নয়াদিল্লি: গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হলেন অনুব্রত মণ্ডলের (Anuvrata Mondal) মেয়ে সুকন্যা (Sukanya Mandal )। বুধবার দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে তাঁকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ আনে ইডি তাঁর বিরুদ্ধে। এদিন জিজ্ঞাসাবাদে অনেক প্রশ্নই এড়িয়ে যান সুকন্যা। বাবার গ্রেফতারির আট মাস পর এদিন গ্রেফতার করা হল কেষ্ট কন্যাকে। গত বছরের ১১ অগাস্ট বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে সিবিআই গ্রেফতার করে বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রতকে। তিনি এখন তিহার জেলে বন্দি। আগামিকাল বৃহস্পতিবার সুকন্যাকে আদালতে হাজির করা হবে।
এর আগে গত দু-তিন মাসের মধ্যে সুকন্যাকে ইডি তলব করে একাধিকবার। কিন্তু প্রতিবারই নানা অজুহাতে তিনি হাজিরা এড়িয়ে যান। তবে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরে সুকন্যা পর পর দুদিন দিল্লিতে ইডি দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন। তাঁর বিপুল সম্পত্তি এবং একাধিক অ্যাকাউন্টে প্রচুর পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের উৎস কী, তা জানতে চেয়েছিল ইডি। প্রতিবারই সুকন্যা জানান এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। সবটাই জানেন বাবা এবং তাঁর হিসাবরক্ষক মনীশ কোঠারি। অনুব্রতর আগেই অবশ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গ্রেফতার করে মনীশকে। তিনিও এখন তিহার জেলে দিন কাটাচ্ছেন। অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনও তিহার জেলে রয়েছেন।
আরও পড়ুন:Malay Ghatak | বাড়ল রক্ষাকবচের মেয়াদ, স্বস্তিতে মলয় ঘটক
গরু পাচার মামলার তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারী সংস্থা বীরভূম জেলা সহ একাধিক জেলায় সুকন্যার নামে প্রচুর সম্পত্তির হদিশ পায়। বীরভূমের একাধিক চালকলের মালিক হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে। এছাড়া বেশকিছু সংস্থার ডিরেক্টর হিসেবে নাম রয়েছে সুকন্যা এবং মণ্ডল পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎবরণ গায়েনের। ইডির প্রশ্ন, সামান্য একজন প্রাথমিক শিক্ষিকা সুকন্যা এত বিপুল সম্পত্তি এবং টাকার মালিক হলেন কী করে? তিন চার বছরের মধ্যে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা কি না আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
বুধবার সকালে দিল্লিতে ইডি দফতরে সুকন্যাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বাবার গ্রেফতারির পর তিনি বেশ কিছুদিন মনমরা ছিলেন। সম্প্রতি নিচুপট্টির বাড়িতে দলের কেউ খোঁজ খবর না নেওয়ায় সুকন্যা মেজাজ হারিয়ে জিনিসপত্র ভাংচুর করেন। খবর পেয়ে জেলার নেতারা ছুটে আসেন। সুকন্যা তাঁদের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দেন। তার কয়েকদিন আগেই কালীঘাটে তৃণমূলের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমের নেতাদের কেষ্ট-কন্যার দেখভালের ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই বৈঠকে নেতাদের তিনি বলেন, কেষ্ট জেলে। মেয়েটা একা একা বাড়িতে থাকে। ওর খোঁজ খবর রেখো তোমরা।