Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeScrollসুইচ হিট: ম্যাকেলাম ৩  দ্রাবিড় ০

সুইচ হিট: ম্যাকেলাম ৩  দ্রাবিড় ০

ম্যাকেলাম এখানেই ক্রিকেটের পেপ গুয়ার্দিওলা হিসেবে উত্থিত হচ্ছেন যে কেউ যা ভাবেনি তিনি ভেবেছেন

Follow Us :

খুব সজ্ঞানে শিরোনামটা দেওয়া। ইয়েস , ইংল্যান্ড ১ ভারত ০ যতই সিরিজ স্কোরবোর্ড দেখাক, তার পেছনে অলক্ষে কোচেদের ব্যক্তিগত স্কোরবোর্ড ভেসে উঠেছে। আর তাতে তিনি ব্রেন্ডন ম্যাকেলাম ব্যাপক এগিয়ে গিয়েছেন। দ্রাবিড় শুধু পরাজিত নন। নকআউট হয়ে রিং-য়ের বাইরে।

অবিশ্বাস্য এক ক্রিকেট -রোববার যেখানে দুই গোলার্ধের দুই শহরে পাশার চাকা সম্পূর্ণ উল্টে বিশ্বক্রিকেটকে তাজ্জব করে দিয়েছে। বিস্ময়ের বিশাল বাষ্পগুলো উড়তে উড়তে কোথাও যেন মনে হচ্ছে তার মাত্রা দক্ষিণ গোলার্ধে যত বেশি– উত্তরে তার আদ্ধেকও নয়।

শামের জোসেফের কীর্তি শরীর বিজ্ঞানকে তুচ্ছ করে অসামান্য পেসবোলিং তৈলচিত্র।

অলি পোপের ম্যাচ ঘোরানো শৌর্য —বিজ্ঞানকে ভয়ঙ্করভাবে সঙ্গে নিয়ে ক্রিকেটের ময়দানে নবযুগের আবাহন।

আর ঠিক এখানেই সেনাপতিদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে হাজির হচ্ছেন তাঁদের গুরুরা। গত কুড়ি বছর ভারতে জিনিসপত্রের দামের মতোই লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে ক্রিকেট কোচেদের গুরুত্ব। প্রাক ১৯৮৬ কোচ বলে কোনো বস্তুই ক্রিকেটে হাজির ছিল না। ববি সিম্পসনের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ না জিতলে তার পরেও কোচেদের বাজারদর তৈরি হতে কতবছর লাগত কে জানে ? তিরাশি বাদ দিলাম। সাতাশির বিশ্বকাপ বাদ দিলাম। ঊননব্বইতে শ্রীকান্তের নেতৃত্বে ভারত যে পাকিস্তান সফরে গেল এত হাইপ্রোফাইল সফরেও কেউ ক্যাপ্টেনের মাথার ওপর কাউকে চড়ায়নি। ক্যাপ্টেন তখনও প্লেনের পাইলটের মতো স্বয়ম্ভূ। তাঁর সঙ্গে কো পাইলট, ফার্স্ট অফিসার যতই থাক তারা নিছকই সিনিয়র ক্রিকেটার। চরম টার্বুলেন্সে প্লেন কীভাবে উড়বে তার অন্তিম ডাক পাইলটের এবং একমাত্র পাইলটের।

কিন্তু সেই সময় ছিল ক্রিকেটের নতুন প্রস্তর যুগ। থোড়াই আজকের দুনিয়া। যেখানে পৃথিবী যেমন ডিজিটালের। ক্রিকেট তেমনি আজ ডেটা সর্বস্ব সংঘাত। যত না মাঠে তার চেয়ে বেশি ল্যাবরেটরিতে।

বিশ্বকাপ ফাইনাল শুরুর আগে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে মাঠের মধ্যে দেখা হল অস্ট্রেলিয়ার মুখ্য নির্বাচকের। অশ্বিন অবাক হয়ে জানতে চাইছেন কী ব্যাপার টস জিতে বল করছেন ? কাপ ফাইনালে টস জিতে সাধারণত লোকে চেস করে না । ভারতের মতো টার্নিং ট্রাকে তো আরোই না।

নির্বাচক : পরপর যে তিনটে ট্র্যাক আছে সেখানে খেলা হলে তাই করতাম। কিন্তু এই কাদা কাদা রঙা ট্র্যাকটায় আমরা রিসার্চ করে দেখেছি রাতের দিকে বল পড়ে সুন্দরভাবে ব্যাটে আসে।

