কলকাতা: এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় শুক্রবার হাইকোর্টে জমে উঠল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরজা। কখনও ঠাট্টার ছলে, কখনও কটাক্ষের ভঙ্গিতে একে অপরের উদ্দেশে নানা মন্তব্য করেন। তা নিয়ে এজলাসে মাঝেমধ্যেই হাসির রোলও ওঠে।
কল্যাণ এদিন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে সওয়াল করেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, কল্যাণবাবু আপনি কার হয়ে লড়ছেন। কল্যাণ বলেন, আমি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী হিসেবে এসেছি। লক্ষ্মী টুঙ্গা মামলায় আমার মক্কেলকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হয়েছে আদালতের নির্দেশে। বিচারপতি বলেন, আপনি নাকি আমার সম্পর্কে কী সব বলেছেন। পালটা কল্যাণ বলেন, হ্যাঁ বলেছি। আপনি আমাকে জেলে ঢুকিয়ে দিন। বিচারপতির মন্তব্য, কী বলছেন? আমি আপনাকে শ্রদ্ধা করি। সুখেন্দুশেখর রায়কেও সম্মান করি। আপনি তো শুনেছি, কালীর ভক্ত। কল্যাণের কটাক্ষ, আমি আপনারও ভক্ত। শুধু কালী নয়, আমি তো রামেরও ভক্ত। তবে আমি যাদের জন্য করি, তাদের কাছে আমি খারাপ। যাদের জন্য করি না, তারাই এখন আমায় ভালোবাসে। আমি আইন ব্যবসা ও রাজনীতি, দুটোই ছাড়তে চাই। কিন্তু পারছি না। বিচারপতি বলেন, আপনার মতো সোজাসাপটা লোকের এখন খুব প্রয়োজন।
এরপরই বিচারপতি কল্যাণকে বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পত্তির পরিমাণ হলফনামা আকারে জমা দিন। যদিও বিচারপতি মৌখিকভাবে একথা বললেও প্রকৃত নির্দেশিকায় এর কোনও উল্লেখ নেই। ঠিক যেমন ভাবে এই প্রসঙ্গেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির অ্যালসেশিয়ান কুকুরের কথাও মৌখিকভাবে উঠে আসে বিচারপতির কথায়। বিচারপতি বলেন, নাকতলায় কুকুরদের জন্য যে ফ্ল্যাট আছে, তাও যুক্ত করবেন। যদি কখনও সুযোগ পাই, তবে গান্ধী পরিবারের সম্পত্তির হলফনামাও তলব করব। এসবই বিচারপতি বলেছ্ন মৌখিকভাবে।
আরও পড়ুন : Ankita Adhikary: কম-বেশি কুড়ি লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে ‘বরখাস্ত’ শিক্ষিকা অঙ্কিতাকে!
কল্যাণ- ওনার(পার্থ) সম্পত্তি সম্পর্কে আমার জানা নেই।
বিচারপতি- ওনার আয় কোথা থেকে আসে। কীভাবে রাজনীতিবিদদের সম্পত্তি হয়। উনি তো শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো। যা চলছে, আমি তা পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। বহু রাজনীতিবিদ দুর্নীতিতে জড়িত। কেউ কেউ আবার সৎও বটে।
কল্যাণ- যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, মানুষ তাদের চেনে।
এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় লক্ষ্মী টুঙ্গার করা দুর্নীতি মামলায় পার্থকে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন। এর আগে কল্যাণ বিচারপতির পার্থকে গ্রেফতার করা সম্পর্কে মন্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন। সে প্রসঙ্গে আদালতের নির্দেশ, গ্রেফতারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তিনি জানান, এদিনই আদালত বাগ কমিটির রিপোর্ট সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেবে।