গুয়াহাটি: দেশজুড়ে মোটেই রামের নামে ঢেউ ওঠেনি। অযোধ্যায় প্রাণপ্রতিষ্ঠার নামে যা হয়েছে, তাকে বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচি বলে নরেন্দ্র মোদিকে শূলে চড়ালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। রাহুলের দাবি, প্রধানমন্ত্রী মোদি গত সোমবার একটি চমক-প্রদর্শন করলেন।
কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতির কাছে মঙ্গলবার জানতে চাওয়া হয়, দেশে যে রামভক্তির স্রোত উঠেছে, সে বিষয়ে তাঁদের পরিকল্পনা কী? তার জবাবে রাহুল বলেন, স্রোত ওঠার মতো কিছুই ঘটেনি। এটা বিজেপির একটা রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল। নরেন্দ্র মোদিজি সেই অনুষ্ঠানটি করেছেন, প্রদর্শনী করেছেন। এসব কিছুই ভালো। কিন্তু আমাদের সামনে পঞ্চ ন্যায়বিচারের পথ রয়েছে, যা দেশকে প্রকৃত অর্থে শক্তিশালী করবে।
আরও পড়ুন: রামরাজ্য তো হল, সীতার ‘অগ্নিপরীক্ষা’ বাজেট?
রাহুল জানান, বিচারের পাঁচটি স্তম্ভ আমরা খাড়া করেছি। আমরা যুবদের জন্য ন্যায় চাই, অংশীদারিত্বের ন্যায় চাই, নারী, কৃষক এবং শ্রমিকদের জন্য ন্যায় দাবি করছি। রাহুল বলেন, এ লড়াই প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াই নয়। একদিকে নরেন্দ্র মোদি এবং আরএসএস। অন্যদিকে, ইন্ডিয়া। যার অর্থ একটা আদর্শ। মনে রাখতে হবে ইন্ডিয়া জোটের হাতে রয়েছে দেশের ৬০ শতাংশ ভোট।
রাহুল গান্ধীকেই বেশি ভয় পাচ্ছে বিজেপি। সাংসদ পদ খারিজ থেকে অসমে ভারত জোড়ো ন্যায়যাত্রার পদে পদে বাধা, সেই যুক্তিকেই অকাট্য করে তুলছে। মঙ্গলবার প্রায় ৫ হাজার কর্মী-সমর্থককে নিয়ে কংগ্রেসের চোখের মণি গুয়াহাটি শহরে ঢোকার চেষ্টা করলে তাঁদের বাধা দেয় বিজেপি সরকারের পুলিশ। কংগ্রেসের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার পুলিশের ধস্তাধস্তি বেধে যায়। শেষে পুলিশ ব্যারিকেড ভাঙা কংগ্রেস সমর্থকদের উপর ব্যাপক লাঠি চালায়।
রাহুল গান্ধী এ সম্পর্কে বলেন, আমাদের কর্মীরা শুধু ব্যারিকেড ভেঙেছেন। আইন তো ভাঙেননি! ওরা যখন যাত্রাভঙ্গের চেষ্টা করছে, তখন বুঝতে হবে আমাদের পথ সঠিক। ওরা পরোক্ষে এই যাত্রাকে সাহায্য করছে। গুয়াহাটির ঠিক বাইরে রাহুল বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা ভাঙব না, এর মানে এই নয় যে, আমরা দুর্বল।
তিনি আরও বলেন, অসমের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী আইন ভাঙতে পারেন। কিন্তু কংগ্রেস কখনও এরকম কাজ করে না। একটি বাসের মাথায় দাঁড়িয়ে রাহুল বলেন, কংগ্রেস কর্মীরা হলেন বব্বর শের। একইসঙ্গে এদিন রাহুল অসমের মুখ্যমন্ত্রীর হুমকিকে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেন। বলেন, উনি কী হুমকি দিলেন তাতে আমি ভয় পাই না।
প্রসঙ্গত, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এদিন ওয়েনাড়ের সাংসদকে হুমকি দিয়ে বলেন, লোকসভা ভোটের পর গ্রেফতার করা হতে পারে রাহুলকে। গুয়াহাটিতে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা এবং আইন ভঙ্গের অভিযোগে রাহুল গান্ধীকে গ্রেফতারির কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে গুয়াহাটিতে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু উনি ৩ হাজার সমর্থক ও ২০০ গাড়ি নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন। একটা শহরের বুকে এ ধরনের ঘটনা কীভাবে মেনে নেওয়া যায়, প্রশ্ন তোলেন বিশ্বশর্মা।
হিমন্ত আরও বলেন, ওরা এসে পুলিশকে আক্রমণ করে। রাহুল গান্ধী বাসের মাথায় দাঁড়িয়ে এসবের ইন্ধন দিচ্ছিলেন। আমরা তাঁকে ভোটের পরে গ্রেফতার করতে পারি। উল্লেখ্য, এর আগে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের ডিজিপিকে রাহুলের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাহুলের বিরুদ্ধে নকশালি কায়দায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টার অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্য খবর দেখুন