ভারতের ইনিংস যখন শুরু হল অশ্বিন –ভারতের ক্রিকেটবিজ্ঞানী স্তম্ভিত হয়ে দেখলেন রোহিত-শুভমনের জন্য হলুদ জার্সি যা ফিল্ড সাজিয়েছে তিনি প্যাট কামিন্স হলে অবিকল তাই করতেন। স্তম্ভিত হওয়ার দ্বিতীয় এপিসোড হাজির হল যখন অস্ট্রেলিয়া ব্যাট করল। পিচ তো সত্যি ট্রাভিস হেড আর লাবুশেনের জন্য সহজ হয়ে গেল।

এমনিতেই ভারতে হওয়া ফাইনালে মঙ্গলগ্রহ থেকেও জেতার জন্য আবদার আসে। সেই চাপ নিতে পারে না ভারতীয় ক্রিকেটার। তার ওপর এই পর্যায়ের ডেটা এনালিসিস। ফাইনালে কোন টিম জিতেছিল সেটা এখন আর মনে হয় না অঘটন ছিল বলে।

আমেদাবাদে যা ঘটেছে নিজামের শহরেও তাই। আবার ডেটার ভিত্তিতে তৈরি ক্রিকেট মডেল সর্বোচ্চ পরিকল্পনা হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। এদেশে তৈরি না হয়ে ইংল্যান্ড যখন আবুধাবিতে নেট প্র্যাকটিস করছিল, ক্রিকেটমহলে অনেকে বাঁকা হেসেছিলেন। বলেছিলেন ভারতে খেলতে হলে মরু শহরে তৈরি হওয়ার মানে হয় না। এখন মনে হচ্ছে রাহুল দ্রাবিড়ের উচিত ছিল আবুধাবিতে গোয়েন্দা মোতায়েন করা। তাহলে তিনি খবর পেতেন ইংল্যান্ড ওখানে ঘাঁটি গেড়ে গোপনে কী করতে চেয়েছে?

এখন বোঝাই যাচ্ছে ওখানে ম্যাকেলাম টিমকে তৈরি করছিলেন রিভার্স সুইপ ও সুইচ হিট—ভারতীয় স্পিনারদের বিরুদ্ধে এই দুটো শট নাগাড়ে খেলার জন্য। ভারতে এসে অশ্বিন-জাদেজার বিরুদ্ধে ক্রমাগত এই দুটো স্ট্রোক খেলা যে সম্ভব অতীতে কেউ ভাবেইনি। কিন্তু ম্যাকেলাম এখানেই ক্রিকেটের পেপ গুয়ার্দিওলা হিসেবে উত্থিত হচ্ছেন যে কেউ যা ভাবেনি তিনি ভেবেছেন।

এখনো মনে করি বাজবল নিয়ে ঢক্কানিনাদ বাড়াবাড়ি। ওভার পিছু চার করে স্কোর তিনি ইংল্যান্ড কোচ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার অনেক আগে মেদিনী দেখেছে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হেডেন। ভারতের হয়ে সেহবাগ এটাই সফলভাবে করে গিয়েছেন। রক্ষনশীল ইংল্যান্ড কখনও চেষ্টা করেনি। নিউজিল্যাণ্ডের ঝাঁকুনির জন্য বসে থেকেছে সেটা তাদের সমস্যা।

কিন্তু সাহসী ম্যাকেলাম যেভাবে ভেবেছেন ,অদ্যাবধি কোনো ক্রিকেট কোচ ভাবেনি। টি টোয়েন্টি যুগের মানুষ বলেই হয়তো টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে বেনারসের ঘাটের মতো কোনো সূচিতা নেই তাঁর।

সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ার ঔদ্ধত্বে তিনি টি টোয়েন্টির দুটো শট বার করে এনেছেন ভারতীয় স্পিনার সংহারে। উলটোদিকে ভারত স্ট্রাটেজির কোনো পরিবর্তনই করেনি। বরঞ্চ অত্যন্ত আত্মসন্তুষ্ট ছিল কেপটাউনে খারাপ উইকেটে জেতার পর যে নিজের দেশে আমরা নামবো খেলবো জিতব। ওরা নামলেই আমাদের দুটো জার্মান শেফার্ড ছেড়ে দেব। সঙ্গে একটা ডোভারম্যান রাখছি –অক্ষর প্যাটেল। যাকে অতীতে খেলতে হাবুডুবু খেয়েছিস।

