ইস্ট বেঙ্গল–৩ জামশেদপুর এফ সি–১
(ভি পি সুহের, ক্লেটন সিলভা–২) (এমানুয়েল টমাস)
অনায়াসেই জামশেদপুরে গিয়ে তাদেরকে হারিয়ে দিয়ে এল ইস্ট বেঙ্গল। গত বারের আই এস এল লিগ-শিল্ড চ্যাম্পিয়ন জামশেদপুরের অবস্থা এবার খুবই খারাপ। প্রথম থেকেই তারা ল্যাংচাচ্ছে। এই সুযোগটা পুরোপুরি নিল ইস্ট বেঙ্গল। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় তারা জামশেদজি টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে নাস্তানাবুদ করে হারাল ঘরের টিমকে। দুই মিনিটের মধ্যে প্রথম গোল করে সেই যে ইস্ট বেঙ্গল ম্যাচের রাশ নিজেদের পায়ে নিল সেই রাশ তারা শেষ মিনিট পর্যন্ত বজায় রেখে গেল। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ক্লেটন সিলভা জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়ক অবশ্যই। কিন্তু আসল নায়ক কিন্তু নাওরেম মহেশ সিং। এই পাহাড়ি যুবক এই বছর প্রথম থেকেই খেলছেন লেফট হাফে। এদিন তাঁরই পাস থেকে তিনটি গোল হয়েছে। একটা ম্যাচে তিনটি গোল করানো খুব বড় ব্যাপার। মহেশ সেই কাজটা করে দিনের আসল হিরো। এই জয়ের ফলে আট ম্যাচে নয় পয়েন্ট নিয়ে ইস্ট বেঙ্গল উঠে এল আট নম্বরে। আর সাত ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে জামশেদপুর পড়ে রইল দশে। প্রসঙ্গত ইস্ট বেঙ্গলের তিনটি জয়ই কিন্তু বাইরের মাঠে। নর্থ ইস্ট, বেঙ্গালুরুর পর এবার জামশেদপুর।
গত ম্যাচে সল্ট লেক স্টেডিয়ামে বিরতির সময় দু গোলে এগিয়ে থেকেও ইস্ট বেঙ্গলকে হারতে হয়েছিল ২-৪ গোলে। এদিন কিন্তু বিরতির সময় ২-১ গোলে এগিয়ে থাকা ইস্ট বেঙ্গল সেই ভুল আর করেনি। তাদের নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার চার্লস কিরিয়াকু আগের দিন চোখের উপর আঘাত পেয়ে বিরতির পর বসে যান। তাঁর কপালে বেশ কয়েকটা সেলাই হয়েছে। কিরিয়াকু এদিন আর মাঠে নামার মতো অবস্থায় ছিলেন না। তাঁর বদলে ছিলেন আর এক ব্রাজিলিয়ান অ্যালেক্স লিমা, যিনি গত বছর ছিলেন জামশেদপুরে। চোট সারিয়ে লিমা এদিন পুরোটাই খেললেন। এবং বলা যায় বেশ ভালই খেললেন। তাঁর পাশে জর্ডন ডোহার্টি অন্য দিনের মতো এদিনও বেশ নির্ভরযো্গ্য ছিলেন। চোট সারিয়ে রাইট ব্যাক সার্থক গোলুই এবং লেফট ব্যাক জেরি ফিরে আসায় ইস্ট বেঙ্গল ডিফেন্স বেশ জমাট ছিল। দুই সেন্টার ব্যাক ইভান গঞ্জালেস এবং লালের কম্বিনেশন বেশ জমে গেছে। দুজনেই ক্রমশ নির্ভরতা দিচ্ছেম দলকে। সামনের দিকে ক্লেটন সিলভার পাশে সিম্বোই হাওকিপও গোল করতে না পারলেও সারাক্ষণ সচল ছিলেন।
দু মিনিটের মধ্যে এগিয়ে যায় ইস্ট বেঙ্গল। বাঁ দিক থেকে দ্রুত গতিতে উঠে মহেশ সিং যে সেন্টারটি করলেন তা থেকে হেড করে গোল করতে অসুবিধে হয়নি ভি পি সুহেরের। ২৬ মিনিটে ব্যবধানটা বাড়িয়ে ফেলে ইস্ট বেঙ্গল। এবারও মহেশের সেন্টার এবং ক্লেটন সিলভার গোল। কিন্তু বিরতির আগে গোল খেতে হয় ইস্ট বেঙ্গলকে। বক্সের মধ্যে সুহের ফাউল করেন। পেনাল্টি থেকে গোল করেন এমানুয়েল টমাস। কিন্তু ৫৮ মিনিটে আবার গোল করে ফেলে ইস্ট বেঙ্গল। এবারও গোলের পিছনে মহেশের সেন্টার। গোল করেন ক্লেটন সিলভা। এই নিয়ে তিনটে ম্যাচ জিতল স্টিভন কনস্ট্যানটাইনের দল। মনে হচ্ছে ইস্ট বেঙ্গল ক্রমশ থিতু হচ্ছে। তবে দরকার একটু ধারাবাহিকতার। এই রোদ, এই বৃষ্টি আর ভাল লাগছে না।