বসিরহাট: বসিরহাটের পুলিশ গুলি কাণ্ডে ৪১ জনকে গ্রেফতার করল বসিরহাট থানার পুলিশ (Basirha Police Station)। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশকে খুন করার চেষ্টার অভিযোগ ও অস্ত্র উদ্ধার মামলায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তিনটি ধারালো অস্ত্র, দুটি বন্দুক ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার (Arms Recovered) করা হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতদের বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হবে। সোমবার বসিরহাটের সাকচুড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে (tmc infighting) গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। সেই গুলিতে জখম হন পুলিশকর্মী (policeman injured) প্রভাত সর্দার।
উত্তর ২৪ পরগণা জেলার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান বুলবুলের দাবি, ঝামেলা শুরু হতেই তা মেটাতে যায় বাজারে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা ও তিনি। তখনই এক দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সেই ধেঁয়ে আসা গুলি দেখতে পেয়ে কনস্টেবল প্রভাত সর্দার আশরাফুজ্জামানকে নিচে বসিয়ে দেয়। তখনই সেই গুলি এসে লাগে ওই পুলিশকর্মীর বাঁ কাঁধে। তারপর তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে যাওয়া হয়। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে গোলমাল থামাতে পুলিশও শূন্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। সোমবার রাত দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে টাকি রোডের উপর। পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-সহ উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।
এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য সড়কে বিক্ষোভে সামিল হয় তৃণমূল। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি ও এই নক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় নিয়দাঁড়িয়ি-কোদালিয়ার তৃণমূল সমর্থকেরা। নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাহারাপ মণ্ডল, উত্তর ২৪ পরগণা জেলা ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান বুলবুল ও নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি হামিদ গাজী সহ একাধিক তৃণমূল নেতৃত্বে টাকি রোডে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল কর্মীরা।
আরও পড়ুন:NIA: অবশেষে এনআইএ-র জালে খলিস্তনি জঙ্গি
স্থানীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের একটি পার্টি অফিসের সামনে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমে বচসা হয়। তারপর দুই গোষ্ঠীর লোকজন গালিগালাজ শুরু করে। তার থেকেই হাতাহাতি লেগে যায়। বাঁশ, রড নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তাদের লক্ষ্য করে শাষকদলের এক গোষ্ঠীর লোকজন গুলি চালায়। তাতেই অনন্তপুর পুলিশ ফাঁড়ির ওই কনস্টেবলের পিঠে গুলি লাগে।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল ক্রমশ বেড়েই চলেছে। একদিকে গোষ্টী সংঘর্ষ, আর অন্যদিকে বোমাবজি ও গুলতে যথেষ্ট ব্যাকফুটে শাসকদল তৃণমূল। শাসকদলের এই গোষ্ঠী সংঘর্ষকে নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিরোধী নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, জেলায় জেলায় শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল চরমে পৌঁছেছে। ঘটনা নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতাদের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।