দ্রাবিড় কোচিংয়ের পাশাপাশি দক্ষ সংস্কারবাদী হিসেবেও পরিচিত। অথচ আহমেদাবাদের মতো এখানেও উদ্ভাবনী শক্তির মোকাবিলায় তিনি ব্যর্থ। ভাবতেই পারেননি তাঁর বিখ্যাত স্পিনারদের ওপর এমন আঘাত নেমে আসতে পারে। বোঝেননি কোহলি সরে যাওয়ার পরেও মিডল অর্ডারে যুব শক্তি আনতে গিয়ে কী ভুল করেছেন। যে টিমে কোহলি নেই। পন্থ অসুস্থ। তারা তো পূজারা বা রাহানেকে ফেরাবে। কী হাস্যকর কথা যে সামনে তাকাবো।

রোহান বোপান্না তেতাল্লিশে অস্ট্রেলীয় ওপেন জিততে পারেন কিন্তু এখানে তুমি ৩৭ হয়েছো কী বাদ । দ্রুত মনে পড়ছে আটত্রিশ বছরের এক ভারতীয় মিডল অর্ডারকে ইংল্যান্ডের মাঠে চারটে সেঞ্চুরি করতে দেখেছি। রাহুলের যদি তাকে মনে না পড়ে নিজের আধার কার্ডের দিকে তাকালেই মনে পড়বে।

ব্যাটসম্যানরাও আলাদা করে স্পিনারদের মহড়া নেওয়ার জন্য তৈরি হয়নি। ধরে নিয়েছে সনাতন যা যুগ যুগ ধরে হয়ে এসেছে তাই হবে। এদের উড়িয়ে দেবে আমার ব্যাটিং ইউনিট। এরা সবাই টিটউনটির ফসল। জানে এই সব শট খেলতে। কিন্তু রাহুল ভাবেননি যে এখানে ডিজিট্যাল যুগের অস্ত্র প্রয়োজন হবে।

দোসরা ফেব্রুয়ারির পরের টেস্টের আগে ভারত হয়তো গুছিয়ে নেবে। পাঁচ টেস্ট সিরিজ যখন —প্রত্যাবর্তনের বেশ অনেক জিবি অবশিষ্ট থাকবে। কিন্তু প্রথম রাউন্ডে যে টেস্ট এবং কেরিয়ার রেকর্ডে তাঁর অনেক পেছনে থাকা ম্যাকেলাম রাঙিয়ে দিয়েছেন তা তো দিনের আলোর মতো পরিষ্কার । এখন ভারতকে সিরিজ নিতে হলে এই স্টাইলের কপি করে জিততে হবে। তাদের ব্যাটসম্যানদেরও বিপক্ষ স্পিনারের লাইন নষ্ট করার জন্য দুঃসাহসিক হতে হবে।

কী করবেন দ্রাবিড়? তিনি তো শুধু মাঠে হারেননি। ক্লাসরুমেও হেরেছেন। জয় হিসেবে তাই বেন স্টোকসদেরটা যুগোত্তীর্ণ। এই জাতীয় যে সিডনিতে বসে স্টিভ ও-র মনে হতে পারে আমার আমলে টি টোয়েন্টি ছিল না তো কী ঈশ, আমি কেন ভাবিনি?

দ্রাবিড় জানতেন না টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই যে এত বড় পরীক্ষা ইংল্যান্ড সিরিজ নিতে পারে।পরের টেস্ট না জিতলে কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া নামক বেসরকারি ক্রিকেট বোর্ড হয়ত এমনও বলবে, এর চেয়ে কুয়াদ্রাতকে আনো।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
বাংলার ৪২ | বিষ্ণুপুরে কোন দল এগিয়ে?
04:39
Video thumbnail
চতুর্থ স্তম্ভ | নির্বাচনের আগে আসুন একে একে মোদিজির জুমলাগুলো মনে করিয়ে দিই (পর্ব - ১)
11:47
Video thumbnail
আজকে (Aajke) | জিতলে ভাইপোকে জেলে পুরব, ২০২৫-এই ভোট করাব
07:52
Video thumbnail
Politics | পলিটিক্স (07 May, 2024)
12:28
Video thumbnail
Beyond Politics | ভাইরাল ভিডিওর সত্যি-মিথ্যে
07:50
Video thumbnail
বাংলা বলছে (Bangla Bolche) | এখনই বাতিল নয় ২৬ হাজার চাকরি, বেতন ফেরতের নির্দেশেও সুপ্রিম স্থগিতাদেশ
35:28
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | বেতন ফেরতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
10:50
Video thumbnail
সেরা ১০ | আপাতত চাকরি বাতিলে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ, সুপ্রিম কোর্টের সংক্ষিপ্ত রায়ে বড় সিদ্ধান্ত
18:06
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধে রণহুঙ্কার | রেশন দিতে কত টাকা লাগে? : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
04:34
Video thumbnail
SSC Scam | বেতন ফেরতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
07:06