জলপাইগুড়ি: আলুর বন্ড (Potato Bond) বণ্টনকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাধল বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গা কোল্ড স্টোরেজে (Cold Storage)। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ প্রথমে লাঠি চালায়। তাতেও গ্রামবাসীকে দমাতে না পেরে অবশেষে কাঁদানে গ্যাস (Tear Gas) ছোড়ে পুলিশ। কৃষকদের অভিযোগ, তাঁরা ভোররাত থেকে হিমঘরের সামনে আলুর বন্ড নেওয়ার জন্য লম্বা লাইন দেন। বেলা বাড়তেই হিমঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, আজ আর বন্ড দেওয়া হবে না। এরপরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কৃষকরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে গেলে পুলিশের উপর ঢিল-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে৷ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ক্ষিপ্ত কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় কয়েকজন জখম হয়েছেন।
এদিনই সকাল থেকে জলপাইগুড়ির প্রায় সব হিমঘরে বিরাট লাইন পড়ে যায় আলুচাষিদের। হিমঘরে আলু রাখার বন্ডের কুপন দেওয়াকে কেন্দ্র করে চরম বিশৃঙ্খলা বাধে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) একাধিক হিমঘরে (Cold Storage)। কোথাও গেট ভেঙে আহত হন কৃষক। আবার কোথাও ধস্তাধস্তিতে জখম হলেন অনেকে। কারও হাত ভেঙেছে, কারও পায়ে চোট লেগেছে বলে দাবি। এখনও পর্যন্ত ভিড়ের চাপে আহত হয়ে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আটজন কৃষক। সংখ্যাটি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Thunder Storm | আসানসোল, বাঁকুড়ায় কালবৈশাখী, আচমকা ঝড়বৃষ্টিতে কাটল গুমোট
শুক্রবার থেকে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের ছয়টি হিমঘরে আলু রাখার বন্ডের কুপন দেওয়া শুরু হয়। কুপন সংগ্রহ করতে গতকাল রাত থেকে হিমঘরের সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েকশো কৃষক। সকালে হিমঘর খুলতেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পড়ে গিয়ে ভিড়ের চাপে আহত হন ২ মহিলা সহ ৮ কৃষক। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালায়। ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে কৃষকদের মধ্যে।
এরপর বেলা যত বাড়তে থাকে কৃষকদের মধ্যে ততই বন্ড পাওয়ার জন্য ব্যস্ততা ও উদ্বেগ বাড়তে থাকে। কৃষকদের অভিযোগ, প্রথম দিকে সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু হঠাৎই বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গা কোল্ড স্টোরেজের কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় আজ আর বন্ড দেওয়া হবে না। সারারাত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা চাষিদের তখন ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। তাঁরা হিমঘরের ভিতরে ভাঙচুর, ইটপাটকেল মারতে থাকেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। তারাও উত্তেজিত জনতার ক্ষোভ প্রশমিত করতে ব্যর্থ হয়। উপরন্তু পুলিশকে দেখে জনতা আরও খেপে গিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করে। তখন পুলিশ প্রথমে লাঠি চালায় ও পরে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।