জেড্ডা: গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত সুদান (Sudan) থেকে উদ্ধার করা ভারতীয়দের (Indians) মধ্যে ৩৬০ জনকে নিয়ে দেশ ফিরছে বিমানবাহিনীর (IAF) বিমান। বুধবার বিকেলে সৌদি আরবের জেড্ডা থেকে বিশেষ বিমান রওনা দিয়েছে নয়াদিল্লির উদ্দেশে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই ঘরের মানুষের সঙ্গে মিলিত হবেন প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা ভারতীয়রা।
সুদান সেনা ও সেখানকার আধা সেনার মধ্যে যে লড়াই চলছে, তা ৭২ ঘণ্টার জন্য বিরতির (Ceasefire) সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুপক্ষ। সেদেশে বসবাসকারী বিদেশিদের নিরাপদে দেশে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দিতেই এই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত। গতকাল এই ঘোষণার পরই পোর্ট সুদান থেকে যুদ্ধজাহাজে করে ৫৩০ জনকে সৌদির জেড্ডার নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে আজ ‘অপারেশন কাবেরী’ (Operation Kaveri) নামে এই উদ্ধার-প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে দেশে ফিরতে চলেছেন ঘরের মানুষরা।
যাঁরা এর আগে ফিরেছেন তাঁরা তাঁদের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন। একজন বলেন, ভারত সরকার তাঁদের জন্য জাহাজের ব্যবস্থা করেছে। তাঁদের খাবার জুগিয়েছে বিমানবাহিনী। অনেকেই ২-৩ ধরে অভুক্ত অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের কথায়, সুদানে যা চলছে তা ভয়ঙ্কর। একজন জানান, তাঁদের বাড়ির বাইরে বোমা বর্ষণ, গুলিবৃষ্টি চলছিল। খাবার জোগাড় করতে বাইরে বেরনো যাচ্ছিল না। আলো নেই, জল নেই, সে এক মারাত্মক দুর্বিষহ দশা। অন্যজন বলেন, তাঁরা তো ২-৩ দিন না খেয়েই ছিলেন।
আর এক ভারতীয়র অভিজ্ঞতা আরও ভয়ঙ্কর। তিনি বলেন, ওদের আধা সামরিক বাহিনীর লোকরা তাঁদের অফিসের কাছেই ছিল। একদিন সকাল ৯টা নাগাদ তারা অফিসে ঢুকে পড়ে। ঢুকেই গুলি চালাতে থাকে। যার কাছে যা ছিল, তা লুট করে নিয়ে যায়। প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে গোটা অফিসের কর্মীদের পণবন্দি করে রাখে। মাথায়-বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে রেখে দিয়েছিল। কোম্পানির যাবতীয় কিছু ওরা ধ্বংস করে দিয়েছে। সব ল্যাপটপ এবং মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে। আমরা তারপর দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওখান থেকে পালিয়ে একটা গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নিই। সেখানে কিছুটা ডিজেল জোগাড় করে দূতাবাসকে ফোন করা হয় পালানোর জন্য বাস জোগাড় করে দিতে।
ভারতের বিদেশ রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি মুরলিধরন (Minister of State for External Affairs V Muraleedharan) মঙ্গলবারই জেড্ডায় চলে যান উদ্ধারকাজ তদারকিতে। এদিন তিনি বলেন, নয়াদিল্লির উদ্দেশে ভারতীয়দের রওনা হতে দেখে আমি খুব খুশি। ওঁরা খুব শীঘ্রই মাতৃভূমিতে পৌঁছে যাবেন।