গোয়া: উচ্চশিক্ষিত, মেধাবী, কর্মক্ষেত্রে সফল, সর্বোপরি নিজ উদ্যোগে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানির মালকিন হয়েও কেন চার বছরের পুত্রসন্তানকে খুন করলেন কলকাতার মেয়ে সূচনা শেঠ। সাফল্য, আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য সূচনা ও তাঁর স্বামী বেঙ্কটরমনের পা ছুঁলেও কী কারণে মা হয়ে এমনটা ঘটালেন তিনি?
বর্তমানে ৩৯ বছরের সূচনার সঙ্গে ২০১০ সালে প্রেম করেই বিয়ে হয়েছিল কেরলের বাসিন্দা বেঙ্কটরমনের। দুজনেরই কর্মক্ষেত্র বেঙ্গালুরুতেই তাঁদের পরিচয়। তারপর সুখে-শান্তিতেই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলি। ২০১৯ সালে তাঁদের ছেলে হয়। কিন্তু, গোল পাকে করোনার সময় থেকে। কোনও কারণে দুজনের সম্পর্কের তিক্ততা শুরু হয়। যা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। ২০২৩ সালে আদালত দুজনকে আলাদা থাকার নির্দেশ দিলেও শিশুপুত্রকে সূচনার জিম্মায় দেয়।
আরও পড়ুন: শিশুপুত্রকে খুন করা সূচনা কলকাতারই মেয়ে
কিন্তু, বেঙ্কটরমনের আবেদনে আদালত প্রতি রবিবার তাঁকে ছেলের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়। যা মনঃপূত হয়নি সূচনার। তিনি কিছুতেই চাইছিলেন স্বামীর সংসর্গে আসুক তাঁর ছেলে। স্বামীর প্রতি সূচনার ঘৃণা এতটাই চরমে পৌঁছেছিল যে, ছেলের প্রতি বাবার ভালোবাসায় দেওয়াল খাড়া করতে চাইছিলেন। চাইছিলেন ছেলের সঙ্গে বিচ্ছেদের শোকে বেঙ্কটরমন যেন কুড়েকুড়ে মরে।
আদালতে মামলা চলার সময়ও ছেলে সূচনার কাছেই থাকত। তখন বাবা মাঝেমধ্যে সূচনার ফ্ল্যাটে ছেলেকে দেখতে আসতেন। কিন্তু, কোনওমতে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে দিতেন না সূচনা। তা নিয়ে ছেলের দখল নিতে বেঙ্কটরমন ফের আদালতে যান। তখনই তাঁকে মাসে চারবার দেখা করার অনুমতি দেয় আদালত।
আদালতের নির্দেশের পরেই বেঙ্কটরমনকে অফিসের কাজে ইন্দোনেশিয়া চলে যেতে হয়। অন্যদিকে সূচনা সুযোগ খুঁজছিলেন কী করে তাঁর স্বামীর কাছ থেকে ছেলেকে কেড়ে নেওয়া যায়। কী করে তাঁর আনন্দ, সুখ-শান্তি নষ্ট করা যায়। স্বামী বিদেশ যাওয়ার কথা জানতে পেরে তিনি যাতে রবিবার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে না পারেন, তার জন্য শনিবার, ৬ জানুয়ারি ছেলে নিয়ে গোয়া চলে আসেন সূচনা। রবিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় স্বামী বেঙ্কটরমন ভিডিও কল করে কথা বলেন সূচনার সঙ্গে। কথা হয় ছেলের সঙ্গেও।
আর সেটাই কাল হয়! বাবা-ছেলের আনন্দ দেখে আর সহ্য করতে পারেননি তিনি। ফোন শেষ হওয়ার পরেই চিরতরে বাবা-ছেলের সম্পর্ক শেষ করে দিতে রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে বালিশ চাপা দিয়ে অথবা দড়ি জাতীয় কিছু দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন ছেলেকে।
অন্য খবর দেখুন