কলকাতা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে ফের তাদের পঠনপাঠন ও আর্খিক লেনদেন নিয়ে সাপ্তাহিক রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কাছে এ ব্যাপারে চিঠিও দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আবারও অভিযোগ করেন, রাজ্যপাল তাঁর এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন ব্রাত্য। এর ফলে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত আবারও প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছে শিক্ষা এবং প্রশাসনিক মহল।
গত ৪ এপ্রিল রাজ্যপাল তথা আচার্য এক নির্দেশিকা জারি করে বলেন, এখন থেকে উপাচার্যদের পঠনপাঠন এবং আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত সাপ্তাহিক রিপোর্ট পাঠাতে হবে রাজভবনে। ওই নির্দেশিকা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত শুরু হয়। এর পাশাপাশি রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে নামেন। তাতে রাজ্য সরকারের ক্ষোভ আরও বাড়ে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, রাজ্যপাল মত্ত হস্তীর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এসব না করে তিনি বরং তাঁর কাছে আটকে রাখা বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিল ছাড়ার ব্যবস্থা করুন। নতুবা রাজ্যপাল সেগুলি ফিরিয়ে দিন। শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, রাজ্যপাল অবিলম্বে ওই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করুন। শুধু শিক্ষামন্ত্রীই নন, মুখ্যমন্ত্রীও রাজ্যপালের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করে বলেন, উপাচার্যরা সব কাজ ফেলে রেখে রাজভবনে রিপোর্ট দিতে যাবেন নাকি প্রতি সপ্তাহে? উপাচার্যদের আর কোনও কাজ নেই। এপ্রিল মাসে রাজ্যপাল ওই নির্দেশিকা জারি করলেও এখন পর্যন্ত কোনও উপাচার্যই সাপ্তাহিক রিপোর্ট পাঠাননি রাজভবনে। সূত্রের খবর, সেই নির্দেশিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েই রাজ্যপাল আবার চিঠি দিয়েছেন উপাচার্যদের।
আরও পড়ুন: Complaint | Dog | কুকুরের তাণ্ডব চলল জেলা শিক্ষা ভবন দফতরে
জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন উচ্চশিক্ষা নিয়েই তাঁর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে নবান্ন। ধনখড় উপাচার্যদের ডেকে পাঠাতেন। কিন্তু রাজ্য সরকার পরিষ্কার বলে দিয়েছিল, কোনও উপাচার্য রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে যাবেন না। রাজ্য সরকারের পরামর্শ মেনে কোনও উপাচার্যরা ধনখড়ের ডাকা বৈঠকে হাজির হতেন না। তখনও নবান্নের অভিযোগ ছিল, রাজ্যপাল এক্তিয়ারবহির্ভূত কাজ করছেন। তাঁর সঙ্গে নবান্নের সংঘাত এতটাই চরমে ওঠে যে রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিল আনা হয় বিধানসভায়। বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর ধনখড় সেই বিলে অনুমোদান দেননি। তা এখনও আটকে রয়েছে রাজভবনে। তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, রাজ্যপাল এভাবে বিল আটকে রাখতে পারেন না। এবার ফের রাজ্যপাল উপাচার্যদের চিঠি লিখে সাপ্তাহিক রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়টি মনে করিয়ে দিলেন। আবারও তাকে ঘিরে রাজভবনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ল নবান্ন।