের সঙ্গে রাস্তায় থাকুন, অন্য ধারে তাঁদের বলুন আপনার এলাকাতে ইনি আমাদের সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রতিনিধি, আপনারা এঁকে নির্বাচিত করুন। তার বদলে নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে লড়ে মরলে, বা আরও ভালো করে বললে আত্মহত্যা করতে চাইলে আটকাচ্ছে কে? কিন্তু তার জন্য তো নরেন্দ্র মোদিকে দায়ী করা যাবে না। আদর্শগত মিল নেই? নেইই তো। বিজেপির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য দুই দল কংগ্রেস আর সিপিএম-এর আদর্শগত মিল নেই, মিল হওয়া সম্ভব? না তাও নয়। এদের বাদ দিলেও যে দলগুলো আছে তাঁদের মধ্যে আদর্শগত মিল নেই, থাকা সম্ভবও নয়।

কিন্তু আদর্শ নিয়ে থাকুন না তাঁরা, আপাতত মোদ্দা কিছু বিষয়কে বেছে নিন। কৃষকের জন্য মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পের বিকাশ, কৃষির আধুনিকীকরণ, কৃষিজাত পণ্যের বাজার, সংবিধানে যা যা বলা আছে, ধর্ম নিরপেক্ষতা, বহুস্বর, নাগরিকের জন্য খাদ্য বস্ত্র বাসস্থানের পুরনো দাবি। এগুলো নিয়ে একমত হতে গেলে কোন আলাদা আদর্শের দরকার পড়ে? এই ইস্যুগুলো সামনে রেখে এক জায়গায় আসুন বিরোধীরা, যে রাজ্যে যে বিরোধী দল শক্তিশালী, তাদেরকে সামনে রেখে এই জোটের আসন সমঝোতা হোক, খুব দ্রুত তা এক আকার নিক। জোটের ঝুলিতে ৪৫-৪৬ শতাংশ ভোট পড়লেও মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার কথা মাথাতেও আনতে পারবে না। কিন্তু আপনি বলবেন এত কিছু কি হবে? আমি তো একবারও বলিনি হবে, এতদিন তো হয়নি, কাজেই বলব আর হয়ে যাবে তা হয় নাকি? কিন্তু এগুলো হলে তাহলেই একমাত্র বিজেপি সরকারকে হারানো যাবে, না করতে পারলে নরেন্দ্র মোদি হ্যাটট্রিক করবেন। কনফ্লিক্টিং ইন্টারেস্ট নিয়ে আর যাই হোক রাজনৈতিক জোট সম্ভব নয়। আর বিরোধীদের চূড়ান্ত স্বার্থ সংঘাত আছে, তারা আসন সমঝোতায় আসতে পারবে না আর সেটাই বিজেপির একমাত্র ভরসা, অন্য কোনও অস্ত্রে তাঁদের জেতা সম্ভব নয়। জোটে থাকব আর সকালে সন্ধ্যায় নিয়ম করে একে অন্যকে গালিগালাজ দেওয়ার পরে আশা করব যে বিজেপি হেরে যাবে, এটা হল এক ধরনের ভ্যানতাড়া যা এখনও আমাদের বিরোধী জোটের সর্বাঙ্গে লেগে আছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Teesta River | Mamata | Modi | মমতাকে বাদ দিয়ে, মোদি-হাসিনা বৈঠক কোথায় গড়াবে তিস্তার জল?
03:57:26
Video thumbnail
Arvind Kejriwal | মুক্তি পাবেন কেজরিওয়াল? জানা যাবে আজ
02:23:55
Video thumbnail
স্পিকার নির্বাচন প্রথম নয়, আগেও হয়েছে, জানুন ভারতের ইতিহাস
00:00
Video thumbnail
Y. S. Jagan Mohan Reddy | স্বাধীন ভারতে প্রথম স্পিকার নির্বাচন সমর্থন করবেন জগন?
00:00
Video thumbnail
Lok Sabha Speaker | ওম বিড়লাকেই স্পিকার পদে মনোনয়ন NDA-র, INDIA দিলো পাল্টা মনোনয়ন
00:00
Video thumbnail
Speaker | স্পিকার নির্বাচনে বড় ঝটকা ধাক্কা খেল বিজেপি! INDIA-কে সমর্থন করল এই দল
00:00
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | শপথ নিয়ে কী বললেন অভিষেক? দেখুন ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Saumitra Khan | হাজিরা না দিলে গ্রেফতার ! মহাসঙ্কটে সৌমিত্র খাঁ
00:00
Video thumbnail
INDIA | স্পিকার নিয়ে জরুরি বৈঠকে INDIA, তৃণমূল কি আছে বৈঠকে ?
00:00
Video thumbnail
চতুর্থ স্তম্ভ | Fourth Pillar | সংবিধান, সহমত এবং আমাদের পরধান সেভক, চওকিদার
00:00