কলকাতা: ভবানীপুরের লি রোডের স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় এক ট্যাক্সি চালককে আটক করেছে পুলিস৷ তাঁকে জেরা করে একাধিক তথ্যও পাওয়া গিয়েছে৷ তাঁর ট্যাক্সি চেপেই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের দক্ষিণগেটের সামনে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা নিতে এসেছিল আততায়ী৷ তারপর সেখান থেকে সোজা হাওড়া স্টেশনের কাছে নেমে যান বলে ধৃত ট্যাক্সি চালক পুলিসকে জানিয়েছে৷
তারপরও একাধিক প্রশ্নের উত্তরপেতে ট্যাক্সিচালককে লাগাতার জেরা করা হচ্ছে৷ তাঁর গাড়ি কতক্ষণের জন্য ভাড়া নিয়েছিল আততায়ী? খুনের পর হোটেল থেকে বেরিয়ে রাস্তা থেকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হয়ে হাওড়া যায়? নাকি অন্য কোথাও গিয়েছিল? সারাদিনের জন্য তাঁকে ভাড়া করা হয়নি তো? মুক্তিপণের টাকা নেওয়ার সময় গাড়িতে আর কে কে ছিল-ইত্যাদি একাধিক প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা রয়েছে৷
সোমবার রাতেই বাড়ির থেকে কিছুটা দূরে হোটেল থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী এসএল বৈদ্যর নগ্ন দেহ উদ্ধার করে পুলিস৷ পুলিসের অনুমান তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে৷ গলায় টেলিফোনের তার জড়ানো ছিল৷ আততায়ী পূর্ব পরিচিত বলেও মনে করা হচ্ছে৷ তাই মোবইলের কল লিস্টের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
পরিবারের দাবি, সোমবার সন্ধের পরে আততায়ী ফোন করে বাড়িতে৷ প্রায় ২১ মিনিট কথা হয় ফোনে৷ ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়৷ কিন্তু এত টাকা কোথা থেকে জোগাড় হবে, পাল্টা প্রশ্ন করতেই ব্যবসায়ীর আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, দাবি পরিবারের৷ এ দিকে পুলিস কুকুরকে তদন্তে নামানো হলেও কোনও আততায়ীর সন্ধান মেলেনি৷ পাওয়া যায়নি খুনের কিনারা করা যায় এমন কোনও তথ্য৷ বরং, গেস্ট হাউস থেকে বেরিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার ঘুরে পুলিস কুকুর পুনরায় গেস্ট হাউসেই ওঠে৷ যা নিয়ে চরম বিপাকে তদন্তকারীরা৷ বাড়ছে ধন্দ৷
তদন্তের স্বার্থে ফরেনসিক দল একাধিক তথ্য সংগ্রহ করছে৷ মৃত ব্যবসায়ী এসএল বৈদ্য যে গেস্ট হাউসে উঠেছিলেন সেই এলাকার একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ এ দিকে ইতিমধ্যে মৃত ব্যবসায়ীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে৷
আরও পড়ন- SSC Group D Case: গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের উপর ২ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
মৃত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দোকান দক্ষিণ কলকাতার একটি মলে৷ সোমবার ওই মার্কেট বন্ধ থাকে৷ ফলে গতকাল তিনি বাড়িতেই ছিলেন৷ পরিবারের সদস্যরা পুলিসকে জানিয়েছেন, সোমবার বেলার দিকে ব্যবসায়ীর কাছে পরপর বেশ কয়েকটি ফোন আসে৷ এরপর বিকেল ৩টের পরে পান কিনতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এসএল বৈদ্য৷ তারপর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ কিন্তু, সন্ধে নাগাদ পরিবারের কাছে ২৫ লাখ টাকার মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে৷