চতুর্থদিনে মধ্যপ্রদেশের ৮টি উইকেট ১১৮ রানে তুলে নেওয়া যদি বাংলার দুই স্পিনারের কৃতিত্ব হয়, তাহলে সরাসরি ম্যাচে জিতে নেওয়ার জন্য ৩৫০ রান তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেটে ৯৬ রান হয়ে যাওয়াটা সেই বাংলার ব্যাটিংয়ের ব্যর্থতা। হতে পারে, উইকেটে বল পড়ে ঘুরছে। নেমে যাচ্ছে। কিন্তু যে দলের ব্যাটাররা ঠিক আগের ম্যাচে বিশ্বরেকর্ড (পরপর ৯ জন ব্যাটারের ৫০ রানের বেশি করা) করে, সেই দলে প্রথম ইনিংসে মাত্র ২ জন ৫০ রানের গন্ডি টপকাতে পারলে-সেটা ব্যর্থতাই। সেই ব্যর্থতা ঢাকা যেত যদি দ্বিতীয় ইনিংসে শুক্রবারই দুটি ৫০ রানের ইনিংস খেলে দিতে পারতো দুই ব্যাটার। আর শেষদিন, পঞ্চমদিন আরও দুটি পার্টনারশিপ হলে দুটো ৫০ রান তো আশা করাই যায়। কিন্তু দলের নেতা ঈশ্বরণ নিজের ৫০ রানের গন্ডি টপকে ব্যাট করছেন। সঙ্গী অনুষ্টুপ। ম্যাচ সরাসরি জিততে চাই শনিবার–শেষদিনে দরকার আরও ২৫৪ রান। আছে হাতে ৯০ ওভা আর ৬টি উইকেট। ওভার পিছু ৩ রান হলেই হয়ে যায়। এদিন ৩৭ ও্ভারে এসেছে ৯৬ রান। আড়াই রানেরও কম। চলে গেছে ৪ উইকেট। কঠিন কাজ। বেজায় কঠিন। কিন্তু অসম্ভব নয়-এটা বাংলার ব্যাটাররা মনে রাখলেই কিছু ঘটতেই পারে।
দিনের শুরুতেই বাংলার বোলাররা পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতে দেননি। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মধ্যপ্রদেশকে নাগালের মধ্যে বেঁধে রাখেন দুই স্পিনার- শাহবাজ আহমেদ ও প্রদীপ্ত প্রামানিক। প্রথম ইনিংসের দৌড়ে ৬৮ রানে এগিয়ে থাকা মধ্যপ্রদেশ তৃতীয় দিনের শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট খুইয়ে ১৬৩ রান তুলেছিল। এগিয়ে ছিল ২৩১ রানে। সেখান থেকে শুরু করে চতুর্থ দিনে মধ্যপ্রদেশ অল-আউট হয়ে যায় ২৮১ রানে। সরাসরি জয়ের জন্য বাংলার সামনে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৩৫০ রানের।দ্বিতীয় ইনিংসে মধ্যপ্রদেশের হয়ে রজত পতিদার ৭৯ ও আদিত্য শ্রীবাস্তব ৮২ রান করেন। বাংলার হয়ে শাহবাজ ৫টি ও প্রদীপ্ত ৪টি উইকেট দখল করেন।বাংলার হয়ে একই ম্যাচে (রঞ্জিতে)সেঞ্চুরি আর ৫ উইকেট শেষবার নিয়ে ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০০৫-২০০৬ মরসুমে দেড়শো রানের সঙ্গে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মহারাস্ট্রের বিপক্ষে। ১৬ বছর পর শাহবাজ বসলেন সৌরভের পাশে।
First century in first-class cricket, coming in to bat with his team on 54/5. 👏
Take a bow, Shahbaz! 🙌#PlayBold #WeAreChallengers #RCB #RCB #RanjiTrophy #Captain #Champions #Century #Cricket #CricketTwitter #Shahbaz #RanjiTrophy2022 pic.twitter.com/4cDxFSUbdw
— Cricscore11 (@CricScore15) June 17, 2022
বাংলার হয়ে প্রথম ইনিংসে তৃতীয় বলে, আর দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রথম বলে আউট হয়ে ফিরেছেন অভিষেক রামন। সুদীপ ঘরামি ১৯ রানে আউট হন।তাঁর আউট নিয়ে বিতর্ক রয়ে গেছে। এই পর্যায়ে কেন বোর্ড ডিআরএস সিস্টেম রাখে না!বিসিসিআই যখন ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিকাঠামোর উন্নতির প্রতিশ্রুতি দেয় বারবার, তখন রঞ্জি ট্রফিতে বা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলিতে কেন থাকবে না এই ডিআরএস? এই প্রযুক্তির ব্যবহার যে ঘরামিকে বাঁচিয়ে দিত (হয়তো বাংলাকেও), তা প্রমান মিলেছে রিপ্লেতেই। বল প্যাডে লাগার আগে সুদীপের ব্যাটে লাগে। কিন্তু ডিআরএস না থাকায় সুদীপকে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়।এমনকি বল হয়তো উইকেটেও লাগতো না।
#RanjiTrophy | Madhya Pradesh is six wickets away from its first Ranji final since 1998-99; Bengal needs 254 more runs on day five.
Day 4 #MPvsBEN report 👉 https://t.co/jj8fW7ZKOL
✍️ @ayan_acharya13 https://t.co/Qk7JvKeam8
— Sportstar (@sportstarweb) June 17, 2022
ব্যাটিং অর্ডারে এগিয়ে আসা অভিষেক পোড়েল ও ফর্মে থাকা মনোজ তিওয়ারি – দুজনই ৭ রান করে যোগ করে আউট হন চালিয়ে খেলতে গিয়ে। ঈশ্বরন ৬টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১০৪ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত রয়েছেন। অনুষ্টুপ ব্যাট করছেন ৮ রানে। কুমার কার্তিকেয়া ৩টি ও সরাংশ জৈন ১টি উইকেট নিয়েছেন। শেষ দিনে জয়ের জন্য বাংলার দরকার আরও ২৫৪ রান। হাতে রয়েছে ৬টি উইকেট।
ছবি: সৌ টুইটার।